আমি আর জিৎ ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম: স্বস্তিকা
Published: 27th, March 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। জীবনটা নিজের শর্তে উপভোগ করেন। ঠোঁটকাটা স্বভাব, সমাজের বাঁকা দৃষ্টিকে পাত্তা না দেওয়ায় বছর জুড়েই আলোচনায় থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অনেকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। তার প্রেমিকদের তালিকাও বেশ দীর্ঘ! ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বেশ খোলামেলা হলেও গত বছরের শেষে লগ্নে প্রথম প্রেমিকের পরিচয় জানান ‘মাস্তান’খ্যাত এই নায়িকা। আর সে অন্য কেউ নন, তার সিনেমারই নায়ক জিৎ। এ ঘটনার কয়েক মাস পর জিতের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করলেন স্বস্তিকা। জানালেন— অর্ধযুগ একসঙ্গে থেকেছেন তারা।
কয়েক দিন আগে ‘ইন দ্য রিং উইথ ফিল্মফেয়ার বাংলা’-কে সাক্ষাৎকার দেন স্বস্তিকা। সাংবাদিক জিতেশ পিল্লাইয়ের সঙ্গে আলাপকালে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আমার আর জিতের সম্পর্কে আমার মেয়ের এখনো মত আছে। আমরা ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম। ও তো আমার উপর এখনো রেগে গিয়ে বলে— ‘তোমার দোষ ছিল। যাই হোক না কেন, আমি কখনো তোমাকে ক্ষমা করব না।”
আরো পড়ুন:
বাবার ‘লক্ষ্মী ট্যারা’ চোখ নিয়ে স্মৃতিকাতর স্বস্তিকা
স্বস্তিকার প্রথম প্রেম জিৎ
একসঙ্গে অর্ধযুগ বসবাস করার কারণে স্বস্তিকার কন্যা অন্বেষার সঙ্গে জিতের দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফলে সম্পর্কটি ভেঙে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না অন্বেষা। এ তথ্য জানিয়ে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আসলে জিতের সঙ্গে ও খুব ঘনিষ্ঠ ছিল। আমরা ৬ বছর একসঙ্গে ছিলাম। আর ও বড় হওয়ার পর তো বলে, ‘এত সুন্দর একটা পুরুষ, এ তুমি কী করলে মা!”
জিতের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার প্রভাব শুধু তার মেয়ে অন্বেষা উপরেই নয়, মন খারাপ করেছিলেন স্বস্তিকার মা ও বোন অজপাও। এ সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় কেঁদেছিলেন স্বস্তিকার বোন। সেই ঘটনা বর্ণনা করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “মা আর বোন সবসময় জিতের পক্ষ নিত। ওরা চেয়েছিল আমি আর জিৎ যেন বিয়ে করি। সম্পর্ক ভাঙার পরও আমার বোন জিতের বিয়েতেও গিয়েছিল। বোনের কান্না দেখে আমি বলেছিলাম, এসব কী নাটক হচ্ছে!”
পঞ্চাশে পা রাখার আগে আরো কয়েকটি প্রেম করতে চান চুয়াল্লিশের স্বস্তিকা। তার ভাষায়, “আমি ৬টি সিরিয়াস প্রেমের সম্পর্কে ছিলাম। এটি আমাকে ৬০০ প্রেমের অনুভূতি দেয়। কোনো হ্যাঙ্কিপ্যাঙ্কি ছিল না কোনোদিনই। মিডিয়া তো কারো সঙ্গে কফি খেতে গেলেও আমার নাম জুড়ে দেয়। যদিও এসব আমার ওপরে প্রভাব ফেলে না। যাহোক, বয়স ৫০ হওয়ার আগে জলদি করে আরো কয়েকটা প্রেম করে নিতে চাই।”
১৯৯৮ সালে জনপ্রিয় রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনকে বিয়ে করেন স্বস্তিকা মুখার্জি। বাবা-মায়ের পছন্দে এ বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু দুই বছরের মধ্যে সংসার জীবনে ছন্দপতন ঘটে। ২০০০ সালে দুধের শিশু অন্বেষাকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন স্বস্তিকা। একই বছর বিয়েবিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। তারপর সিঙ্গেল মাদার হিসেবে কন্যা অন্বেষাকে বড় করেছেন এই নায়িকা। কিন্তু কাগজে-কলমে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি স্বস্তিকা-প্রমিতের।
প্রথম সংসার ভাঙার পর ২০০৩ সালে ‘হেমন্তের পাখি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন স্বস্তিকা মুখার্জি। ২০০৪ সালে ‘মাস্তান’ সিনেমায় প্রথম নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এ সিনেমার নায়ক ছিলেন জিৎ। এ সিনেমার শুটিং সেটেই জিতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সূচনা। এরপর টলিউডের পার্টি থেকে সিনেমার প্রিমিয়ার— সব জায়গায় একসঙ্গে দেখা যেত তাদের।
২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন জিৎ-স্বস্তিকা। এ তালিকায় রয়েছে— ‘মাস্তান’, ‘ক্রান্তি’, ‘সাথীহারা’, ‘প্রিয়তমা’, ‘পার্টনার’, ‘পিতৃভূমি’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’ প্রভৃতি। এরপর তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কী কারণে তাদের প্রেম ভেঙেছিল তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। তবে সঠিক কারণ জানাননি স্বস্তিকা।
কেউ বলেন, “স্বস্তিকার বিবাহিত তকমা এবং এক সন্তানের মা হওয়াই নাকি কাল হয় এই সম্পর্কে।” আবার কেউ বলেন, “জিৎ-স্বস্তিকার মাঝে ঢুকে পড়েছিলেন কোয়েল মল্লিক!” অনেকে বলেন, “ক্যারিয়ার ছেড়ে জিতের সঙ্গে ঘর বাঁধতে রাজি হননি স্বস্তিকা।”
স্বস্তিকা মুখার্জির সঙ্গে ব্রেকআপের কয়েক বছর পর অর্থাৎ ২০১১ সালে মোহনা মাদনানিকে বিয়ে করেন জিৎ। ২০১২ সালে তাদের ঘর আলো করে জন্ম নেয়ে কন্যা সন্তান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে পুত্র সন্তানের বাবা হন এই নায়ক। তবে স্বস্তিকা এখনো একা জীবনযাপন করছেন।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বস ত ক ম খ র জ একসঙ গ অন ব ষ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারের চিকিৎসায় অর্থের অপচয় চান না, তাই স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করলেন ব্যবসায়ী
ভারতের দিল্লির কাছে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে এক আবাসন ব্যবসায়ী স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করেন এবং পরে আত্মহত্যা করেন। গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে।
কুলদীপ ত্যাগী (৪৬) নামের ওই ব্যবসায়ী একটি সুইসাইড নোট রেখে গেছেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, তাঁর ক্যানসার ধরা পড়েছে। আর তিনি চান না, তাঁর চিকিৎসায় অর্থ অপচয় হোক। কারণ, সুস্থ হওয়াটা পুরোপুরি অনিশ্চিত।
ওই সুইসাইড নোটে আরও লেখা ছিল, তিনি স্ত্রী অনশু ত্যাগীকে হত্যা করেছেন। কারণ, তাঁরা একসঙ্গে থাকার শপথ করেছিলেন। এ দম্পতি দুই ছেলেসন্তান ও কুলদীপের বাবার (অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা) সঙ্গে বসবাস করতেন।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, কুলদীপ তাঁর স্ত্রীকে একটি লাইসেন্স করা রিভলভার দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন এবং তারপর তিনি নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে রাজনগর এক্সটেনশনের রাধাকুঞ্জ সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার সময় তাঁদের দুই ছেলে বাড়িতে ছিলেন। গুলির শব্দ শোনার পর তাঁরা দৌড়ে তাঁদের মা–বাবার কক্ষে যান। কুলদীপের মরদেহ মেঝেতে পাওয়া যায় এবং অনশুর মরদেহ বিছানায় ছিল। দুজনকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওই কক্ষে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। নোটে লেখা ছিল: ‘আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। আমার পরিবার তা জানে না। আমি চাই না চিকিৎসায় অর্থ অপচয় হোক। কারণ, বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনিশ্চিত। আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছি। কারণ, আমরা চিরকাল একসঙ্গে থাকার শপথ নিয়েছিলাম। এটি আমার সিদ্ধান্ত। কেউ, বিশেষ করে আমার সন্তানেরা দায়ী নয়।’
পুলিশ রিভলবারটি জব্দ করেছে এবং মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা পুনম মিশ্র বলেন, ‘কুলদীপ ত্যাগী তাঁর স্ত্রীর এবং তারপর নিজের ওপর লাইসেন্স করা রিভলভার দিয়ে গুলি চালিয়েছেন। একটি সুইসাইড নোটে কুলদীপ ত্যাগী বলেছেন, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত এবং তাঁর পরিবার তা জানে না। তিনি চান না তাঁর চিকিৎসায় অর্থ খরচ করা হোক। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি স্ত্রী ও নিজেকে হত্যা করবেন। আমরা এই বিষয়টি তদন্ত করছি।’