ভারতে বাংলাদেশিকে হেনস্তা ও ফেরত পাঠানোর অভিযোগ
Published: 26th, March 2025 GMT
ভারতের চ্যাংড়াবান্ধায় এক বাংলাদেশি যাত্রীকে হেনস্তা করে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে কাস্টমস কর্মকর্তার ইন্ধনে কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারী এ হেনস্তা করেন। স্থানটি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের ওপারে অবস্থিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আজাদুর রহমান ঢাকার পল্লবীর বাসিন্দা। তাঁর ছেলে ভারতের দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং এলাকার একটি বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। তিনি ছেলেকে আনতে সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বুড়িমারী স্থলবন্দরে আসেন। ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতের চ্যাংড়াবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনে যান। কোনো দালাল না ধরে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এক কাস্টমস কর্মকর্তার কাছে যান। কাস্টমস কর্মকর্তা মানি এক্সচেঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ডলার বিনিময় করতে বলেন। আজাদ পছন্দ মতো প্রতিষ্ঠানে ডলার বিনিময় করবেন বলে কাস্টমস কর্মকর্তাকে জানান। এ কথা বলায় ওই কর্মকর্তা কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারীকে আজাদের পেছনে লেলিয়ে দেন।
আজাদ অন্য প্রতিষ্ঠানে মুদ্রা বিনিময় করে গাড়িতে উঠতে গেলে কয়েকজন চালক ও মানি এক্সচেঞ্জ কর্মচারী গাড়িতে উঠতে বাধা দেন। এ সময় আজাদের সঙ্গে থাকা ট্রাভেল ব্যাগ মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেন। তাঁকে হেঁটে যেতে বলেন। তিনি সড়কে চলাচলরত অটোতে এবং পরে বাসে উঠতে চাইলে বাধা দেন। প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে ট্রাফিক পুলিশের শরণাপন্ন হন। মেখলিগঞ্জ থানা ও চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন পুলিশকে ডেকে আনেন ভারতীয়রা। ওই কর্মচারীরা আজাদকে ঘিরে গাোগাল করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আজাদকে পুলিশ মেখলিগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। পুলিশের গাড়িতে চ্যাংড়াবান্ধায় ফেরত পাঠায়। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা বাতিল করে তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা তুলে ধরেন আজাদ।
এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়িতে ওঠা নিয়ে চালকের সঙ্গে বিতর্ক হয়। ভারত নিয়ে আপত্তিকর কথা বলায় স্থানীয়রা উত্তেজিত হয় বলে শুনেছি।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির অস্পস্টতা দূর করতে নতুন প্রজ্ঞাপন
ভারতের সুতা আমদানি বন্ধের প্রজ্ঞাপনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন ব্যাখ্যা অনুসারে, গত ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির জন্য যাঁরা ঋণপত্র খুলেছেন, তাঁরা আগের মতো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সুতার চালান খালাস করতে পারবেন। এমনকি ১৩ এপ্রিল বা এর আগে যাঁরা এ–সংক্রান্ত ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, তাঁরাও একই সুবিধা পাবেন।
গতকাল বুধবার এনবিআর এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে।
আগে গত ১৩ এপ্রিল আরেক প্রজ্ঞাপনে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে এনবিআর। যাঁরা ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ঋণপত্র খুলেছিলেন, তাঁরা কী করবেন—এ নিয়ে মাঠপর্যায়ের অস্পষ্টতা দূর করতে নতুন ব্যাখ্যা দিল এনবিআরের শুল্ক বিভাগ।
এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যেসব আমদানিকারক ১৩ এপ্রিল বা তার পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র স্থাপন করেছেন বা উক্ত তারিখের পূর্বে সুতা আমদানির ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, সেসব ঋণপত্রের পণ্য চালান উক্ত প্রজ্ঞাপনের (১৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন) আওতায় পড়বে না।
স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার দাবি দীর্ঘদিন করেছেন দেশীয় স্পিনিং মিলমালিকেরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস আগে সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। অবশ্য এই অনুরোধ করার আগে বিটিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল ট্যারিফ কমিশন।
ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইলশিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্ত–সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।