ক্রোম ব্রাউজারে ভয়ংকর ত্রুটি, নিরাপদ থাকতে যা করতে হবে
Published: 27th, March 2025 GMT
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তৈরি ক্রোম ব্রাউজারে ভয়ংকর নিরাপত্তা ত্রুটির সন্ধান পেয়েছে সাইবার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি। জিরো ডে ঘরানার এই ত্রুটি কাজে লাগিয়ে ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার থেকে তথ্য চুরি করতে পারে সাইবার অপরাধীরা। আর তাই বিষয়টি জানার পর দ্রুত ক্রোম ব্রাউজারের নিরাপত্তাত্রুটির সমাধান করে সফটওয়্যার হালনাগাদ (নিরাপত্তা প্যাচ) উন্মুক্ত করেছে গুগল। ‘সিভিই-২০২৫-২৭৮৩’ নামের এই ত্রুটি থেকে নিরাপদ থাকতে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের দ্রুত ক্রোম ব্রাউজার হালনাগাদ করতেও পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ক্রোম ব্রাউজারের এই নিরাপত্তা ত্রুটি কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে অপারেশন ফোরাম ট্রল নামে এক সাইবার হামলা চালানো হয়েছে। মূলত সাংবাদিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে এই সাইবার হামলা চালিয়েছে তারা। এ জন্য প্রথমে ফিশিং ই–মেইলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের কাছে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রণের বার্তা পাঠানো হয়। ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে ই–মেইলে থাকা লিংকে প্রবেশ করলেই ক্ষতিকর ওয়েবসাইটে চালু হয়ে কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করে।
ক্যাসপারস্কির তথ্যমতে, এই ত্রুটির মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ক্রোম ব্রাউজারের স্যান্ডবক্সের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করতে সক্ষম হয়েছে। স্যান্ডবক্স প্রযুক্তির কাজ হলো ব্রাউজারের কার্যক্রমকে নির্দিষ্ট একটি পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। তবে এই ত্রুটির ফলে সাইবার অপরাধীরা ব্রাউজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সরাসরি কম্পিউটার থেকে তথ্য চুরি করতে সক্ষম হয়েছে।
জিরো ডে নিরাপত্তা ত্রুটি মূলত সফটওয়্যারের দুর্বলতা। নিজেদের তৈরি সফটওয়্যারে ত্রুটি শনাক্ত হলে দ্রুত সমাধান করে নিরাপত্তা প্যাচ উন্মুক্ত করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্যাচ উন্মুক্তের আগে হ্যাকাররা যদি সেই ত্রুটি ব্যবহার করতে পারে, তখন সেটিকে জিরো ডে নিরাপত্তাত্রুটি বলা হয়।
সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ত র ট
এছাড়াও পড়ুন:
মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে জার্মান স্টার্টআপ
জার্মানির একটি স্টার্টআপ মাংসের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করছে, যা খেতে সুস্বাদু হবে। আরেক স্টার্টআপ একটি সফটওয়্যার তৈরির চেষ্টা করছে, যেটি দিয়ে গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা যাবে। এই দুই স্টার্টআপের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে ইউরোপে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপটির নাম ‘গ্রিনহাব’। এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার ইয়াভরস্কি জানান, তাঁদের লক্ষ্য বিশ্বের সবার জন্য তাজা খাবার নিশ্চিত করা।
বার্লিনের স্টার্টআপ ‘এসেনসিয়া ফুডস’ মাংসের বিকল্প তৈরি করছে। ‘সলিড-স্টেট ফার্মেন্টেশন’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে মাশরুমের শিকড় মাইসেলিয়াম থেকে এই বিকল্প মাংস তৈরি করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা হেন্ডরিক কায়ে বলেন, ‘আমরা বলছি, সবার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা থাকা দরকার। সব পরিবার যেন এটা পেতে পারে, এমনকি নিম্ন আয়ের দেশের মানুষও যেন পায়।’
এসেনসিয়া ফুডসের আরেক প্রতিষ্ঠাতা আর্জেন্টিনার ব্রুনো স্কোকোসা। বায়োফিজিকসে পিএইচডি করেছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি একজন শেফও। মাশরুম দিয়ে মাংসের একটি ভালো বিকল্প তৈরি করতে চান স্কোকোসা। কারণ, বর্তমানে যে ভেগান বিকল্প পাওয়া যায়, তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন।
স্কোকোসা বলেন, ‘উদ্ভিদভিত্তিক যেসব বিকল্প আছে, তার অনেকটির সমস্যা হচ্ছে। সেগুলোতে প্রোটিন পাউডার ব্যবহার করা হয়, যেটা খেতে সুস্বাদু নয়। তাই ওই স্বাদে পরিবর্তন আনতে অনেক মসলা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু আমরা এমন কিছু ব্যবহার করছি না, যেটার স্বাদ পরিবর্তন করতে হবে।’
ক্লারা কোম্পানির একজন খাদ্যবিজ্ঞানী। তিনি নতুন পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যেমন এই ভেগান ড্যোনার কাবাব। সামান্য মসলা ছিটানোর পরই এটি খাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে যায়।
ক্লারা বলেন, এটি আসলে বহুমুখী। বিভিন্ন ধরনের পণ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সসেজ হিসেবে খাওয়া যায়। এ ছাড়া ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত করতে হয় এমন সব খাবার, যেমন কিমা করা মাংস, কাবাবের স্ট্রিপ—যেমনটা এখানে দেখতে পাচ্ছেন, মুরগির টুকরা ইত্যাদি হিসেবেও খাওয়া যায়।
গাছের স্বাস্থ্য রক্ষায় সফটওয়্যারজলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছে লাইপজিগের স্টার্টআপ গ্রিনহাব। খরা ও অতি বৃষ্টির কারণে ঘরে জন্মানো সবজির কোনো সমস্যা হয় না। তবে গ্রিনহাব একটি সফটওয়্যার তৈরি করছে, যা দিয়ে এসব সবজির বৃদ্ধির ওপর নজর রাখা যায়।
গ্রিনহাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা কাই প্লাট জানান, সফটওয়্যারটা আসলে মালির মতো কাজ করে। এটা গাছের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখে। পুষ্টির মাত্রার মতো পানির প্যারামিটার থেকে শুরু করে এটি গাছের সামগ্রিক অবস্থা মূল্যায়ন করে থাকে।
তবে সফটওয়্যারটি এখনো অভিজ্ঞ মালির মতো হয়ে উঠতে পারেনি। সে কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিতে চায় গ্রিনহাব। তাই এখন গাছের সর্বোচ্চ পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন এমন সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যেমন আলো, পুষ্টি ও আর্দ্রতার সঠিক মাত্রা কেমন হওয়া উচিত ইত্যাদি।
গ্রিনহাবের আরেক প্রতিষ্ঠাতা ইয়াভরস্কি বলেন, ‘এগুলো বেশ জটিল প্রক্রিয়া। কখনো কখনো অপ্রত্যাশিত চমক নিয়ে আসে। যেমন গাছ হয়তো ছত্রাক সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনটা হলে কী করতে হবে, সেই সমাধান এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।’
তারপরও জার্মানির দুটি বড় গবেষণা সংস্থা গ্রিনহাবের সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন উদ্ভিদের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা জানতে এটি ব্যবহার করতে চায় তারা। এসেনসিয়া ফুডসের মাংসের বিকল্পের প্রতিও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। একটি জার্মান সুপারমার্কেট চেইন ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই কোম্পানিটি এখন উৎপাদন বৃদ্ধির পথ খুঁজছে।