উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি সংবলিত নতুন আত্মঘাতী ড্রোনের পরীক্ষা তদারকি করেছেন বলে বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম নতুন আপগ্রেডেড রিকনেসান্স ড্রোন পরিদর্শন করেছেন, যা স্থল ও সমুদ্রে বিভিন্ন কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু এবং শত্রুর কার্যকলাপ শনাক্ত করতে সক্ষম।

উত্তর কোরিয়ার নেতা বলেছেন, “সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে মনুষ্যবিহীন সরঞ্জাম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত এবং বিকশিত করা উচিত।”

আরো পড়ুন:

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সড়ক সেতু নির্মাণ করবে রাশিয়া

উত্তর কোরিয়া ও চীনকে লক্ষ্য করে জাপানের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন

পারমাণবিক অস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়া প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে একটি পূর্ব-সতর্কীকরণ প্রতিরক্ষা বিমানও উন্মোচন করেছে, যা দেশটির পুরানো বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারে।

বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে সামরিক বিশ্লেষকরা আগেই বলেছিলেন যে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার তৈরি নির্দিষ্ট মডেলের কার্গো বিমানকে পূর্ব-সতর্কীকরণের ভূমিকায় রূপান্তর করছে।

লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে জানায়, “এ ধরনের বিমান উত্তর কোরিয়ার বিদ্যমান স্থল-ভিত্তিক রাডার সিস্টেমগুলোকে উন্নত করতে সাহায্য করবে। তবে প্রতিরক্ষার জন্য একটি বিমান যথেষ্ট হবে না। সুতরাং উত্তর কোরিয়া এ ধরনের আরো বিমান নির্মাণে সক্ষম হওয়ার জন্য চেষ্টা চালাতে পারে।”

এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিমানটির পরিচালনা ক্ষমতা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এর চেহারা ইঙ্গিত দেয় যে, এটি বড় ও ভারী এবং সম্ভবত প্রতিরক্ষার কাজে সংবেদনশীল।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সমর্থন জানিয়ে সেনা এবং অস্ত্র পাঠানোর বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক প্রযুক্তি পাচ্ছে বলে দীর্ঘদিন থেকেই অভিযোগ করে আসছে দক্ষিণ কোরিয়া।

কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম আত্মঘাতী ড্রোন, পূর্ব সতর্কীকরণ প্রতিরক্ষা বিমান ছাড়াও ইলেকট্রনিক জ্যামিং ও আক্রমণ ব্যবস্থার জন্য নতুন উন্নত সরঞ্জাম পরিদর্শন করেছেন। নতুন এসব অস্ত্র নিয়ে কিম অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ছ ন ক করণ

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ