জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই বলে দাবি করেছেন দলটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। তাঁর ভাষ্য, গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্বের সবাই এই দলের হাল ধরেছেন। এটি একক কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের পীরগঞ্জ যাওয়ার পথে নগরের মাহীগঞ্জ এলাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান আখতার হোসেন।

সম্প্রতি এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড় ভ্রমণ ও এ বিষয়ে দলটির দুই নেতার পাল্টাপাল্টি ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে আখতার হোসেনের কাছে জানতে চান ওই সাংবাদিক। জবাবে আখতার হোসেন বলেন, ‘যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে থাকেন, সেটি আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করব। আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যবৃন্দের মধ্যকার কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মধ্যে মনে হচ্ছে—দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতার জায়গা তৈরি হয়েছে। বিষয়টা এমন নয়।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন দলটির প্রস্তুতি নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠকেরা সারা দেশে কমিটি গঠনের কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা মানুষের দেশের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। তাঁরা আশাবাদী অল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচনের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয়, জাতীয় নাগরিক পার্টি সেগুলো পূরণ করতে পারবে।

এনসিপির সদস্যসচিব বলেন, ‘আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার ও বিচার কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা আছে।’ তিনি বলেন, এই ফ্যাসিবাদী, এই একনায়কতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসনকাঠামো পরিচালিত হোক, এটা আর দেশের মানুষ চান না।

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বর অথবা জুনের মধ্যে যে নির্বাচন করার কথা বলেছেন সেটি নিয়েও কথা বলেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, সরকারের তরফে যদি সদিচ্ছা থাকে এই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করা সম্ভব। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান করে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব নির্বাচিত হওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো রংপুরে যান আখতার হোসেন। দুপুরে নগরের সাতমাথা থেকে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে ভ্যানযোগে পীরগাছা ও কাউনিয়ার কয়েকটি জায়গায় জনসংযোগ শেষে টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার কথা আছে তাঁর।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ