২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের জন্য ভারতের স্বঘোষিত গুরু আশারাম বাপুর আশ্রমের জায়গা অধিগ্রহণ করা হতে পারে। ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এই গুরুর আশ্রম ছাড়াও আরও দুটি আশ্রমের জায়গাও অধিগ্রহণের পরিল্পনায় রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পাটেলের নেতৃত্বাধীন সরকার অলিম্পিকের জন্য জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। আহমেদাবাদে অধিগ্রহণ করতে যাওয়া ৬৫০ একর জায়গায় ‘অলিম্পিক ভিলেজ’সহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। অধিগ্রহণ করতে যাওয়া জায়গার মধ্যে তিনটি আশ্রমের জমি রয়েছে। সেগুলো সাধু শ্রী আশারাম আশ্রম, ভারতীয় সেবা সমাজ ও সদাশিব প্রাজ্ঞ মণ্ডল।

২০১৩ সালে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আশারাম বাপুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় ২০১৮ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অবশ্য বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রাজস্থান হাইকোর্ট অসুস্থতার জন্য আশারাম বাপুকে জামিন দিয়েছেন। এই জামিনের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

২০৩৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারে ভারত আগ্রহী। এ ব্যাপারে গত বছরের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে (আইওসি) চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছে ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ)।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আসরের প্রস্তুতি হিসেবে বড় পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে তিনটি আশ্রমের জায়গা অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আশারাম বাপুর আশ্রম। আহমেদাবাদের মোটেরায় অবস্থিত এই আশ্রমকে সরদার প্যাটেল স্পোর্টস এনক্লেভ তৈরির জন্য অধিগ্রহণ করা হবে। অলিম্পিকের জন্য অন্যান্য স্থাপনাও নির্মাণ করা হবে মোটেরায় অবস্থিত বর্তমান নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের আশপাশের প্রায় ৬৫০ একর জমিতে।

তবে এসব আশ্রমের জায়গার বদলে অন্য স্থান অধিগ্রহণ করা যায় কি না, সে ব্যাপারেও সরকারের মধ্যে চিন্তাভাবনা আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ–সংক্রান্ত ‘দ্য ল্যান্ড পার্সেল ফাইনালাইজেশন কমিটি’ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বড় খেলাধুলার আসর অলিম্পিক আয়োজন করতে ভারতের খরচ হতে পারে ৩৪ হাজার ৭০০ কোটি থেকে ৬৪ হাজার কোটি রুপি। গত বছর প্যারিস অলিম্পিকে খরচ হয়েছিল ৩২ হাজার ৭৬৫ কোটি রুপি।

২০৩৬ সালের অলিম্পিক ভারতে অনুষ্ঠিত হলে সেগুলোর ভেন্যু হবে গুজরাটের দুটি শহরসহ ভোপাল, গোয়া, মুম্বাই ও পুনে।

আরও পড়ুনভারতে কিশোরী ধর্ষণ মামলায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারামের যাবজ্জীবন২৫ এপ্রিল ২০১৮

এ পর্যন্ত কাতার, সৌদি আরবসহ ১০টির বেশি দেশ ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কত দেশ এ ব্যাপারে আবেদন করেছে, তা এখনো জানা যায়নি।

২০৩৬ সালের অলিম্পিকের আয়োজক দেশের নাম জানা যাবে আগামী বছর।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ