উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি ক্রোম ব্রাউজারে ভয়ংকর নিরাপত্তা ত্রুটির সন্ধান পেয়েছে সাইবার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। জিরো ডে ঘরানার এই ত্রুটি কাজে লাগিয়ে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার থেকে তথ্য চুরি করতে পারে সাইবার অপরাধীরা। আর তাই বিষয়টি জানার পর দ্রুত ক্রোম ব্রাউজারের নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করে সফটওয়্যার হালনাগাদ (নিরাপত্তা প্যাচ) উন্মুক্ত করেছে গুগল। ‘সিভিই-২০২৫-২৭৮৩’ নামের এই ত্রুটি থেকে নিরাপদ থাকতে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের দ্রুত  ক্রোম ব্রাউজার হালনাগাদ করতেও পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ক্রোম ব্রাউজারের এই নিরাপত্তা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে অপারেশন ফোরাম ট্রল নামে এক সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। মূলত সাংবাদিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে এই সাইবার হামলা চালিয়েছে তারা। এ জন্য প্রথমে ফিশিং ই–মেইলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রণের বার্তা পাঠানো হয়। ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে ই–মেইলে থাকা লিংকে প্রবেশ করলেই ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে চালু হয়ে কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করে।
ক্যাসপারস্কির তথ্যমতে, এই ত্রুটির মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ক্রোম ব্রাউজারের স্যান্ডবক্সের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করতে সক্ষম হয়েছে। স্যান্ডবক্স প্রযুক্তির কাজ হলো ব্রাউজারের কার্যক্রমকে নির্দিষ্ট একটি পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। তবে এই ত্রুটির ফলে সাইবার অপরাধীরা ব্রাউজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরাসরি কম্পিউটার থেকে তথ্য চুরি করতে সক্ষম হয়েছে।
জিরো ডে নিরাপত্তা ত্রুটি মূলত সফটওয়্যারের দুর্বলতা। নিজেদের তৈরি সফটওয়্যারে ত্রুটি শনাক্ত হলে দ্রুত সমাধান করে নিরাপত্তা প্যাচ উন্মুক্ত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্যাচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়।
সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই ত র ট

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ