একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই
Published: 26th, March 2025 GMT
একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ আর নেই। বুধবার বিকেলে সিলেট নগরীতে নিজ বাসায় তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে সুষমা দাশের মেজো ছেলে প্রবীর দাশ বলেন, ‘মা বেশ কিছু দিন থেকে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। নগরীর হাওলাদার পাড়ার নিজ বাসভবনে ছিলেন তিনি।’
সুষমা দাশের বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। চার ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। লোকসংগীতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদক পাওয়া প্রবীণ এই শিল্পীর মৃত্যুতে সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেল ও সন্ধ্যায় শিল্পীর বাসায় ভিড় করেন অনুরাগীরা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন সুষমা দাশ। গত ১৩ মার্চ গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান। এর পর অবস্থার অবনতি হলে বাসাতেই রাখা হয়েছিল। সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেরার চাকুয়ায় গ্রামের বাড়িতে সুষমা দাশের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম, বাউল দুর্বিন শাহ, আলী হোসেন সরকার, কামাল পাশাসহ বাংলাদেশের প্রবীণ শিল্পীদের সঙ্গে গান করেছেন সুষমা দাশ। লোকসংগীতের এই সাধক শিল্পী একুশে পদক ছাড়াও অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি রবীন্দ্রপদক-২০১৯, কলকাতা বাউল ফকির উৎসব সম্মাননা-১৪১৭, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সম্মাননা, লালন শাহ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, জেলা শিল্পকলা একাডেমি গুণীজন সম্মাননা ২০১৫, বাংলাদেশ বেতার গুণীজন সম্মাননা পান।
খ্যাতনামা লোককবি রশিকলাল দাশ ও লোককবি দিব্যময়ী দাশের বড় সন্তান সুষমা দাশ। তিনি ১৯২৯ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার পেরুয়া গ্রামে জন্ম নেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় সুষমা দাশ। তাঁর ছোট ভাই একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত রামকানাই দাশ ছিলেন শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এক শ পদক
এছাড়াও পড়ুন:
যেভাবে ঈদ উৎসব উদ্যাপন শুরু হয়েছিল
দুনিয়া জুড়ে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। এর একটি ঈদুল ফিতর, আর অন্যটি ঈদুল আজহা, যাকে কোরবানির ঈদও বলা হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরা সবচেয়ে বড় উৎসব হিসেবে বিবেচনা করেন ঈদুল ফিতরকে এবং এক কথায় সবার কাছে পরিচিত ঈদ হিসেবে।
ঈদ ইসলামের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলেও ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু ঈদের প্রচলন শুরু হয়নি। মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর ঈদের প্রবর্তন হয়। তিনি মদিনায় পৌঁছে দেখতে পান যে ইহুদিরা নওরোজ উৎসব ও মেহেরজান উৎসব উদ্যাপন করছে। মদিনার জনসাধারণও তাদের সঙ্গে উৎসবে যোগদান করছে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, এ দুটি কিসের দিন? তারা বলল, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিন খেলাধুলা ইত্যাদি উৎসব পালন করতাম। এ নিয়মই চলে আসছে।
আরও পড়ুনঈদ যেভাবে এল১১ এপ্রিল ২০২৪মহানবী (সা.) মুসলমানদের এ দুটি উৎসব পালন করতে নিষেধ করেন এবং বলেন, মহান আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুটির পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। তা হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। (নাসায়ি, হাদিস: ১,৫৫৬, আবু দাউদ, হাদিস: ১,১৩৪)
মদিনায় প্রথম ঈদ
ঈদের নামাজ প্রবর্তিত হওয়ার সময় সম্পর্কে দুটি অভিমত পাওয়া যায়-প্রথমত, আদ-দুররুল মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে প্রথম হিজরিতে ঈদের নামাজের বিধান প্রবর্তিত হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, বেশির ভাগ আলেমের মতে, দ্বিতীয় হিজরিতে তার বিধান প্রবর্তিত হয়। কেননা, দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে রোজা ফরজ হয়। মুসলমানরা মদিনায় প্রথম ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ে দ্বিতীয় হিজরি মোতাবেক ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ বা ৩১ মার্চ। (আনওয়ারুল মিশকাত: ৩/৬০৫; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৫/৫৪)
ঈদ উদ্যাপন মদিনায় শুরু হলেও পরবর্তীতে পুরো দুনিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচলিত হয়ে যায় ঈদ পালন। কালক্রমে অঞ্চল ভেদে এই উৎসবে ভিন্ন ভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা যুক্ত হয়।
আরও পড়ুনঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ম১০ এপ্রিল ২০২৪প্রথম যুগের ঈদ
তখনকার ঈদে বর্তমান ঈদের মতো নতুন জামাকাপড়, কেনাকাটার ধুমধাম ছিল না। তবে আনন্দ-খুশি কম ছিল না। মহানবী (সা.) ঈদের দিন ছোট-বড় সবার আনন্দের প্রতি খেয়াল করতেন। মদিনার ছোট ছোট শিশু-কিশোরের সঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) আনন্দ করতেন। শরিয়তের অন্তর্ভুক্ত সব আনন্দ করার অনুমতি দিতেন।
মুসলমানদের জন্য ঈদ পালন ওয়াজিব অর্থাৎ অবশ্য পালনীয়। ঈদের দিন সকালে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা, যা সব মুসলমানের জন্য অবশ্য পালনীয়। এ ছাড়া ঈদুল ফিতরে ফিতরা প্রদান করাও একটি অবশ্য পালনীয় রীতি। ফিতরা ঈদের নামাজের আগে অসহায় গরিব-দুঃখীদের দিতে হয়।
যখন প্রথম ঈদের প্রচলন চালু হয়, তখন ঈদের নামাজের পর মিষ্টি দ্রব্য খাওয়া এবং আত্মীয় পরিজন, প্রতিবেশী বন্ধুদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের রেওয়াজ ছিল।
আরও পড়ুনমক্কার পর পবিত্রতম শহর মদিনা২৯ জানুয়ারি ২০২৩