নারায়ণগঞ্জে ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ
Published: 27th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন একটি পোশাক কারখানা শ্রমিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের থানা পুকুরপাড় এলাকায় কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের থানা পুকুরপাড় এলাকায় রাসেল গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকেরা ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর ১২টার দিকে তাঁরা কারখানা থেকে এস এম মালেহ রোডে নেমে আসেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে।
কারখানার সুইং সেকশনের শ্রমিক জয়নাল আবেদিন বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ তিন দিনের ছুটি দিয়েছে। ছুটি নিয়ে কথা বলতে গেলে শ্রমিকদের মারধর করেছেন মালিকপক্ষের লোকজন। কাটিং সেকশনের হেলপার মো.
সুইং সেকশনের অপারেটর আকলিমা বলেন, তাঁদের বলা হয়েছিল এক দিন জেনারেল ছুটিতে কাজ করলে দুই দিনের ছুটি দেওয়া হবে। তাঁরা তিনটি জেনারেল ছুটিতে কাজ করেছেন। ওই হিসাবে পাঁচ দিনের ছুটি পান।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতিটি কারখানার ব্যবস্থাপনা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ছুটির সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পরিতোষ প্রথম আলোকে বলেন, ছুটি বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে আদমজীতে অবস্থিত শিল্প পুলিশ-৪ পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা জানান, ছুটি বৃদ্ধি নিয়ে রাসেল গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সরকার ২৯ মার্চ থেকে আগামী ২ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছে। ৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি থাকায় সরকারি চাকরিজীবীরা মোট ৯ দিনের ছুটি পাবেন। চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হতে পারে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ত্বকী হত্যা মামলা: আজমেরী ওসমানের গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর
নারায়ণগঞ্জে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাসুম শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন। এ ছাড়া আজ মামলার অন্য আসামিরাও আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
মামলায় হাজিরা দেওয়া আসামিরা হলেন আজমেরী ওসমানের খালাতো বোনের স্বামী আবদুল্লাহ আল মামুন, গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরী, সহযোগী মামুন মিয়া, কাজল হাওলাদার, পারভেজ, শিপন মিয়া, ইউসুফ হোসেন লিটন, রিফাত বিন ওসমান ও তায়েব উদ্দিন (জ্যাকি)। কারাবন্দী আসামি কাজল হাওলাদার ছাড়া অন্য আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ কাইউম প্রথম আলোকে বলেন, জামশেদ চৌধুরী গাড়িতে করে নিয়ে ত্বকীর লাশ ফেলে দিয়েছিলেন বলে জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আইনজীবীর উপস্থিতিতে আসামিকে ধার্য তারিখের আগে যেকোনো দিন র্যাব কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরীকে এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁর গাড়িতে লাশ নিয়ে ফেলা হয়েছে। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। জামশেদ চৌধুরী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। আদালত আগামী ২৬ মে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত (ভ্রমর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিল, ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছেন। তবে গত ১২ বছরেও অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মামলায় তদন্তকারী সংস্থা র্যাব ত্বকী হত্যা মামলায় নতুন করে আরও ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন আজমেরী ওসমানের খালাতো বোনের স্বামী আবদুল্লাহ আল মামুন, গাড়িচালক জামশেদ চৌধুরী, সহযোগী মামুন মিয়া, কাজল হালদার, পারভেজ ও শিপন মিয়া।