প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবার আগে ভারত সফরে যেতে চাইলেও দেশটি থেকে সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার ভারতের ‘দ্য হিন্দু’কে তিনি বলেন, ‘চীন সফর চূড়ান্ত করার অনেক আগে ড. ইউনূস ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। গত ডিসেম্বরে ভারতকে বার্তা পাঠানো হলেও দুঃখের বিষয়, তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।’

চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার চীন পৌঁছেছেন ড.

ইউনূস। এ সফরে তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা চান বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য করে তুলুক চীন। বিশেষ করে উৎপাদন শিল্পে।’

গত চার মাসের মধ্যে ড. ইউনূস দ্বিতীয় সরকারপ্রধান, যিনি দক্ষিণ এশিয়া থেকে চীন সফর করছেন। গত ডিসেম্বরে চার দিনের সফরে চীন গিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা। চীন থেকে ফিরে ড. ইউনূস ব্যাংককে যাবেন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে।

আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল সে সম্মেলনে ড. ইউনূস চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে। প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেক দিন আগেই ইচ্ছা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে বার্তা দিয়েছে। কিন্তু বৈঠক নিয়ে ভারত এখনও কিছু জানায়নি।’

তিনি বলেন, ‘সফরে চীনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন। তিনি বাংলাদেশকে ব্যবসাবান্ধব দেশ হিসেবে পরিচিত করাতে চান। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান, যাতে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহী হন। বহু দেশ নানা কারণে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কিত। বাংলাদেশ সে সুযোগ গ্রহণ করতে চায়। চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।’

গত বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ হয়। ওয়াং ই সেই সময় ড. ইউনূসকে ‘চীনের পুরোনো বন্ধু’ আখ্যা দেন। প্রধান উপদেষ্টাও চীনকে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্যানেল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ার ‘গ্রোথ ইঞ্জিন’ হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চান। ড. ইউনূস বলেছেন, কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূসকে মালয়েশিয়াও দ্বিপক্ষীয় সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

স্বজনদের ঈদ উপহার দিতে যাচ্ছিলেন, সড়কে গেল তিন ভাইয়ের প্রাণ

ঢাকা থেকে নিয়ে আসা ঈদ উপহার মোটরসাইকেলে স্বজনদের পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তিন ভাই। তবে পথেই শেষ হয়ে গেছে সব। ঢাকাগামী রাজিব পরিবহন নামে একটি বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পিরোজপুরের পাথরঘাটা উপজেলার সোনারবাংলা নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার ও চালকের সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

নিহতরা হলেন মঠবাড়িয়া উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়নের বাইশকুরা গ্রামের নাসির উদ্দিন খানের ছেলে নাঈমুজ্জামান খান শুভ (২২), শান্ত খান (১৪) ও নাদিম খান (৮)। রাজমিস্ত্রী নাসির ও শিউলি বেগম দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে দেড় বছর বয়সী ছেলে হাসান ২০২৩ সালের রমজান মাসে পানিতে ডুবে মারা যায়। এবার সড়ক দুর্ঘটনায় বাকি তিন ছেলের মৃত্যু হলো। 

তিন ছেলে হারানোর শোকে বাড়ির ওঠানে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মা শিউলি বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। হায় আমার সন্তান কোথায় পাব। 

নিহত শুভর ফুফাতো ভাই রিফাত মোল্লা বলেন, তিনি ও তাঁর মামাতো ভাই সাভারের একটি গার্মেন্টসে কাজ করেন। শুক্রবার ছুটি পেয়ে রাত সাড়ে ৯টায় শুভ সায়েদাবাদ থেকে গাড়িতে উঠে ভোররাতে নানাবাড়ি পৌঁছায়। সকালে দুর্ঘটনার খবর পাই। 

এদিকে লক্ষ্মীপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে বাসচাপায় জুথী আক্তার ও তাঁর দেড় বছর বয়সী ছেলে সিয়াম নিহত হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার কাচারিবাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সদর উপজেলার জব্বার মাস্টারহাট এলাকার কুয়েত প্রবাসী শরীফের স্ত্রী জুথী ও তাঁর ছেলে সিয়াম। 

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ঈদে বাড়িতে এসে বাসচাপায় সুমাইয়া (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের আহসানমারা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। সুমাইয়া উপজেলার জয়কলস নোয়াগাঁও গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের মেয়ে। 

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আজ ঈগল পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে মো. করিম (৪৫) নামে চালকের সহকারীর মৃত্যু হয়েছে। করিম চন্দনাইশ উপজেলার দক্ষিণ হাসিমপুর গ্রামের মো. হাসানের ছেলে। 

ফরিদপুরের মধুখালীতে আজ নওপাড়া বাইপাস সড়কের কাছে বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী রোমান মোল্লা (২৮) গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার রিদয়পুর গ্রামের আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা)

সম্পর্কিত নিবন্ধ