দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দেশেই আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেন। কানাডাও পার পায়নি ট্রাম্পের শুল্ক রোষানল থেকে। তবে এখন নতুন গাড়ি আমদানি শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডা শিগগিরই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। 

বুধবার অন্টারিওর কিচেনারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কার্নি জানান, বৃহস্পতিবার একটি উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রিসভা বৈঠক ডাকা হয়েছে, যেখানে প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। খবর: রয়টার্সের

তিনি বলেন, ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ "একটি সরাসরি আক্রমণ" এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তিনি আরও জানান, আমরা আমাদের কর্মীদের রক্ষা করব, আমাদের কোম্পানিগুলোকে রক্ষা করব, আমাদের দেশকে রক্ষা করব এবং আমরা এটি একসঙ্গে করব।

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে উত্তর আমেরিকার সমন্বিত অটো শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে, কানাডা ইতোমধ্যেই ১৫৫ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের পাল্টা শুল্ক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে প্রতিক্রিয়া কখন আসবে, এমন প্রশ্নের জবাবে কার্নি বলেন, "খুব শিগগিরই .

.. আমাদের হাতে একাধিক বিকল্প রয়েছে। আমরা পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারি," তবে বিস্তারিত জানাননি।

তিনি আরও বলেন, নন-ট্যারিফ পদক্ষেপ, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, একটি সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে।

এদিকে, অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডগ ফোর্ড বলেছেন, "আমরা নিশ্চিত করব যে, আমেরিকানদের ওপর যতটা সম্ভব চাপ সৃষ্টি করা যায়, তবে সেটা যেন কানাডার জনগণের ওপর প্রভাব না ফেলে।"

ফোর্ড জানান, তিনি শিগগিরই কানাডার অন্যান্য প্রদেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং একটি সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করবেন।

ফোর্ড আরও বলেন, আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা - হয় আমরা চুপচাপ বসে থাকব এবং ১৫ বার আমাদের ওপর দিয়ে চলবে, অথবা আমরা কিছুটা কষ্ট স্বীকার করব কিন্তু লড়াই করব। আমি লড়াইয়ের পক্ষেই, কারণ আমি বিশ্বাস করি লড়াই করাই সঠিক পথ।

অন্টারিও কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ, দেশের বৃহত্তম অটোমোবাইল শিল্পের কেন্দ্রস্থল। এই শুল্কের ফলে সেখানে ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ