টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি ভর্তুকিমূল্যে দেওয়া বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র কৃষকদের মাঝে বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে এসব যন্ত্র দেওয়া হয়েছে প্রভাবশালী ব্যক্তি, দালালদের। এ জন্য কৃষি কর্মকর্তাকে প্রতিটি যন্ত্রের জন্য দিতে হয় অর্থ। আর এসব কিছুর মূলে রয়েছেন খোদ মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল। এমন পরিস্থিতিতে বিতরণ হওয়া বেশিরভাগ যন্ত্রের হদিসও মিলছে না। 

জানা গেছে, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় হাওর অঞ্চলে ৭০ শতাংশ এবং সমতল অঞ্চলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে সরকারি অর্থায়নে সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয় প্রায় ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি। কিন্তু সরেজমিনে মাঠ পর্যায়ে এর বেশির ভাগ মেশিনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

কৃষি যন্ত্রপাতি লাপাত্তা হওয়ার পেছনে মূল হোতা মির্জাপুর উপজেলা কৃষি অফিসের সাবেক কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার পাল। তার সঙ্গে রয়েছেন উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হালিম ও নৈশপ্রহরী অরুণ কুমার সরকার।

সংশ্লিষ্ট নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে সরকার থেকে ২১টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দেওয়া হয়। কিন্তু বিতরণ করা হয় মাত্র ছয়টি। এসব যন্ত্রের মূল্য ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে ২টি রিপার বাইন্ডার, ১৫টি বেড প্লান্টার, ২৪টি পাওয়ার থ্রেসার, ৩টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ২টি পাওয়ার টিলার চালিত সিতার, ১টি মেইজ শেলার এবং ২টি পাওয়ার উইডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব যন্ত্র বিতরণ করা হয়নি। কিন্তু সব মিলিয়ে ২ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়। এছাড়া সুবিধাভোগী কৃষক হিসেবে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তারা অনেকেই কৃষক নন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কৃষিযন্ত্র সরবরাহের আগেই কৃষকের সঙ্গে কৃষি অধিদপ্তরের একটি চুক্তিপত্র করতে হয়। ওই চুক্তিপত্রে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ তিনজন এবং কৃষকের পক্ষে তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষরের পর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে মেশিন সরবরাহ করার কথা।

কম্বাইন্ড হারভেস্টার বিতরণে অনিয়ম বড় ধরনের। একটি মেশিনে দুই লাখ থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকি দেয় সরকার। কৃষি কর্মকর্তা তার পছন্দের কৃষক নির্বাচন করে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তা কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে ডাউন পেমেন্ট ৮ লাখ টাকা দিয়ে মেশিন এনে কৃষককে বুঝিয়ে দেন। কৃষকের প্রাপ্তি স্বীকার নিয়ে কোম্পানি সরকারের ভর্তুকির টাকা আবেদন করে আদায় করে থাকে। এরপরে কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে ওই মেশিন বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেন দুই পক্ষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কৃষি কর্মকর্তা জানান, যারা মেশিনের জন্য আবেদন করেন তাদের মেশিন দেওয়া হয় ঠিকই। কিন্তু কেউ মেশিন নিয়ে কাজে লাগান আবার কোম্পানির লোকজন এই মেশিন দিয়ে ব্যবসা করেন। 

ভর্তুকিমূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য এসিআই মোটরস লিমিটেড, আদি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, মেটাল অ্যাগ্রিটেক লিমিটেড, বাংলা মার্ক, এসকিউ অ্যাগ্রিকালচার লিমিটেড ও কৃষিবিদ অ্যাগ্রিকালচার লিমিটেডসহ ৩৪ কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর এসব কোম্পানির সঙ্গে কৃষকরা চুক্তি করার আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিভিন্ন কোম্পানির লোকদের সঙ্গে দেন-দরবার শুরু করেন কে কত দেবেন। যে বেশি টাকা দেবে সেই কোম্পানির মেশিনই সরবরাহ করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের মাঝে কৃষিযন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কোনো রকম অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। অনেক কৃষক যন্ত্র বরাদ্দ পেয়ে বিক্রি করে দিতে পারেন। ফলে অনেক যন্ত্র হয়তো মাঠে নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র জ প র উপজ ল কর মকর ত ক ষকদ র সরবর হ ভর ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী ওয়াসায় চাকরি, বেতনের সঙ্গে রয়েছে গাড়ি সুবিধা

রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (রাজশাহী ওয়াসা) জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে তিন বছর মেয়াদে চুক্তির ভিত্তিতে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে।

পদের নাম: ব্যবস্থাপনা পরিচালক

পদসংখ্যা: ১

আরও পড়ুনপল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনে বড় নিয়োগ, পদ ১৩৩০২৫ মার্চ ২০২৫

যোগ্যতা: ন্যূনতম স্নাতকোত্তর বা বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) বা সমমানের ডিগ্রি। সরকারি/আধা সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত আছেন বা ছিলেন, এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর ন্যূনপক্ষে তৃতীয় গ্রেড স্কেল বা সমপর্যায়ের স্কেলধারী হতে হবে। অবশ্যই পানি সরবরাহ, পানি ব্যবস্থাপনা ও পয়োনিষ্কাশন খাতে ২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।

বয়স: অনূর্ধ্ব ৬০ বছর।

চাকরির ধরন: তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক

বেতন-ভাতা: আলোচনা সাপেক্ষে

সুযোগ-সুবিধা: প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য চালক-জ্বালানিসহ একটি গাড়ি, আবাসিক টেলিফোন, মুঠোফোন ও তার বিল ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ প্রদান করবে।

আরও পড়ুনচীনে আইইএলটিএস ছাড়াই স্কলারশিপে মাস্টার্স-পিএইচডির সুযোগ২৭ মার্চ ২০২৫আবেদন যেভাবে

আগ্রহী প্রার্থীদের বিস্তারিত বিবরণসংবলিত নিজের জীবনবৃত্তান্তসহ আহ্বায়ক, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, রাজশাহী ওয়াসা বরাবর আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।

আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সদস্যসচিব, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, রাজশাহী, বাসা নম্বর ২৮৪, সেক্টর ২, হাউজিং এস্টেট, উপশহর রাজশাহী-৬২০২।

আবেদনপত্র পাঠানোর শেষ সময়

২৪ এপ্রিল ২০২৫, বেলা তিনটা পর্যন্ত।

আরও পড়ুনব্র্যাকে খণ্ডকালীন চাকরি, বেতনের সঙ্গে উৎসব বোনাস, স্বাস্থ্যবিমাসহ নানা সুবিধা২৬ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদুল ফিতরে ঢাকায় গরুর মাংসের বাজার ৩২০ কোটি টাকার
  • ধান-চালের দাম বাড়ার পেছনে যত কারণ 
  • দেশের বাজারে বাড়লেও এশিয়ার বাজারে কমছে চালের দাম
  • রাজশাহী ওয়াসায় চাকরি, বেতনের সঙ্গে রয়েছে গাড়ি সুবিধা
  • লিটারে ১৮ টাকা দাম বাড়াতে চান আমদানিকারকরা
  • ইইউ নাগরিকদের ৭২ ঘণ্টার রসদ মজুত রাখার পরামর্শ
  • কেজিতে ২০০ টাকা ছাড়াল ব্রয়লার মুরগির দাম
  • বাংলাদেশে পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে আদানি
  • বাংলাদেশে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে আদানি