সুন্দরবনে আগুন লেগে সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত
Published: 26th, March 2025 GMT
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের দুই এলাকার অগ্নিকাণ্ডে সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন বনের দেড় একর এবং ধানসাগর টহল ফাঁড়ির তেইশের ছিলা এলকার ৪ দশমিক শূন্য ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, ঘটনাস্থলে এখন আগুন নেই। আগুন সম্পূর্ণরূপে নির্বাপণ হয়ে গেছে। তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য জোয়ারের সময় পানি ছিটানো হচ্ছে। আগামীকালও পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর ফায়ার আউট ঘোষণা করা হবে।
আরো পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনের আগুন, চলছে তল্লাশি
সুন্দরবনের আগুন নেভাতে জোয়ারের অপেক্ষা
তিনি আরো জানান, পরপর দুটি এলাকায় আগুন ধরার কারণে নির্বাপণের কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। দুটি স্থান ড্রোন ও জিপিএসের মাধ্যমে মনিটরিং করা হয়েছে। আপতত সাড়ে ৫ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জিপিএসের মাধ্যমে পরিমাপ করা হয়েছে। এছাড়া আগুন লাগার বিষয়ে দুটি ঘটনায় আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। তখন ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।
শনিবার (২২ মার্চ) সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী বন টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন বনে আগুন লাগে। রাতভর চেষ্টায় রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে সেই আগুন নেভাতে সক্ষম হয় বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সুপ্ত আগুন ও ধোঁয়ার কুন্ডলী খুঁজতে বন বিভাগ ড্রোন ব্যবহার করে। তখন কলমতেজী এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেইশের ছিলা-শাপলার বিলে আগুনের অস্তিস্ত দেখতে পায় বন বিভাগ। সেই আগুনে সুন্দরবন পুড়েছে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। অবশেষে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বুধবার (২৬ মার্চ) ও বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ওই এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখবে বন বিভাগ। এ সময়ে পানিও ছেটানো হবে বনের মধ্যে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন দরবন আগ ন ৫ একর বনভ ম স ন দরবন প বন ব ভ গ
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন পথনকশায় ১৪ মাসে ৬১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে
গ্যাসের সিস্টেম লস (কারিগরি ত্রুটি) কমাতে পথনকশা তৈরি করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ৭টি গ্যাস কোম্পানিকে ২০২৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত সিস্টেম লস কমানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে এ বিভাগ। বিভাগটি বলেছে, কোম্পানিগুলোকে এ সময়ের মধ্যে কমপক্ষে অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনতে হবে গ্যাসের সিস্টেম লস। কাজটি না পারলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ভোগ করতে হবে শাস্তি।
সচিবালয়ে আজ বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ পথনকশা চূড়ান্ত করা হয়। জ্বালানিসচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে পরিমাণ সিস্টেম লস হয়, তার আর্থিক মূল্য ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। আগামী বছরের জুনের মধ্যে পথনকশা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সিস্টেম লস অর্ধেকে নেমে এলে অন্তত ৫০ কোটি মার্কিন ডলার সাশ্রয় হবে। বর্তমান বাজার মূল্যে এর পরিমাণ ৬১ হাজার কোটি টাকা।
দেশীয় কোম্পানি, আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও চট্টগ্রামের মহেশখালীতে থাকা দুই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল থেকে মিটারিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হয় গ্যাস ট্রান্সমিশন পিএলসি লিমিটেডে (জিটিসিএল)।
জিটিসিএল পরে মিটারিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে ছয় কোম্পানিকে। এগুলো হচ্ছে তিতাস, বাখরাবাদ, কর্ণফুলী, জালালাবাদ, সুন্দরবন ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি। এসব কোম্পানিই পরে গ্যাস সরবরাহ করে গ্রাহকদের। সিস্টেম লসের মধ্যে তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাসেরই বেশি, যা সুন্দরবন গ্যাস ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসের নেই বললেই চলে।
এখন থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে কোন কোম্পানি কোন মাসে সিস্টেম লস কতটা নামিয়ে আনবে, তা বেঁধে দেওয়া হয়েছে পথনকশায়। পথনকশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, তিন মাস পর তা আবার খতিয়ে দেখবেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
তিতাস গ্যাসের গত জানুয়ারি মাসে সিস্টেম লস ছিল ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে কোম্পানিটিকে এ হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশে এবং ডিসেম্বরে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। একইভাবে বাখরাবাদের জানুয়ারিতে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ সিস্টেম লস থাকলেও আগামী বছরের জানুয়ারি ও ডিসেম্বরেও কোম্পানিটিকে এ হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
পথনকশায় সিস্টেম লস কমিয়ে আনার ব্যাপারে তিতাসের ৩৯১ ও বাখরাবাদের ১৩৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী গ্যাসে ২০০, জালালাবাদে ৬৪ এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাসে ৩৬ জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সিস্টেম লস কমাতে সাতটি ভিজিল্যান্স দল গঠন করা হয়েছে। অবৈধ বিতরণ পাইপলাইন অপসারণ, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং বিচ্ছিন্ন করার পর এগুলো আবার পুনঃস্থাপিত হয়েছে কি না, সেগুলো সরেজমিন দেখবে দলগুলো। পুনঃস্থাপনের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো ঠিকাদার জড়িত কি না, তা–ও চিহ্নিত করা হবে।
সূত্রগুলো জানায়, গত ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ২ মাসে ৭০ কিলোমিটার অবৈধ পাইপলাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। আর অবৈধ আবাসিক বার্নার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার। এ সময় ৯৬টি মোবাইল কোর্টসহ ও ১ হাজার ১৮৮টি মোবাইল কোর্ট ছাড়া অভিযান করা হয়েছে।