দেশ সেরা চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে 'ইতিহাস' খ্যাত নায়ক কাজী মারুফের সম্পর্ক বেশ ভালো। তবে এবার শাকিবিয়ানদের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়লেন মারুফ। ফেসবুক লাইভ ও পোস্টে ক্ষোভ ঝাড়েন এই নায়ক। ‘বরবাদ’ সিনেমার প্রদর্শন দেখতে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে গিয়েছিলেন নির্মাতা ও বোর্ড সদস্য কাজী হায়াত। সিনেমা দেখে বের হওয়ার সময় গেটে তার গাড়ি আটকে রাখেন শাকিব খানের ভক্তরা। কাজী হায়াত গাড়ি থেকে নেমে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে, ‘‘তুমি কে আমি কে, শাকিবিয়ান, শাকিবিয়ান’’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় বর্ষীয়ান এই নির্মাতার সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় ভক্তদের। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কাজী হায়াতপুত্র চিত্রনায়ক কাজী মারুফ। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলেন তিনি।

ফেসবুক পেজে লাইভে কাজী মারুফ বলেন, ‘‘কাজী হায়াত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের সদস্য। উনি যেটা করেছেন, তা একান্ত ওনার ব্যাপার। বা উনি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সেই ছবির ভালোর জন্যই নিয়েছেন, দেশের জন্য করেছেন।’’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড গেটে অবস্থান নেওয়া ভক্তদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের সময় ‘‘আমার মারুফেরও লোক আছে’’মন্তব্য করে আরও রোষানলে পড়েন কাজী হায়াত। এমনকি কাজী মারুফের ফেসবুক পেজের ইনবক্স ও মন্তব্যের ঘরে গালিগালাজসহ হুমকি আসতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে মারুফ বলেন, ‘‘মারুফের লোক আছে বলে বাবা বুঝিয়েছেন আমার দর্শক আছে। একসময় আমার দর্শক ছিল।’’

আরো পড়ুন:

সাবিলা নূরকে নিয়ে শাকিবের ‘তাণ্ডব’

প্রকাশ্যে ২৬ সেকেন্ডের ভিডিও, চমক নিয়ে হাজির শাকিব

মারুফ মনে করেন, এখনকার দর্শকেরা গল্পপ্রধান সিনেমা থেকে ভায়োলেন্স বেশি পছন্দ করেন। তাই তারা মারুফের সিনেমা পছন্দ করবেন না। তার কথায়, ‘‘এখনকার প্রজন্ম আমার সিনেমা দেখেনি, দেখলেও হয়তো পছন্দ করবে না। এখনকার দর্শক মারামারি পছন্দ করে, যার নজির দেশের চলমান অবস্থা। দেশে আছিয়ার মতো শিশুদের, এটা বলতেও আমার খারাপ লাগছে।’’

 কাজী মারুফ মনে করেন, নির্মাতাদের দায়বদ্ধতার জায়গা আছে। টাকার জন্য যা খুশি বানানো উচিত নয়। মারুফ বলেন, ‘‘অনেক কথা বলার আছে আমার। নির্মাতাদের সেল্ফ সেন্সরশিপ থাকা উচিত। দুইটা টাকার জন্য যা খুশি বানালাম, এটা কখনো উচিত নয়।’’

কাজী হায়াতের সিনেমায় ব্যবহার করা অশ্লীল বাক্য ও গালি নিয়ে সমালোচনার জবাবও দেন মারুফ। এই নায়ক বলেন,‘‘কাজী হায়াতের সিনেমায় অশ্লীল বাক্য ছিল। ‘ধর’ সিনেমার কথা বলবেন? যদি আপনার এ সিনেমা বোঝার ক্ষমতা থাকে, তাহলে আপনারা নীতিবান হবেন, দেশকে নিয়ে ভাববেন। যেন এই সিনেমার মান্নার ক্যারেক্টারের মতো আর কেউ তৈরি না হয়।’’

শাকিব খানের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক কাজী মারুফের। এই চিত্রনায়ক মনে করছেন, দুজনের সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য অনেকেই এমন করছেন। মারুফ বলেন, ‘‘শাকিবের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো, এটা নষ্ট হতে দেবেন না। আর নষ্ট হলে আমার কিছু যাবে আসবে না, আমার বাবারও কিছু আসবে যাবে না। এমনকি শাকিবের ক্ষেত্রেও সেইম।’’

এদিন শাকিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কথা বলেন মারুফ। এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘‘শাকিব তোমাকে ইচ্ছা করেই ফোন দিইনি, তুমি বিষয়টি দেখো।’’

 ঢাকা/রাহাত/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র ফ বল ন র জন য ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে প্রতারণার ফাঁদ

ফরিদপুর সদর উপজেলায় একটি পরিবারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েক বছর ধরে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করে প্রবাসীসহ বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে অর্থ ওঠানো হলেও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় কোনো বাস্তব উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। প্রস্তাবিত মাদ্রাসার জন্য এখনও এক ছটাক জমিও কেনা হয়নি, এমনকি কোনো ব্যাংক হিসাব নম্বরও খোলা হয়নি। শুধু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার কথা বলে টাকা তোলার একটি কার্যক্রমই দৃশ্যমান! 

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে অভিনব প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা মীর ইন্তাজ আলী ও তাঁর তিন ছেলে মো. ইব্রাহীম আলী, ইয়ামিন আলী ও ইয়াসিন আলী। যে মাদ্রাসার কথা বলে অর্থ সংগ্রহ করা হয়, সে প্রতিষ্ঠানের নাম ‘দারুল কুরআন মীর ইন্তাজ আলী মাদ্রাসা’। সরেজমিন ওই মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও ইন্তাজ আলীর ভাতিজা মো. মিজানুর রহমান মিজান জানান, প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির নামে ২০২১ সাল থেকে তাদের এই অভিনব প্রতারণা শুরু হয়। মাদ্রাসার কথা বলে এ পর্যন্ত চারটি ওয়াজ মাহফিল করা হয়েছে। মুফতি আমির হামজাও এখানে এসে ওয়াজ করেছেন। প্রতি ওয়াজেই মাহফিলের মাঠ থেকে মাদ্রাসার নামে লাখ লাখ টাকা ওঠানো হয়েছে। এমনকি প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। 

কল্পিত মাদ্রাসার নামে গত কয়েক বছরে প্রায় কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। অথচ ইন্তাজ আলী বা তাঁর ছেলেরা মাদ্রাসার নামে তোলা অর্থের বিষয়ে কারও কাছেই হিসাব দেননি। মাদ্রাসার জন্য এক ছটাক জমিও কেনেননি। 

ইন্তাজ আলীর প্রতিবেশী ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ মোল্লা বলেন, ইন্তাজ আলী ও তাঁর ছেলেরা একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসার নাম দিয়ে প্রতিবছর ওয়াজ মাহফিল করেন। তাদের বক্তব্য ছিল, এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করবেন। তারা প্রতিবছর অর্থ সংগ্রহ করেন কিন্তু মাদ্রাসার জন্য কিছু করেন না। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মিলু বলেন, ওই মাদ্রাসার দৃশ্যমান কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো  ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। কোনো কিছুই নেই। 

অভিযোগ অস্বীকার করে মীর ইন্তাজ আলী বলেন, ইসলামের অগ্রগতির জন্য তিনি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে মাদ্রাসার নামে কোনো অর্থ সংগ্রহ করা হয়নি।

ইন্তাজ আলীর ছেলে ইয়ামিন আলীর ভাষ্য, এটি একটি প্রস্তাবিত মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। ইন্তাজ আলীর আরেক ছেলে প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ইব্রাহীম আলী বলেন, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। অর্থ সংগ্রহ ও আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। 

কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান এ.কে.এম বাশারুল আলম বাদশা বলেন, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে ওই পরিবার প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে। এলাকাবাসীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তারা নিজেরা কোটিপতি হচ্ছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে তাদের কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা না করে আর কোনো ওয়াজ মাহফিল তারা আয়োজন করতে পারবেন না। 

এ বিষয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, এখনও তাঁর কাছে এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা’ মানে ট্রাম্পকে মানো
  • হজম ক্ষমতা বাড়াতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • ব্রাজিল, রিয়াল মাদ্রিদ, আনচেলত্তি ও ক্লপ—কে কার
  • ছয় মাসে কী অর্থনৈতিক সংস্কার করা হয়েছে, প্রশ্ন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের
  • গরমে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে উপকারী যেসব ফল 
  • মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে প্রতারণার ফাঁদ