Prothomalo:
2025-03-29@17:24:33 GMT

রমজানকে বিদায় জানাব কীভাবে

Published: 26th, March 2025 GMT

আমরা বিদায় জানাতে যাচ্ছি মাহে রমজানকে। কোরআন, তাকওয়া, ধৈর্য ও জিহাদে বরকতময় মাসটি চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কি প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পেরেছি? আমরা কি সর্ব-প্রকার জিহাদে নিজেদের অভ্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছি? পূর্ণরূপে রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তি লাভের উপযোগী আমল করার চেষ্টা করেছি?

রমজানের শিক্ষা কতটুকু নিয়েছি

মাহে রমজান একটি ইমানি পাঠশালা, সারা বছরের পাথেয় উপার্জন, পরকালে আল্লাহর সামনে হাজিরা দিতে নিজেকে প্রস্তুত করার রুহানি প্রতিষ্ঠান। যে ব্যক্তি মাহে রমজানে নিজেকে সংশোধন করতে পারেনি—সে কখন জীবন গঠন করবে? আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই পর্যন্ত কোন জাতির পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের পরিবর্তন করে নেয়। (সুরা রাদ, আয়াত: ১১)

দুঃখের বিষয় হলো, আমরা রমজানে আল্লাহর সঙ্গে যে ওয়াদা করেছি তা ভঙ্গ করার অনেক চিত্র সমাজে ফুটে উঠছে। ইদের আগেই জামাতে লোকসংখ্যা কমে যাচ্ছে। তারাবির সুন্নত নামাজের সমান মুসল্লিও এখন ফরজ নামাজে নেই।

আরও পড়ুন  যেমন ছিল মহানবীর (সা.

) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫

কীভাবে বিদায় জানাব রমজানকে

ইবাদত কবুল হওয়ার আলামত হলো, পূর্ববর্তী অবস্থার চেয়ে বর্তমান অবস্থা আরও উন্নত হওয়া। প্রকৃত রোজাদার রোজার শেষে যেমন আনন্দিত হবে এবং রোজা পূর্ণ করার তৌফিক পাওয়ার দরুন প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে; সঙ্গে সঙ্গে এই ভয়েও কাঁদবে যে, না জানি আমার রোজা কবুল হয়নি। আমাদের পূর্বসূরিগণ মাহে রমজানের পর ছয় মাস পর্যন্ত আল্লাহর দরবারে কেঁদে কেঁদে রোজা কবুল হওয়ার দোয়া করতেন। হাদিসে আছে, ‘মুমিনগণ এ-মাসকে বিদায় জানায় তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে। আর মোনাফেকরা বিদায় জানায় বিভিন্ন জঘন্য অপরাধের মাধ্যমে।’ (মুসনাদে আহমাদ, ২/৫২৪; বাইহাকি, সুনানুল কুবরা, ৪/৩০৪ ও শুয়াবুল ইমান, হাদিস: ৩,৩৩৫)

আরও পড়ুন  যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫

রমজান কোনো বন্দিত্ব নয়

যারা শুধু রমজান মাসে আল্লাহর ইবাদত করে, রমজান শেষে হওয়ামাত্র অপরাধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তারা নিতান্ত মন্দ লোক। যারা সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে চেনে তারা সব সময় তাকে ভয় করে। মোনাফেকরাই লোকদেখানো ইবাদত করে। তাই রমজান তাদের জন্য বন্দী-জীবনের মতো অসহ্য। তাই রাসুল (সা.) শপথ করে বলেছেন, মুসলমানদের জন্য উৎকৃষ্টতম মাস রমজান। আর প্রতারকদের জন্য নিকৃষ্টতম মাস রমজান। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১,৮৮৪)

আরও পড়ুনমহানবীর (সা.) ইতিকাফ২০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে আতঙ্কের নাম শুটার রিয়াজ বাহিনী, গুলিবিদ্ধ পথচারীর মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবীকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে যুবদল নেতা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে শুটার রিয়াজ ও তার বাহিনীর হামলার সময় করা গুলিতে আহত পথচারী জাফর আলীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। 

শনিবার রাতে বিষয়টি রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত জাফর আলী পূর্ণ নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। 

যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী শুটার রিয়াজ দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে একটি গাড়ী কেনার জন্য ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। 

দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১ লা মার্চ শনিবার রাত ৯ টার দিকে রিয়াজের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় শফিকুলের বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় শফিকের বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় জাফর আলী নামে এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়। 

পরে আহত জাফর আলীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শফিকুল ইসলাম শফিক বাদী হয়ে রিয়াজসহ তার বাহিনীর সদস্যদের আসামী করে মামলা দায়ের করে।

২৯ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধনীন থাকা অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যার দিকে জাফর আলীর মৃত্যু হয়। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রূপগঞ্জের সাধারণ মানুষের জন্য শুটার রিয়াজ এক আতঙ্কের নাম। রিয়াজ চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই যে সে না করে। এসকল অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রিয়াজের রয়েছে নিজস্ব বাহিনী।

আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তাকে শেল্টার দিতো আওয়ামীলীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর বিএনপির স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতার শেল্টারে রিয়াজ ও তার বাহিনীর সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। 

এদিকে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটিলিয়ন (র‌্যাব) সূত্রমতে, রিয়াজের নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী দল এলাকার বালু ভরাট ও মাটি কাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাক প্রতি নির্ধারিত হারে চাঁদা নিয়ে থাকে। চাঁদা না দিলে ত্রাস সৃষ্টির জন্য হামলা, আক্রমণ ও আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।

নারায়ণগঞ্জ এলাকায় অবৈধভাবে জমি দখলের জন্য সে ভাড়ায় তার দল নিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত। এছাড়া বাড়ি বা বিল্ডিং করার সময় চাঁদা না দিলে গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ভুলতা এলাকায় বাসেও ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে তারা।

তাছাড়াও সে উঠতি বয়সের ছেলেদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করার মাধ্যমে তাদেরকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত করেছে। এসব অপকর্মের কারণে আগেও তারা গ্রেপ্তার হয়। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। এ চক্রের ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। 

শুটার রিয়াজ অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে তারই বড় ভাই আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শওকতের হাত ধরে। তখন সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে শওকত নিহত হয়। এছাড়া তার আরেক ভাই রয়েছে মোহাম্মদ আলী। সে সন্ত্রাসী। পারিবারিকভাবেই সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত তারা। 

রিয়াজের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সে ভাড়ায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে আসছিল। অস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে রিয়াজের বিরুদ্ধে। হত্যাচেষ্টা, মাদকসহ দেড় ডজনের ও বেশী মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, কর্ণগোপ এলাকায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ জাফর আলী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত শুটার রিয়াজকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ