রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর মুক্তি পেলেন মাগুরার আয়ুব আলী
Published: 27th, March 2025 GMT
পাবনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় নামের মিলের কারণে ২৬ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন মাগুরার আয়ুব আলী।
গত সোমবার (২৪ মার্চ) পাবনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান আয়ুব আলী। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) পাবনা থেকে বাড়িতে এসেছেন তিনি।
মো. আয়ুব আলী মাগুরা পৌরসভার নিজনান্দুয়ালীর বাসিন্দা। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাবনার সুজানগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় মূল আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নিজ এলাকা থেকে আয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই দিন তাকে মাগুরা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরদিন তাকে মাগুরা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১০ দিন পর তাকে পাবনা জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, আয়ুব আলীকে সুজানগর থানায় ২০১৭ সালের ৪ জুন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযোগটি ছিল, পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুকে অপহরণের পর ধর্ষণ। ওই মামলায় গত বছরের ১৪ জুলাই পাবনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে রায় দিয়েছেন।
মামলার নথি হাতে পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, ওই ঘটনার সঙ্গে কারাগারে থাকা আয়ুব আলীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অন্য একজন আয়ুব আলীর জায়গায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ২২ মার্চ ‘এক আয়ুবের সাজা ভোগ করছেন আরেক আয়ুব’ শিরোনামে রাইজিংবিডিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
আয়ুব আলীর আইনজীবী মো.
সোমবার আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাদীকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। সেখানে বাদী আদালতকে জানান, যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি আসল আসামি নন। এরপর আদালত আয়ুব আলীকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, “মামলাটি পুলিশের তিনজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। কেউই মূল আসামির বাবার নাম যে এজাহারে ভুল ছিল, সেটা জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে যাচাই করে সংশোধন করেননি। আসামির বাবার নামে ভুল হওয়ার কারণেই একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ভুলের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।”
বুধবার (২৬ মার্চ) কারামুক্ত আয়ুব আলী বলেন, “আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। এই হয়রানির কারণে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। সমাজে মানসম্মান নষ্ট হয়েছে। আর্থিক ক্ষতি হইছে। আর পরিবারের মানসিক অশান্তি তো আছেই। সরকারের কাছে আমার দাবি, আমার সাথে যা হইছে, এমন যেন আর কারও সাথে না হয়। নিরপরাধ কোনো লোক যেন এমন হয়রানির শিকার না হয়।”
মামলার নথি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, আসামি আয়ুব আলীর বাবার নাম মো. যদন আলী খান হলেও ভুল করে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছিল ওমেদ শেখ। এ কারণে ওমেদ শেখের ছেলে আয়ুব আলীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, যদন আলী খানদের মূল বাড়ি জেলার মহম্মদপুর উপজেলার ঘুল্লিয়া গ্রামে। তবে দীর্ঘদিন তার ছেলে আয়ুব আলী পৌরসভার নিজনান্দুয়ালীর কাটাখালী আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা ছিলেন। বছর চারেক আগে আশ্রয়কেন্দ্রের পাশে জায়গা কিনে বাড়ি করেছেন। ওই একই আশ্রয়কেন্দ্রে কয়েকটি ঘর ব্যবধানে থাকতেন সদ্য কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আয়ুব আলীর বাবা মো. ওমেদ আলী ওরফে ওমেদ শেখ।
ঢাকা/শাহীন/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে সমাবেশ
রাজধানীর গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে মিছিল–সমাবেশ করেছেন রিকশাচালকেরা। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুলশানের কালাচাঁদপুর ও বনানী ১১ নম্বর সড়কে সমাবেশ করেন তাঁরা।
সমাবেশে অংশ নেওয়া রিকশাচালকেরা অভিযোগ করেন, গুলশান সোসাইটির নিবন্ধিত রিকশা ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা গুলশান এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রিকশাচালক কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, গুলশান সোসাইটির নিবন্ধন নেই, এমন অটোরিকশা গুলশান এলাকায় গেলে রিকশার ক্ষতি করা হচ্ছে। গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কালাচাঁদপুরে সমাবেশের সময় রিকশাচালকদের কেউ কেউ সড়কে শুয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সড়কে যান চলাচল বন্ধ না করতে তাঁদের অনুরোধ করে। তবে পুলিশের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে বেশ কয়েকজন রিকশাচালক সড়কে শুয়েই থাকেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে গুলশান এলাকার সড়কে শুয়ে পড়েন রিকশাচালকেরা। পরে পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে উঠিয়ে দেয়। ঢাকা, ১৯ এপ্রিল