অবৈধ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের পাঁচ বছর ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তার মা আয়েশা আক্তার খালাস পেয়েছেন। 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এছাড়া জিকে শামীমের ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

জিকে শামীমের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এ ধারায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এসব তথ্য জানান।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে সাজা দিয়েছেন। আমরা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তারপরও আদালত তাকে এ অভিযোগ হতে খালাস দিয়েছেন। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। 

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য ছিল। ওইদিন জি কে শামীমের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে পুনরায় জেরা করার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন। মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করা হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শুনানি, সাফাই সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২০ মার্চ আবার রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।

এর আগে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর জিকে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো.

সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর আদালত এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। যার মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

এজাহার থেকে জানা যায়, জিকে শামীম ২০১৮-২০১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎস পায়নি দুদক।

এছাড়া শামীমের বাসা থেকে উদ্ধার করা নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ছাড়াও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রা, শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদার এবং জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎস পায়নি দুদক। 

অনুসন্ধানে শামীমের মায়েরও বৈধ আয়ের কোনো উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মোট ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক মামলাটি দায়ের করেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও চাঁদরাতে বাংলাভিশনের ‘উৎসবে আনন্দে’

এক যুগের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাভিশন চাঁদরাত ঘিরে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করে আসছে। প্রতিবারের মতো এবারও প্রচার করতে যাচ্ছে বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান ‘উৎসবে আনন্দে’। অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচার হবে ঈদের আগের দিন রাত ৮টা ১ মিনিটে।
ঈদ আয়োজনের পাশাপাশি জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল বাংলাভিশন ২০ বছরে পদার্পণ করছে। এবারের আয়োজনে অংশ নেবেন জনপ্রিয় তিন ফোকশিল্পী বিউটি, আশিক ও দীপা।

তাঁরা গান শুনিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করবেন। লোকসংগীতের ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে অনুষ্ঠানটিতে শিল্পীরা চিরায়ত বাংলা গানের কালজয়ী এবং জনপ্রিয় গানগুলোই এ অনুষ্ঠানে পরিবেশন করবেন বলে জানানো হয়েছে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

বাংলাভিশনের অনুষ্ঠানপ্রধান তারেক আখন্দ চাঁদরাত উপলক্ষে বলেন, ‘এবারের চাঁদরাত আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, কারণ, এটি ভিন্ন এক পটভূমিতে উদ্‌যাপিত হচ্ছে। একই সঙ্গে দর্শকপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন বাংলাভিশনের ১৯ বছর পূর্তি; ২০ বছরে পদার্পণ—যা আমাদের জন্য এক আনন্দঘন মুহূর্ত। আমরা চাই, এই উৎসবমুখর সময়কে চাঁদরাতের আয়োজনে আরও রঙিন করে তুলতে। সে লক্ষ্যে, প্রতিবছরের মতো এবারও লোকগীতি নিয়ে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি দর্শকেরা এক ভিন্ন আমেজে চাঁদরাত উপভোগ করবেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ