কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রবাসী যুবক গ্রেপ্তার
Published: 27th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সৌদি প্রবাসী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর (১৩) মা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত যুবক মো. শান্তকে (২৫) গ্রেপ্তারের পর গতকাল বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। শান্ত উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগী কিশোরী তার আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে প্রতিবেশী এক মেয়েকে দিয়ে শান্ত তাঁর ঘরে ডেকে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে শান্ত কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় কিশোরী চিৎকার দিলে শান্তর মা ঘরে এসে কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় বিকেলে কিশোরীর মা সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ নাজিরপুর এলাকা থেকে শান্তকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার দুপুরে মামলা করে শান্তকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায় পুলিশ। পাশাপাশি ওই কিশোরীকে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য হাজির করা হয়।
মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনায় শান্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল হাসান খান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণচেষ্টা প্রমাণিত হওয়ায় মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই কিশোরীকেও জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে হাজির করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।
কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো. জুয়েল (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডারে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।
জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।
রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।
তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’
জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।