রেনাটার বন্ড ও প্রেফারেন্স শেয়ারে আবেদনের সময় বেড়েছে
Published: 27th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজারে ওষুধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রেনাটা পিএলসির নন-কনভার্টেবল, ফুললি রিডামবল, জিরো কুপন বন্ড এবং প্রেফারেন্স শেয়ারের আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেষবারের মতো কোম্পানিটির বন্ডটিতে আবেদন গ্রহণের সময় ৬ মাস এবং প্রেফারেন্স শেয়ারে আবেদন গ্রহণের সময় ৩ মাস বাড়িয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিএসইসির ৯৪৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো.
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনাটা পিএলসির ৬৬০ কোটি ১৫ লাখ টাকার সিকিউরড, নন-কনভার্টেবল, ফুললি রিডামবল, জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করবে। কমিশন বন্ডটিতে আবেদন গ্রহণের সময় শেষবারের মত ছয় মাস বৃদ্ধি করেছে। উক্ত বন্ডের সম্মতি পত্রের অন্যান্য তথ্য অপরিবর্তিত থাকবে।
এদিকে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কোম্পানিটির ৩৫০ কোটি টাকার অনুমোদিত রিডামবল, কিউমুলেটিভ, নন-কনভার্টেবল এবং নন-পার্টিসিপেটিভ প্রেফারেন্স শেয়ার (অগ্রাধিকার মূলক) ইস্যু করবে। কমিশন কোম্পানিটির শেয়ারে আবেদন গ্রহণের জন্য শেষবারের মত তিন মাস সময় বৃদ্ধি করেছে। উক্ত অগ্রাধিকার শেয়ারের সম্মতিপত্রের অন্যান্য তথ্য অপরিবর্তিত থাকবে।
ঢাকা/এনটি/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সমস্যা সবই জানা, সমাধানে মানসিকতার বদল জরুরি
শেয়ারবাজার সমস্যা বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও শেয়ারবাজার উন্নয়ন কমিটির সভাপতি ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, শেয়ারবাজারের সমস্যা সবই জানা। এগুলোর সমাধানে মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।
শেয়ারবাজারের সমস্যা এবং উত্তরণের পথ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত জানতে ড. আনিসুজ্জামান গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কার্যালয়ে যান। সেখানে বিএসইসি কর্মকর্তা এবং বাজার অংশীজনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম বিএসইসি কার্যালয়ে যান তিনি।
শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ১৯ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) ড. আনিসুজ্জামানকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। গতকালের বৈঠকে কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলাম এবং অপর সদস্য এফআইডির অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব উপস্থিত ছিলেন।
ড. আনিসুজ্জামান প্রথমে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। বৈঠকে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান, সিডিবিএলের এমডি এবং ডিএসই ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংক, সম্পদ ব্যবস্থাপক, নিরীক্ষক, ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। উভয় বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদসহ তিন কমিশনার অংশ নেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএসইসি বা বাজার অংশীজনের কেউই বাজারের জানা সমস্যার বাইরে নতুন কিছু জানাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আপনারা যেসব কথা বলেছেন, তার সবটাই জানা। সমস্যার কথা সবাই জানে। তবে সমাধান কীভাবে চান, সে বিষয়ে শুনতে চাই।’ তিনি সবার কাছে সমাধানের লিখিত প্রস্তাব চেয়েছেন।
শেয়ারবাজার বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণের আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পরিদর্শন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যালয়ের বাইরে ব্রোকারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কমিটির বৈঠকের প্রস্তাব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। বিএসইসির চেয়ারম্যান ডিএসইর পরিবর্তে তা সিএসইতে করার পক্ষে মত দেন। তাঁর কথা, ডিএসইতে এ ধরনের বৈঠক বহু হয়, সে তুলনায় সিএসইতে কম হয়।
সূত্র জানায়, বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কমিটিকে শেয়ারবাজারের বর্তমান আকার এবং এর কাঠামোগত বিষয়ে ধারণা দেন কর্মকর্তারা। তারা জানান, এ বাজার বর্তমানে বড় ধরনের যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে, সেগুলোর অন্যতম হলো– নেগেটিভ ইক্যুয়িটি ইস্যু, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিতে সুশাসনের অভাব, ভালো আইপিওর অভাব, বিনিয়োগ পণ্যের ঘাটতি এবং বাজার কারসাজিসহ শেয়ারবাজার ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট।
আলোচনায় ডিএসইর চেয়ারম্যান জানান, শেয়ারবাজারের লেনদেন ব্যাপক হারে কমায় লেনদেনে উৎসে কর বেশি থাকায় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ব্যবসা করে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই উৎসে কর কমানো দরকার। সিএসইর চেয়ারম্যান জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের পরীক্ষামূলক লেনদেন চালু হবে। প্রাথমিকভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জে স্বর্ণ, তুলা, পাট বা কমিশন যেসব পণ্য কেনাবেচার অনুমোদন দেবে, সেগুলো কেনাবেচা হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রূপালী চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভালো মূল্য ও কর সুবিধা না থাকায় দেশের বড় ও স্বনামধন্য কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে চায় না। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সভাপতি মাজেদা খাতুন বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা হলে সবাই সেকেন্ডারি শেয়ারবাজার নিয়ে আলোচনা করেন, যেখানে আইপিও নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়া উচিত।
বৈঠকে অন্যরা স্টক এক্সচেঞ্জসহ লেনদেনে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি আছে বলে জানান। তারা নগদ লভ্যাংশ বিতরণে বিলম্ব বা না দেওয়া ঠেকাতে তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা এবং আইপিওতে ভালো কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে কর রেয়াত সুবিধা বাড়ানোর সুপারিশ করেন।