মহান স্বাধীনতা দিবসে পূজা পরিষদের দিনব্যাপী কর্মসূচি
Published: 26th, March 2025 GMT
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতা দিবসের র্যালি করে চাষাঢ়া বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন এবং চাষাঢ়া গোপাল জিওর মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন। প্রার্থনা সভায় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বীর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
বুধবার ( ২৬ মার্চ) সকাল ১১ টায় জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়া বিজয়স্তম্ভে এসে শেষ হয়। এরপর বিজয়স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণ করেন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক শঙ্কর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ-সভাপতি সাংবাদিক উত্তম সাহা, হিমাদ্রি সাহা হিমু, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা দাস, যুগ্ম সম্পাদক পঙ্কজ রায়, শংকর রায় বন্দর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য্য প্রমুখ।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, বন্দর, রুপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁসহ বিভিন্ন থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ডে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।
কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো. জুয়েল (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডারে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।
জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।
রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।
তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’
জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।