ধর্ষণের দায়ে দণ্ডিত সেই আশারাম বাপুর জায়গা অলিম্পিকের জন্য অধিগ্রহণের পরিকল্পনা
Published: 27th, March 2025 GMT
২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের জন্য ভারতের স্বঘোষিত গুরু আশারাম বাপুর আশ্রমের জায়গা অধিগ্রহণ করা হতে পারে। ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এই গুরুর আশ্রম ছাড়াও আরও দুটি আশ্রমের জায়গাও অধিগ্রহণের পরিল্পনায় রয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পাটেলের নেতৃত্বাধীন সরকার অলিম্পিকের জন্য জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। আহমেদাবাদে অধিগ্রহণ করতে যাওয়া ৬৫০ একর জায়গায় ‘অলিম্পিক ভিলেজ’সহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। অধিগ্রহণ করতে যাওয়া জায়গার মধ্যে তিনটি আশ্রমের জমি রয়েছে। সেগুলো সাধু শ্রী আশারাম আশ্রম, ভারতীয় সেবা সমাজ ও সদাশিব প্রাজ্ঞ মণ্ডল।
২০১৩ সালে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আশারাম বাপুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় ২০১৮ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অবশ্য বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রাজস্থান হাইকোর্ট অসুস্থতার জন্য আশারাম বাপুকে জামিন দিয়েছেন। এই জামিনের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
২০৩৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারে ভারত আগ্রহী। এ ব্যাপারে গত বছরের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে (আইওসি) চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছে ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আসরের প্রস্তুতি হিসেবে বড় পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে তিনটি আশ্রমের জায়গা অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আশারাম বাপুর আশ্রম। আহমেদাবাদের মোটেরায় অবস্থিত এই আশ্রমকে সরদার প্যাটেল স্পোর্টস এনক্লেভ তৈরির জন্য অধিগ্রহণ করা হবে। অলিম্পিকের জন্য অন্যান্য স্থাপনাও নির্মাণ করা হবে মোটেরায় অবস্থিত বর্তমান নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের আশপাশের প্রায় ৬৫০ একর জমিতে।
তবে এসব আশ্রমের জায়গার বদলে অন্য স্থান অধিগ্রহণ করা যায় কি না, সে ব্যাপারেও সরকারের মধ্যে চিন্তাভাবনা আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ–সংক্রান্ত ‘দ্য ল্যান্ড পার্সেল ফাইনালাইজেশন কমিটি’ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বড় খেলাধুলার আসর অলিম্পিক আয়োজন করতে ভারতের খরচ হতে পারে ৩৪ হাজার ৭০০ কোটি থেকে ৬৪ হাজার কোটি রুপি। গত বছর প্যারিস অলিম্পিকে খরচ হয়েছিল ৩২ হাজার ৭৬৫ কোটি রুপি।
২০৩৬ সালের অলিম্পিক ভারতে অনুষ্ঠিত হলে সেগুলোর ভেন্যু হবে গুজরাটের দুটি শহরসহ ভোপাল, গোয়া, মুম্বাই ও পুনে।
আরও পড়ুনভারতে কিশোরী ধর্ষণ মামলায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু আশারামের যাবজ্জীবন২৫ এপ্রিল ২০১৮এ পর্যন্ত কাতার, সৌদি আরবসহ ১০টির বেশি দেশ ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কত দেশ এ ব্যাপারে আবেদন করেছে, তা এখনো জানা যায়নি।
২০৩৬ সালের অলিম্পিকের আয়োজক দেশের নাম জানা যাবে আগামী বছর।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে ডিএসই-সিএসই-পিএসএক্সের সমঝোতা স্মারক
দক্ষিণ এশিয়ার এক্সচেঞ্জগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ (পিএসএক্স)-এর মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে অনুষ্ঠিত এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান দিলশান উইরসেকারা, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অব পাকিস্তান-এর চেয়ারম্যান আকিফ সাইদসহ প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রবিবার (৩০ মার্চ) ডিএসইর প্রকাশনা ও জনসংযোগ উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
আইপিওর খসড়া সুপারিশ জমা দিয়েছে পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের
প্যারামাউন্ট সোলারের শেয়ার কিনবে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল
সমঝোতা স্মারকে তিনটি দেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর ডিজিটাল রূপান্তরে যৌথ উদ্যোগ, নতুন আর্থিক পণ্য ও বাজার উন্নয়নে এক্সচেঞ্জগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়, বাজার তদারকি এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা কাঠামোর সমন্বয়, মানবসম্পদ উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ, ক্রস-এক্সচেঞ্জ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং নলেজ শেয়ারিং উদ্যোগগুলি সংগঠিত করার বিষয়ে সহযোগিতার অঙ্গীকার প্রদান করা হয়।
এই সমঝোতা স্মারকের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হলো, বিনিয়োগকারীদের প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণের জন্য আন্তঃসীমান্ত তালিকাভুক্তির সুযোগ অনুসন্ধান করা, ব্রোকার অংশীদারিত্ব এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগের সুবিধা প্রদান করা।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আকারে ছোট হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ব্যতীত অন্যান্য দেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর প্রযুক্তিগত এবং প্রক্রিয়াগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে এসকল অত্যন্ত সম্ভাবনাময় স্টক এক্সচেঞ্জগুলো কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। সম্পদ ও অভিজ্ঞতার পারস্পরিক বিনিময় এবং প্রযুক্তিগত যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে আমাদের স্টক এক্সচেঞ্জগুলো নিজ নিজ দেশে দক্ষ ও শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। একত্রে কাজ করে, আমরা আমাদের আর্থিক ইকোসিস্টেমে সমৃদ্ধি ও উদ্ভাবনের সুযোগ উন্মুক্ত করতে পারব, যা বিনিয়োগকারী এবং অংশীদারদের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’’
ডিএসইর চেয়ারম্যান ওই অনুষ্ঠানে ‘Navigating Frontier Capital Markets: How Evolving Market Regulation and Exchanges Foster Efficient Capital Market Development’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। তিনি তার বক্তব্যে ডিএসই, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এবং অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা, ডিএসইর ডিমিউচুয়ালজেশন পরবর্তী অভিজ্ঞতা, পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন।
পরে ডিএসইর প্রতিনিধিরা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অব পাকিস্তান-এর চেয়ারম্যান, কমিশনার, পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সিস্টেমের সিইও ও সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টির সিইও এবং কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের সিইও, সিআরও ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন।
বৈঠকে ডিএসইর চেয়ারম্যান বর্তমান কার্যক্রম, রিজিওনাল পণ্যের বাজার উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি নিজস্বভাবে তৈরি, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। উপস্থিত সবাই তার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন করেন এবং একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে অনুষ্ঠিত রোড শোতে ডিএসইর প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, মিনহাজ মান্নান ইমন, রিচার্ড ডি’ রোজারিও এবং মহাব্যবস্থাপক ও কোম্পানি সচিব মোহামাদ আসাদুর রহমান।
ঢাকা/এনটি/রাজীব