পদ্মা সেতু হয়ে নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের
Published: 27th, March 2025 GMT
ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার একদিন আগেই কর্মব্যস্ত নগরী রাজধানী ছেড়ে গ্রামে ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকায়। তবে সেতুতে কোনো জটলা নেই, নেই বাড়তি সময়ক্ষেপন। স্বাভাবিক সময়ের মতোই জ্যাম ছাড়া নির্বিঘ্নে সেতু এলাকা পার হয়ে যাচ্ছে গাড়ি।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ভোর থেকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কিছুটা চাপ বৃদ্ধি পেলেও কোন ভোগান্তি ছিল না। এখন পর্যন্ত সড়কপথে যানজট কিংবা ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তির হাসি ফুটেছে মানুষের মুখে।
মাদারীপুরের শিবচর এলাকার মোটরসাইকেল যাত্রী সাইফুল বলেন, “আমি প্রায়দিনেই ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাতায়াত করি। এ বছর ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়ক ও পদ্মা সেতু টোল প্লাজায় এখনো কোন যানজট দেখিনি।”
বাসযাত্রী কাইয়ুম বলেন, “আমার বাড়ি নড়াইল জেলায়। ঈদ করতে বাড়ি ফিরছি। সকাল বেলা হাইওয়ে হয়ে অন্যান্য সময়ের মতোই চলে আসছি। মনেই হয়নি ঈদে বাড়ি ফিরছি।”
এদিকে ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা এলাকায় ৭টি বুথে আদায় করা হচ্ছে যানবাহনের টোল। তবে মোটরসাইকেলের জন্য বরাবরের মতোই এবারও রয়েছে আলাদাভাবে টোল নেওয়ার ব্যবস্থা।
সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামীকাল শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের ছুটি শুরু হলে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাবে সেতুতে। অন্যদিকে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
পদ্মা সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানিয়েছেন, সেতুতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টোল আদায় বেড়েছে। বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ টাকা। এসময় মাওয়া প্রান্ত হয়ে পদ্মা সেতু পারি দিয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২টি যানবাহন। এছাড়া উভয় প্রান্তে চলাচল করেছে ২৬ হাজার যানবাহন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, এবার ঈদ যাত্রায় পদ্মাসেতু হয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ।
ঘরমুখো মানুষের যাত্রা পথ নিরবিচ্ছিন্ন করতে জেলাজুড়ে চার শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যানবাহন বিকল হয়ে পড়লে রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টহল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহা-সড়কের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট যাত্রীরা।
পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেতুর উভয় প্রান্তে ২৬,৪২৮টি গাড়ি যাতায়াত করায় তিন কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
ঢাকা/রতন/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।
২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস