ভালুক হিংস্র প্রাণী। জঙ্গল থেকে হুট করে কোনো বুনো ভালুক বাড়ির আঙিনায় এলে সেটা খুব ভয়েরই বটে। একগুঁয়ে এই প্রাণীকে বাড়ির আঙিনা থেকে তাড়াতে কত কসরতই না করতে হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের এক বাসিন্দা ভালুক তাড়াতে যে কৌশল নিয়েছেন, তা অভিনবই বটে।
নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশভিলের ওই বাসিন্দা ভালুক তাড়াতে নিজেই পরে নেন ভালুকের পোশাক। কালো ভালুকের মুখোমুখি বাদামি ভালুক।
বাড়ির ভেতর থেকে বিশাল এক দুই পায়ের বাদামি ভালুককে বের হতে দেখে জঙ্গল থেকে আসা কালো ভালুকটি খানিকটা থমকে যায়, কিছুক্ষণ স্থির চোখে তাকিয়ে থাকে। এরপর বসা থেকে উঠে পড়ে, খানিক তাকিয়ে থেকে জঙ্গলের দিকে দৌড় দেয়।
সত্যিকারের ভালুকের সঙ্গে মানুষ ভালুকের মুখোমুখি হওয়ার সেই দৃশ্যের ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বাদামি ভালুকটি হাত-পা নেড়ে কালো ভালুকটিকে ভয় দেখিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করছে। কালো ভালুকটি ভয় পেয়ে পেছনে ঘুরে জঙ্গলের দিকে দৌড়ও দেয়। তবে একগুঁয়ে ভালুকটি আবার ফিরে আসে।
বাদামি ভালুকটি আবার হাত-পা নেড়ে সেটিকে তাড়িয়ে দেয়, আবার সেটি ফিরে আসে। এভাবে কয়েকবার চলার পর অ্যাশভিলের ওই ব্যক্তি খানিকটা দুঃসাহস দেখান। বাদামি ভালুক সেজে গুটি গুটি পায়ে তিনি বাড়ির আঙিনায় নেমে আসেন, কালো ভালুকের দিকে হাত-পা নেড়ে এগিয়ে যেতে থাকেন।
এভাবে কয়েকবারের চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত সফল হন অ্যাশভিলের ওই ব্যক্তি। ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় কালো ভালুকটি।
এর আগে গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে একটি কালো ভালুক ও সেটির শাবক একটি গাড়ির ভেতর কোনোভাবে ঢুকে আটকা পড়েছিল। পরে গাড়ি ভেঙে সেগুলো বেরিয়ে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামাঞ্চলে মাঝেমধ্যেই জঙ্গল থেকে বুনো ভালুক লোকালয়ে চলে আসে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘শিগগিরই বিয়ে হবে, যদি দেন সালামি’
ইফতারের পর শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিয়ে মাত্রই ফোন স্ক্রল করতে শুরু করেছি। হুট করে একটা খবরের ফটোকার্ডে চোখ আটকে গেল। তাতে বড় হরফে লেখা ‘সালামি চেয়ে বারবার বিরক্ত করায় জুনিয়রকে পেটালেন সিনিয়র!’ দেখে মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। এ কেমন নিষ্ঠুরতা! কিন্তু একটু পরই বুঝলাম, ফটোকার্ডটি ভুয়া। কেউ হয়তো মজা করার জন্য বানিয়েছে। ক্যাম্পাসের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে সালামি নিয়ে এমন আরও নানা রঙ্গ-রসিকতাই হয়। কয়েকটা মজার ঘটনা কুড়িয়ে এনেছি আপনাদের জন্য।
শিগগিরই বিয়ে হবে, যদি দেন সালামিযাঁদের বিয়ে হচ্ছে না বা যাঁরা বিয়ের বয়স হলেও বাড়িতে বলতে পারছেন না, তাঁরা মন খুলে (পড়ুন ‘হাত খুলে’) সালামি দিন এবার। কেননা, আশিক নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গত বছর এক ভাই আমাকে সালামি দিয়েছিল, এই বছর সে বউ নিয়ে ঘুরছে। দেখেন যা ভালো মনে করেন!’ তো, আশিক ভাইয়ের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, দেখেন যা ভালো মনে করেন...
‘সালামি না দিলে বন্ধু…’কোক স্টুডিও বাংলা সিজন টু-তে প্রকাশিত হয়েছিল ‘কথা কইয়ো না’ শিরোনামের একটি গান। ২০২৩ সালে প্রকাশিত গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন আরফান মৃধা ও আলেয়া বেগম। তখন থেকেই জনপ্রিয় গানটি অনেকের মুখে মুখে ফেরে। রোশনি নামের একজন এই গানেরই ‘দেখা না দিলে বন্ধু, কথা কইয়ো না’ অংশ জুড়ে দিয়ে একটি মজার ভিডিও বানিয়েছেন। ভিডিওতে গানের সঙ্গে ভেসে ওঠে লেখা—‘ঈদের সালামি না দিলে বন্ধু কথা কইয়ো না।’
উচ্চতা বেশি হলে সালামি পাওয়া যাবেফেসবুকে মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী পোস্ট করেছেন, ‘যাঁদের উচ্চতা আমার থেকে বেশি শুধু তাঁদেরই সালামি দেব।’ ঈদের সময় জুনিয়রদের পক্ষ থেকে বেশ ‘চাপ’ আসে সালামি দেওয়ার জন্য। সেই চাপে পড়ে সিনিয়রদের ভুগতেও হয় বেশ। মিজানুরের মতো চাইলে আপনিও এভাবে শর্ত জুড়ে দিতে পারেন।
হয় সালামি, নয় বয়কট!ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিহাব ফেসবুকে সিনিয়রদের রীতিমতো হুমকিই দিয়ে বসেছেন। মজা করে তিনি লিখেছেন, ‘যেসব সিনিয়ররা এ বছর ঈদে আমাকে সালামি দেবেন না, তারা এই পোস্টে রিঅ্যাক্ট দেন। চিনে রাখি আপনাদের। পরে বয়কট করতে সুবিধা হবে।’ সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, শিহাবের সিনিয়ররা এই পোস্ট দেখার পর মহা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলি, বয়কটের শিকার না হতে চাইলে সালামি দেওয়াই হয়তো ভালো!
ফোন নম্বর বলে দেবে আপনি কত সালামি পাবেনআরেক শিক্ষার্থী জয়নাল উদ্দিন সালামি দেওয়ার নতুন এক ফর্মুলা আবিষ্কার করেছেন। লিখেছেন, ‘ফোন নম্বরের লাস্ট দুই অঙ্কের যোগফল দিয়ে আপনার ঈদ সালামি নির্ধারণ করা হবে। কে কত পাবেন?’ অভিনব এই ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য জয়নালকে কোনো পুরস্কার দেওয়া যা কি না, সে চিন্তা আপনাদের ওপরে ছেড়ে দিলাম।
শুধু ছবি থাকলেই মিলবে সালামিসালামি চাইলেই হবে না, থাকতে হবে ছবি—এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন এক শিক্ষার্থী। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘যাঁদের সঙ্গে আমার ছবি আছে, সেসব জুনিয়ররাই সালামি চাইবেন।’
প্রতিবছর দুই ঈদের আগে সালামি নিয়ে ফেসবুক পাড়ায় এমন মজার মজার পোস্ট দেখা যায়। সালামি না দিলে ‘সিনিয়রদের বয়কট করতে চাওয়া’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সামসুল আলমের কাছে তার ফেসবুক পোস্ট সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি হেসে বললেন, ‘মজা করেই পোস্টটি দিয়েছি। সালামি পাওয়া জুনিয়রদের অধিকার। বৈষম্যহীন সমাজে আমাদের এই অধিকার হরণ হতে পারে না!’ সামসুল আলমের জুনিয়ররাও একই দাবি করে বসলে তাঁর বক্তব্য কী হবে, তা অবশ্য জানা হয়নি।
আরও পড়ুনবিবিএ নিয়ে ৬ ভুল ধারণা০৪ আগস্ট ২০২২