পরিচয়নহীন শিশুটিকে পাঠানো হলো ঢাকায়, দত্তক নেয়নি কেউ
Published: 27th, March 2025 GMT
বরিশাল নগরের কীর্তণখোলার তীরে স্বজনদের ফেলে যাওয়া নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয় শিশুটিকে। হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউর মুনীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শিশুটিকে কেউ দত্তক নিতে রাজি হচ্ছে না।
অজ্ঞাত পরিচয়ের শিশুটিকে শনিবার উদ্ধারের পর বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের যৌথ প্রচেষ্টায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তত্ত্বাবধানের জন্য রাকিবুল হাসান ও অ্যাপোলি মৈত্রী নামের দুজন সমাজকর্মী শিশুটির সঙ্গে গেছেন।
এদিকে কীর্তণখোলার তীরে অজ্ঞাত পরিচয়ের শিশু উদ্ধারের খবর সমকালে প্রকাশের পর অনেকে শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এ বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক সমকালকে বলেন, দত্তক নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনেকে যোগাযোগ করেছিল। কিন্ত শিশুটির শারীরিক অবস্থা জানার পর তারা আর আগ্রহ দেখাননি।
শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিচালক বলেন, শিশুটির পিঠে মেরদণ্ডের টিস্যু থেকে টিউমারের উৎপত্তি হয়েছে। এটি পুরোপুরি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। চিকিৎসার ওপর ভরসা রেখে শিশুটিকে যতদিন কিছুটা সুস্থ রাখা যায়।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ১২টার দিকে নগরীর সংলগ্ন কীর্তণখোলার তীরে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় পরিত্যক্ত বাথরুমে নবজাতকটিকে উদ্ধার হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ফুচকা বিক্রেতা পারভীন বেগম শিশুটিকে উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, শারীরিক অবস্থার কারণে স্বজনরা শিশুটিকে ফেলে রেখে যান।
শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের দায়িত্বরত সমাজসেবা কর্মকর্তা দিলরুবা রিচি বলেন, চিকিৎসায় শিশুটি সুস্থ হলে সমাজসেবার বেবী হোমে হস্তান্তর করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।
২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস