বগুড়ায় দুই তরুণকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে করা মামলায় রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি-আরএমপি) পাঁচ সদস্য এবং তাঁদের গাড়িচালকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন।

বগুড়ার আদালত পুলিশের প‌রিদর্শক মোসা‌দ্দেক হোসেন প্রথম আলোকে ব‌লেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হায়দার আলী বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক আজ দুপুরে শুনানি শেষে প্রত্যেকের এক দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামিরা হলেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম, বশির আলী, ওহাব আলী ও মাইক্রোবাসের চালক মেহেদী হাসান।

প‌রিদর্শক মোসা‌দ্দেক হোসেন আরও বলেন, একই মামলায় গ্রেপ্তার ডিবি-আরএমপির কনস্টেবল ওহাব আলীকে (২৮) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। আদালতে এটি শুনানির অপেক্ষায় আছে।

আরও পড়ুনবগুড়ায় দুই তরুণকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা, ডিবির ৫ সদস্য গ্রেপ্তার২৪ মার্চ ২০২৫

গত মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগরী এলাকা থেকে ওহাব আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওহাব আলী ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা করার পর রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একজন উপপরিদর্শকসহ ছয় সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের কলেজছাত্র মো.

রাব্বীর বাবা সেলিম শেখ বাদী হয়ে গত সোমবার ধুনট থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে পুলিশের ছয় সদস্যসহ সাতজনকে আসামি করে এ মামলা করেন।

আরও পড়ুনবগুড়ায় দুই তরুণকে অপহরণ: পুলিশের গোয়েন্দা শাখার আরও এক সদস্য গ্রেপ্তার২৬ মার্চ ২০২৫

এর আগে সোমবার ভোরের দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রাম উপজেলার বীরগ্রাম এলাকায় হাইওয়ের কুন্দারহাট থানা-পুলিশের একটি দল মাইক্রোবাস থামিয়ে ডিবির ওই পাঁচ সদস্য ও গাড়িচালককে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের দুই লাখ টাকা, ডিবির পোশাক ও পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ, মুক্তিপণ নেওয়ার সময় পুলিশ সদস্যসহ চারজন আটক

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে আটক করে পিটুনি দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ডামুড্যা বাসস্টান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার গারফা এলাকার কৌশিক আহমেদ (৩০), শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধুলকুড়া এলাকার কাউসার তালুকদার (২৯), মাগুরা জেলার বাসিন্দা রুবায়েত মীর (২৭) ও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আমৌদা এলাকার শরীফ হোসেন (৩৫)। রুবায়েত মীর চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য, কৌশিক ও কাউসার পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম।

এ সম্পর্কে নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি চক্র দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছিল। মুক্তিপণ আদায় করার সময় জনতার হাতে ওই চক্রের চারজন ধরা পড়েন। তখন পুলিশ তাঁদের আটক করে। ওই চারজনের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। আর পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা এখানে কীভাবে এসেছিলেন, কোথায় কর্মরত আছেন, তা–ও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’

পুলিশ ও ডামুড্যা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইকরকান্দি এলাকার জুয়েল সরদার ও ফয়সাল সরদার ডামুড্যা বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। গতকাল রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ওই দুজন বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডামুড্যার দারুল আমান বাজার এলাকায় কয়েকজন ওই দুই ব্যবসায়ীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। অপহরণকারী দুই ব্যবসায়ীর কাছে সারা দিনে কাপড় বিক্রির টাকা চান। তবে ওই দুজনের কাছে কোনো টাকা ছিল না। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চান। দুই ব্যবসায়ী ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মাদারীপুর শহরের লেকের পাড়ে যান। সেখানে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণকারী ব্যক্তিরা চার লাখ টাকা আদায় করেন।

বাকি ছয় লাখ টাকা আদায় করার জন্য দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁরা ওই দুজনকে নিয়ে ডামুড্যা বাসস্টান্ড এলাকায় যান। সেখানে দুই ব্যবসায়ী গাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। তখন স্থানীয় লোকজন ডাকাত বলে চিৎকার দেন। তখন অপহরণকারী ব্যক্তিরা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন অপহরণকারী চারজনকে আটক করে পিটুনি দেন। পরে ডামুড্যা থানার পুলিশ সদস্যরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। ওই গাড়িতে থাকা আরও চারজন পালিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে জয় পোদ্দার নামে আরেক পুলিশ সদস্য ছিলেন।

আটক হওয়ার পর অপহরণকারী দলের সদস্য রুবায়েত মীর বলেন, ‘কাউসার তালুকদার আমাদের এখানে এনেছেন। তিনি এই মিশনে আমাদের বস। অপহরণের সময় যেই টাকা পেয়েছিলাম, তা কাউসারের কাছে। আমি আর কিছু জানি না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষোভ থেকে হা–মীমের কর্মকর্তাকে হত্যা: র‌্যাব
  • শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ: ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জনের নামে মামলা
  • মুক্তিপণ আদায়কালে গণপিটুনি, অপহরণকারী তিন পুলিশসহ গ্রেপ্তার ৪
  • যবিপ্রবির সাবেক ভিসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • ঈদের ছুটিতে লাশবাহী গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন এসআই কবির
  • শরীয়তপুরে ২ ব্যবসায়ীকে অপহরণ, পুলিশসহ আটক ৪
  • শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ, মুক্তিপণ নেওয়ার সময় পুলিশ সদস্যসহ চারজন আটক
  • দিনাজপুরে বাসচাপায় ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই নিহত
  • নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে: রবি
  • হা-মীমের কর্মকর্তা খুনে দুই গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে: র‌্যাব