গাইবান্ধায় সাংবাদিককে দাপট দেখালেন শিক্ষিকা
Published: 26th, March 2025 GMT
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার অশালীন আচরণের শিকার হয়েছেন স্থানীয় একজন সাংবাদিক।
বুধবার ((২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে এক ফাঁকে প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার মিলির কাছে অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন মেজাজ হারান; সাংবাদিকদের ‘তুই, তোকারি’ করে লাঞ্চিত করার হুমকি দিতে থাকেন তিনি।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা যায় শিক্ষিকা মিলির মুখোমুখি ছিলেন সাংবাদিক মামুনুর রশীদ। এক পর্যায়ে মামুনুর রশীদকে হুমকি দিতে দেখা যায়; তাকে জুতা পেটা করার হুমকি দেওয়া হয়।
রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আসা ভিডিওতে অন্য সাংবাদিকদের দেখা যায়নি। তবে শিক্ষিকা মিলি শুধু মামুনুর রশীদের দিকেই নন, তাদের কাছাকাছি আরো কয়েকজনের উদ্দেশে অশালীন বাক্য ছুড়ছিলেন।
মামুনুর রশীদের দাবি, “নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন তিনি। এক পর্যায়ে গালিগালাজসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে মারাপিট করার হুমকিও দেন তিনি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা মিলি বলছেন, তুই এখান থেকে যা, তোকে আমি স্যান্ডেল খুল মারব। যদি ভালো চাস এখান থেকে যা। অপমান আরো করব আমি। স্যান্ডেল খুলে মারব।”
তখন মামুনুর রশীদ বলেন, আপনি আমাকে মের দেখান দেখি। মারেন, হিট মি।”
শিক্ষিকা মিলি বলেন, “লেট মি, তুই এখান থেকে যা।”
এরপর স্কুল ভবনের প্রবেশ গেটের গ্রিলের ওপার থেকে মামুনুর রশীদকে আবার অশালীন ভাষায় আক্রমণ করেন ফাতেম আক্তার মিলি। তিনি বলেন, তোর মতো মামুনের স্যান্ডেল দিয়ে মুখ ফাঁটাব আমি।”
তখন মামুন বলেন, আপনি যদি আমার একটা চুল ছিড়তে পারেন, তাহলে… আপনার মতো ফাতেমাকে আমি গুনি না; আপনি তো মহিলা বলে বেঁচে গেলেন।”
মামুনুর রশীদ দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সাংবাদিক। ঘটনার পর কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ বলেন, “আমি এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করব।”
অভিভাবক ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মামুনুর রশীদ বলছেন, তার কাছে অভিযোগ রয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর খোঁজ ছিল না প্রধান শিক্ষিকা মিলির। এমন কী ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারিতে পতাকা উত্তোলন করেননি তিনি।
মামুনুর রশীদের বলছেন, সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিলি সুন্দরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের শ্যালিকা। তার দুলাভাইয়ের দাপটে চলতেন তিনি। অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মন্ডল বলেন, একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এত নোংরা ভাষায় কথা বলাটা দুঃখজনক। আমি সামনে থেকে যা দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে, উনি কোনোভাবেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্য না।
নুরুজ্জামান নামে আরেক অবিভাবক বলেন, এই প্রধান শিক্ষকের প্রতিষ্ঠানে আমার বাবা নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরি শেষের দিকে এলে এনআইডি কার্ডে বয়সের ভুল ধরে বেতন বন্ধ করে দেন।
“আমার বাবা আব্দুর রহমান মারা গেছেন চার বছর হলো অথচ এখনো তিনি (প্রধান শিক্ষিকা) বেতন উত্তোলনে কোনো ব্যবস্থাই নেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হয়নি,” অভিযোগ নুরুজ্জামানের।
ঘটনার ভিডিও হাতে আসার পর প্রধান শিক্ষিকা মিলির বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে কলা দিলে তিনি তা কেটে দেন। ফলে তার বক্তব্য নিতে পারেনি রাইজিংবিডি ডটকম।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে এমন আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। অবশ্যই তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ব্যাখ্যা চাইব। আর তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আছে, সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
ঢাকা/লুমেন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হলান্ড, এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস—কার বেতন বেশি
লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যখন ইউরোপের ফুটবলে খেলেছেন, তাঁরাই ছিলেন মূলত শীর্ষ বেতনের ফুটবলার। মেসি মার্কিন মুলুকে আর রোনালদো মরুর দেশ সৌদি আরবে পাড়ি জমানোর পর ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের কোনটাতে কে সবচেয়ে বেশি বেতনের খেলোয়াড়—এমন প্রশ্ন ফুটবলপ্রেমীদের মনে উঁকি দেয়। নিজস্ব সূত্র ব্যবহার করে এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে ফরাসি পত্রিকা লেকিপ। সেখানে উঠে এসেছে শীর্ষ পাঁচ লিগে কোন খেলোয়াড় বেশি বেতন পাচ্ছেন।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগঅনুমিতভাবেই ইংল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি বেতনের খেলোয়াড়টি ম্যানচেস্টার সিটির। আর এটা যে দলটির নরওয়েজিয়ান গোলমেশিন আর্লিং হলান্ডই হবেন, সেটাও মনে হয় অনেকেই অনুমান করে থাকবেন। এ তালিকার দ্বিতীয় খেলোয়াড়ও ম্যান সিটির বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনা।
লা লিগাস্বাভাবিকভাবেই লা লিগার শীর্ষ বেতন পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদের আধিপত্য। তালিকার প্রথম দুটি নাম যথাক্রমে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ছয়জনের মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের আরও দুজন আছেন। একজন বার্সেলোনার, একজন আতলেতিকো মাদ্রিদের।
সিরি আএখানেও খুব একটা ব্যতিক্রম নেই। শীর্ষ বেতনের খেলোয়াড়দের তালিকার প্রথম পাঁচে বড় ক্লাবগুলোরই আধিপত্য। তবে সর্বোচ্চ তিনজন আছেন ইন্টার মিলান থেকে।
ফ্রেঞ্চ লিগ আঁফরাসি লিগে পিএসজিই যে সবচেয়ে বেশি বেতন দেবে, এটা ধরেই নেওয়া যায়। কিন্তু তালিকার শীর্ষ পাঁচে যে আর কোনো ক্লাবের খেলোয়াড় থাকবেনই না, এটা অনুমান করা সত্যি যে কারও জন্যই একটু হলেও কঠিন।
বুন্দেসলিগাফ্রেঞ্চ লিগ আঁর মতো জার্মান বুন্দেসলিগায় একচ্ছত্র আধিপত্য বায়ার্ন মিউনিখের। শীর্ষ পাঁচে অন্য কোনো ক্লাবের কেউ নেই।
পাঁচ লিগ মিলিয়েপাঁচ লিগ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি বেতনের তালিকা করলে সেখানে আবার লা লিগার আধিপত্য। শীর্ষ ছয়ের তিনজনই স্পেনের ক্লাবগুলোর। এর মধ্যে দুজন রিয়াল মাদ্রিদের, একজন বার্সেলোনার।