বিপিএলে এটি ছিল লিটন দাসের ১০০তম ম্যাচ। মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচটা তাঁর হতে পারত। কারণ লিটনের হয়ে বোর্ড সভাপতি, নির্বাচক, সতীর্থেরা সবাই কথা বললেও কথা বলছিল না তাঁর গোমড়া ব্যাট।

অবশেষে সেই ব্যাট আজ কথা বলল, হাসি ফোটাল লিটনের মুখে। কিন্তু দিন শেষে তাঁর সেই হাসি কেড়ে নিল ঘরের মাঠে পাওয়া সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম জয়।

সিলেটের মাঠে সিলেট স্ট্রাইকার্স এর আগেও খেলেছে দুটি ম্যাচ। হেরেছে দুটিতেই। সিলেটের প্রতি ম্যাচেই গ্যালারি ভরিয়ে তোলা স্থানীয় দর্শকেরা দুই ম্যাচেই ঘরে ফিরেছেন হতাশা নিয়ে। তবে আজ রাতটা এলো ব্যতিক্রম হয়ে।

এবারের বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম জয়োৎসব হলো সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেই। ৩ উইকেটে জিতে এখনো জয়ের মুখ না দেখা ঢাকা ক্যাপিটালসকে তারা ‘উপহার’ দিল টানা ষষ্ঠ হার।

ম্যাচের শুরুটা ছিল লিটনের ফিরে আসার বার্তা দিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের হাহাকারে ভরা তাঁর সাম্প্রতিক ফর্মটা না হয় একটু ভুলেই থাকুন। শুধু এই বিপিএলের খাতাটা নাড়চাড়া করলেই দেখবেন কী প্রবল রান খরা ছিল সেখানে! আজকের আগে চার ম্যাচে করেছেন ৩১, ০, ২ আর ৯।

লিটনের মতো ব্যাটসম্যানের রান এরকম হলে চলে! লিটনের চাই বড় শট, বড় ইনিংস। তাহলেই না ব্যাটিংটা শিল্প হয়ে ফোটে তাঁর ব্যাটে। যে শিল্পী তুলি হাতে নিয়েও ছবি আঁকেন না, তিনি আবার শিল্পী কীসের!

যাই হোক, লিটন অবশেষে ছবি আঁকলেন। তবে ২৯ বলে ফিফটি পূর্ণ করা ৪৩ বলে ৭৩ রানের ইনিংসটাকে ছবি বলবেন নাকি বলবেন উপভোগ্য এক শর্ট ফিল্ম, সেটি আপনার সিদ্ধান্ত। লিটনের কাজ ছিল ভালো একটা ইনিংস খেলে রানে ফেরা। লিটন তা করেছেন। যাঁকে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি দলের সম্ভাব্য অধিনায়ক ভাবা হচ্ছে, ম্যাচের পর ম্যাচ দু–চার বল খেলেই মাথা নত করে তাঁর ড্রেসিংরুমে ফেরার দৃশ্য আর নেওয়া যাচ্ছিল না।

সঙ্গী ওপেনার তানজিদ হাসানকে প্রথম ওভারেই হারিয়েছিলেন লিটন। ঢাকাকে এরপর আর খুব বেশি পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের ইনিংসে। দ্বিতীয় উইকেটে তিনে নামা মুনিম শাহরিয়ারের সঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় লিটনের ১২৯ রানের জুটি, এর আগে পাওয়ার প্লেতেই আসে ৫৬।

রাকিম কর্নওয়ালের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারের তৃতীয় বলে লিটন এলবিডব্লু হলে সেটি। এক ছক্কা আর ১০ বাউন্ডারি ছিল লিটনের ইনিংসে। ৪৭ বলে ৫২ রান করা মুনিমকেও ওই ওভারেরই পঞ্চম বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন কর্নওয়াল।

ঢাকার রান দ্রুত বাড়িয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এরপর নেন পরশু চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ৩৩ বলে অপরাজিত ৮২ রানের ঝড় তোলা সাব্বির রহমান। আজও সাব্বির ছিলেন ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের মানসিকতায়। ১০ বলে ২৩ রান করতে মেরেছেন তিন ছক্কা। আউট হওয়ার আগে অধিনায়ক থিসারা পেরেরার সঙ্গে ১৭ বলেই গড়ে ফেলেন ৪১ রানের জুটি। ওই ধাক্কায় শেষ ৫ ওভারে ঢাকার রান ৬১, এর মধ্যে আল–আমিনের করা ১৮তম ওভারেই এসেছে ২২।

ঢাকার ৬ উইকেটে করা ১৯৩ রান সিলেট টপকাতে পারবে বলে মনে হচ্ছিল না ইনিংসের শুরুর দিকে। ওপরের দিকের পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনে নামা জাকির হাসান (২৭ বলে ৫৮ রান) ছাড়া সবাই ব্যর্থ।

কিন্তু রনি তালুকদার, জাকের আলী আর অধিনায়ক আরিফুল হকের লড়াই শেষ পর্যন্ত বৃথা যায়নি। বিশেষ করে আরিফুলের ১৫ বলে অপরাজিত ২৮–ই শেষ দিকে আসল কাজটা করে দিয়েছে। বিপিএলে লিটনের ১০০তম ম্যাচে তাঁর ব্যাটের হাসি কেড়ে নিয়ে ৮ বল বাকি থাকতেই প্রথম জয়ের দেখা পেয়ে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক এমপি আনার হত্যার প্রতিবেদন ফের পেছাল

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৭ মে ধার্য করেছেন আদালত।

সোমবার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা এদিন প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলাম প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন এদিন ধার্য করেন।

মামলায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা হলেন, সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া, সিলিস্তি রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবু, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। তাদের মধ্যে মিন্টু ছাড়া ছয়জনই দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার পাঁচদিন পর ২০২৪ সালের ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের এ সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পার্শ্ববর্তী নিউটাউন এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনস নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।

এ ঘটনায় একই বছরের ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার এজাহারে এমপির ছোট মেয়ে ডরিন উল্লেখ করেন, ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সংসদ সদস্য ভবনের বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর ১১ মে ৪টা ৪৫ মিনিটে বাবার সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইলফোনে একাধিকবার ফোন দিলে বন্ধ পাই। এরপর ১৩ মে আমার বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা ছিল- আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি আছে। আমি অমিত শাহের কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেবো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমার ব্রেনে এই শহরে কোনো কাজ হয়নি: কেসিসির পরিকল্পনা কর্মকর্তা
  • তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
  • চিত্রনায়িকা শাবানা হঠাৎ কেন দেশ ছেড়েছিলেন, এখন কেমন আছেন
  • মানুষই মানুষের কর্মকাণ্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • মানুষই মানুষের কর্মকান্ডে শিউরে ওঠে : আফজাল হোসেন 
  • চিন্তা যেভাবে ইবাদত হয়ে ওঠে
  • ভ্যাটিকান থেকে ওড়া ধোঁয়ায় কীভাবে বোঝা যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন
  • ট্রেনে যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রী
  • শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন
  • সাবেক এমপি আনার হত্যার প্রতিবেদন ফের পেছাল