বিদেশে উচ্চশিক্ষায় গিয়ে ছুটি শেষে ফিরে না আসায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। ছুটি শেষে কয়েক দফা চিঠি দিয়ে শিক্ষকতায় যোগদানের আহ্বান করা হলেও তারা সাড়া না দেওয়ায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জানানো হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকরা হলেন- শান্তনু দেব বর্মণ ও রিফাত দারিনা কামাল। শান্তনু দেব বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আর রিফাত দারিনা লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শান্তনু দেব ২০১৭ সালের মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নের জন্য কানাডায় যান। তার ছুটির মেয়াদ ছিল ওই বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরে বিনাবেতনের শর্তে এই ছুটি আরও এক বছর মঞ্জুর করেছিল প্রশাসন। পরে গত বছর ১৩ এপ্রিল এক মাসের মধ্যে শিক্ষকতায় যোগদান করতে চিঠি দিয়েছিল তৎকালীন প্রশাসন। এরপর এই বিষয়ে গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর ও চলতি বছর ২ জানুয়ারিতেও দুদফা চিঠি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও তাকে শিক্ষকতায় যোগদানের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু শান্তনু দেব বর্মণ যোগদান করেননি।
অন্যদিকে রিফাত দারিনা কামালও ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ছুটি নিয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে অংশ নিতে কানাডায় গিয়েছিলেন। তার ছুটির মেয়াদ ২০২২ সালের জুলাইয়ে শেষ হয়। তাকেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিনবার চিঠি দিয়ে শিক্ষকতায় যোগদান করার জন্য আহ্বান জানায়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও তাকে শিক্ষকতায় যোগদান করতে আহ্বান করা হয়। জবাব না পাওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ক ষকত
এছাড়াও পড়ুন:
চবির শাটলে সিনিয়রকে জুনিয়রদের হামলা, বিচার দাবি
তুচ্ছ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে এক সিনিয়রের ওপর জুনিয়রদের হামলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে এ বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভংকর দে।
আরো পড়ুন:
অপহৃত শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে গোপন স্থানে ডেকেছে অপহরণকারীরা
খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণ
অভিযুক্তরা হলেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের (আইএমএল) রোহান তাহিন, সোহেল ও মামুনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আমরা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তুচ্ছ ঘটনায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের শাটলে আমাদের শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভংকর দে এর সঙ্গে চবির আইএমলএল বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তর্ক শুরু হয়। এর একপর্যায়ে শুভংকরের ওপর ওই শিক্ষাবর্ষের রোহান তাহিন, সোহেল, মো. মামুনসহ কয়েকজন মিলে বর্বরোচিত হামলা করে এবং শাটল থেকে মারধর করে নামিয়ে দেয়।”
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। বর্তমানে তার চলমান চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাও অনিশ্চিত। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আসাদ নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, “শাটলে সিটে বসার পর পায়ের সঙ্গে পা লাগা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এটি নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভাইটি কথা কাটাকাটির মাঝে জুনিয়র ছেলেকে তীব্রভাবে বল প্রয়োগ করলে জুনিয়র ছেলেটিও পাল্টা বলপ্রয়োগ করে। এরপর জুনিয়র ছেলেটির কিছু সহপাঠী এসে সিনিয়র ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়। এর মধ্যে দুইজন ছেলে খুবই আক্রমণাত্মক ছিল।”
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “আমাদের কাছে আজ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেন।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী