ধনী-গরিব সবাই মিলে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চাই : মামুন মাহমুদ
Published: 26th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, আমরা ধনী-গরিব সবাই মিলে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে চাই। সমাজের যারা দানশীল ও স্বচ্ছল ব্যক্তি আছেন, দরিদ্রদের সাহায্যে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসা।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে পাইনাদি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দরিদ্রদের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, তেল, সেমাই ও চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
আয়োজক গাজী মনির হোসেন বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। অসহায় মানুষের পাশে থাকতে পারাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী মনির হোসেনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, মহানগর যুবদলের সদস্য জুয়েল রানা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, নাসিক ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরউদ্দিন নুরু, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজু, মুয়াজ হোসেন মানিক, এনামুল হক পিন্টু, জসিম উদ্দিন, সাকের আহমেদ সোহান, সেলিম, জাবেদ, মাহাবুর রহমান মিলন, গাজী সোহান, আরিফ উল্লাহ, আবু নাইম মন্টু, আকবর হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ঈদ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।
কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো. জুয়েল (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডারে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।
জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।
রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।
তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’
জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।