রাজধানীর ধানমন্ডির ৮ নম্বর সড়কে র‌্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত র‌্যাব লেখা কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের র‌্যাব লেখা ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরি ছেনি, একটি পুরাতন লাল রঙের স্লাইরেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ফরহাদ বিন মোশারফ (৩৩), ইয়াছিন হাসান (২২), মোবাশ্বের আহাম্মেদ (২৩), ওয়াকিল মাহমুদ (২৬), আবদুল্লাহ (৩২) ও সুমন (২৯)। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  
 
ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, ৮ নম্বর সড়কে ভিকারুননিসা স্কুলের গলিতে ছয়তলা একটি ভবনের মালিক এম এ হান্নান আজাদ নামে এক ব্যক্তি। ওই ভবনে ‌‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। বাড়ির নিচতলা, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় এস এম সোর্সিংয়ের অফিস রয়েছে। এ ছাড়া ওই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি কনসালটেন্সি অফিস এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা নিয়ে তার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট রয়েছে। বুধবার ভোরে তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে অভিযুক্ত ডাকাতরা ওই বাসার সামনে গিয়ে গেটে দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ডদের নিজেদের র‌্যাবের লোক, তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছে বলে জানায়। তারা বাড়িতে অভিযান চালাবে এ কথা বলে তাড়াতাড়ি গেট খুলতে বলে। তাদের কয়েকজনের গায়ে র‌্যাব লেখা কটি পরা ছিল। সে সময় দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড তাদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। তখন অভিযুক্ত ডাকাতরা সিকিউরিটি গার্ডদের গালিগালাজ করতে থাকে এবং গেট না খুললে তাদের হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজন গেটের ওপর দিয়ে উঠে জোর করে গেট খুলে ফেলে। এরপর তারা জোর করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে সিকিউরিটি গার্ড, কেয়ারটেকার ও গাড়ি চালককে দড়ি দিয়ে ভেঁধে ফেলে। তারা নিচতলার অফিসের গেট ভেঙে পিয়নকে মারধর করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর ডাকাতরা তাকে ভয় দেখিয়ে তৃতীয় তলায় গিয়ে এস এম সোর্সিংয়ের অফিসের গেট ভাঙে। এ সময় গেট ভাঙার শব্দ পেয়ে চতুর্থ তলায় থাকা এস এম সোর্সিংয়ের তিনজন অফিস সহকারী তৃতীয় তলায় নেমে আসেন।

ডাকাতরা তখন তাদেরও আটক করে মারধর করে অফিস ও বাসার চাবি দিতে বলে। তারা জোর করে চাবি নিয়ে তৃতীয় তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে এবং অফিসের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ২২ লাখ টাকা লুট করে নেয় ও অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাদের আরেকটি দল চতুর্থ তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে আলমারি ভেঙে নগদ ১৩ লাখ টাকা লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নান আজাদের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের কানের দুল ও চেইনসহ আনুমানিক আড়াই ভরি স্বর্ণ লুট করে। পরে মালিক এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে উঠানোর চেষ্টা করে। তখন ধানমন্ডি থানার একটি টহল টিম ওই বাড়ির সামনে গিয়ে ডাকাতদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা ছেনি ও রেঞ্জ দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। তখন আশেপাশের লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও মালিকের ভাগ্নে তৌহিদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারকৃতসহ পলাতক আটজন এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ডিএমপির ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়।

মামলা পর তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার ভোরে হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত আবদুল্লাহ ও সুমন নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা ও ডাকাত দলের পলাতক সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ নমন ড র অফ স র ধ নমন ড জ র কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিরতিহীন রোজা রাখা কি বৈধ

নবীজি (সা.) কখনো কখনো রাত-দিনের পুরোটা সময় অনাহারে কাটাতেন এবং রোজা রাখতেন। আল্লাহর ইবাদতে সারা সময় নিয়োজিত থাকতেন। (ইবনে কায়্যিম, যাদুল মাআদ, ২/৩২)

রাত-দিন একত্রে এভাবে ধারাবাহিক রোজা পালন করাকে ‘সাওমে ওসাল’ বলে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সওমে ওসাল পালন করো না।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘আপনি তো পালন করছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘আমি তোমাদের কারও মতো নই। আমাকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) পানাহার করানো হয়।’ অথবা বলেছেন, ‘আমি রাত যাপন করি পানাহার করানো অবস্থায়।’’ (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬১)

নবীজি(সা.) র পানাহার যেভাবে হতো

আল্লাহর পক্ষ থেকে পানাহারের পদ্ধতি সম্পর্কে আলেমদের মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেন, তাঁর খাদ্য ও পানীয় ছিল ইন্দ্রিয়গত—আধ্যাত্মিকভাবে নয়। তাকে সরাসরি খাদ্য প্রদান করা হতো। হাদিসের বাহ্যিক শব্দ-প্রয়োগ এ অর্থই বহন করছে। তবে কারও মতে, তা ইন্দ্রিয়গত ছিল না—আল্লাহ তাকে যে ইবাদতের আস্বাদ দান করতেন, এটা তারই ইঙ্গিত। যদি ইন্দ্রিয়গত হয়, তবে তাতে সওমে ওসাল পালনকারী বলা যায় না।

শেষোক্ত মতই অধিক যুক্তিযুক্ত মনে করা যায়।

আরও পড়ুনরমজানে নবীজির (সা.) ‘সমাধান মজলিস’২২ মার্চ ২০২৫

তিনি ‘সওমে ওসাল’ কীভাবে করেছেন

রাসুল (সা.) টানা কয়েকদিন ইফতার-সাহরি বা কিছুই না খেয়ে রোজা রাখতেন। আবু হোরাইরা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) ‘সাওমে ওসাল’ বা ধারাবাহিক রোজা রাখতে করতে বারণ করেছেন। যখন সাহাবিদের অনেকে তার সঙ্গে রোজা রাখবে বলে নাছোড় হলো, তখন রাসুল তাদের সঙ্গে একদিন রোজা রাখলেন, এরপর আরেকদিন রাখলেন। এরপর চাঁদ উঠল। এরপর তিনি বললেন, ‘যদি চাঁদ উঠতে আরও বিলম্ব হতো, তবে আমি আরও বৃদ্ধি করতাম।’ সাহাবিদের তিরস্কার করে তিনি এমন বলেছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৯৬৫)

কেন বারণ

‘সওমে ওসাল’ বা বিরতিহীন রোজা একমাত্র রাসুলের বিশেষত্ব; অন্য কারও জন্য তা বৈধ নয়। তবে, কেউ যদি একান্তভাবে তা পালন করতে চায়, তাহলে ইফতার না করে কেবল সাহরি অবধি বিলম্বিত করার বৈধতা রয়েছে। এক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা ‘সাওমে ওসাল’ করো না, কেউ যদি ‘ওসাল’ করতে আগ্রহী হয়, তবে সে যেন সাহরি পর্যন্ত করে। (বুখারি, হাদিস: ১,৮৬২)

তবে এটা কেবলই বৈধতা—উৎসাহ কিংবা সম্মতি নয়।

 রাসুল (সা.) নিজে ওসাল করা সত্ত্বেও সাহাবিদের বিরত থাকার আদেশ প্রদান উম্মতের প্রতি তার দর্য়াদ্রতা প্রমাণ করে। কেননা, নিষেধ না-করলে সাহাবিগণ নিশ্চিত তার আমল অনুসরণে আত্মনিয়োগ করতেন। এবং পরবর্তী সময়ে তা কষ্টের কারণ হতো। (ইবনে হাজার, ফাতহুল বারি, ৬/২২৯)

আরও পড়ুন  যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সিকান্দার’-এর জন্য সানি দেওলের শুভকামনা, কী বলছেন অন্য তারকারা
  • পল্লবীর এক বাসা থেকে ৬১টি চোরাই ল্যাপটপ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
  • ‘সাবলেট’ নেওয়ার কথা বলে নেন চাবি, সেই রাতেই বাসায় ঢুকে চুরি
  • ব্যবসায়ীকে সাইফের মারধরের অভিযোগ, ঘটনার বর্ণনা দিলেন অমৃতা
  • ঈদের ছুটিতে ক্রিকেটাঙ্গন, ব্যস্ত কেবল নারী দল
  • মাঠে নামার দুই মিনিটেই গোল করে মায়ামিকে জেতালেন মেসি
  • যমুনা সেতুর ওপর দুর্ঘটনায় যানচলাচল ব্যাহত, পরে স্বাভাবিক
  • এমবাপ্পের জোড়া গোলে বার্সাকে ছুঁলো রিয়াল
  • ঈদের দিনও থাকবে গরম, নেই বৃষ্টির সম্ভাবনা
  • বিরতিহীন রোজা রাখা কি বৈধ