আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।

সম্প্রতি নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ঈদে আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। ২৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হলগুলো বন্ধ থাকবে। ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় হল খুলে দেওয়া হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ১৭টি আবাসিক হল আছে। ২০২২ সাল থেকে ঈদের ছুটিতে আবাসিক হলগুলো খোলা ছিল।

অবস্থান কর্মসূচিতে মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কুড়িগ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল আলম বলেন, এবার ঈদে তিনি বাড়ি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন প্রশাসন যদি বিকল্প ব্যবস্থা করত, তাহলে একটা কথা ছিল। তারা সেটিও করছে না। যদি এই ব্যবস্থা না করে, শিক্ষার্থীরাই যদি না থাকতে পারে, তাহলে ক্যাম্পাস একেবারে জনশূন্য করতে হবে।

মতিহার হলের আরেক শিক্ষার্থী সুমন রায়। তাঁর বাড়ি পঞ্চগড়। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। আমি এখানেই থেকে যাব। যাওয়ার কোনো উপায় নেই। হলে থাকতে না পারলে ক্যাম্পাসে এত জায়গার মধ্যে কোথাও থাকতে হবে।’ তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আমরা কেন থাকতে পারব না? তারা বলছে, নিরাপত্তার কারণে হল বন্ধ করা হচ্ছে। আমরা যে হলের মধ্যে এখনো ৩০ জনের বেশি আছি। তারা তো কোনো খোঁজখবর নিচ্ছে না। তারা নিরাপত্তার জন্য হল বন্ধ করবে কেন? তারা নিরাপত্তার ব্যর্থতা দেখাবে কেন?’

পটুয়াখালীর বাসিন্দা ও নবাব আব্দুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো.

ইমরান হোসাইন বলেন, ‘আমার ঈদের পর ৮ এপ্রিল থেকে স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষা রয়েছে। এখন পড়াশোনার ব্যাপার আছে, পরীক্ষার ব্যাপারও আছে। আবার আর্থিক সমস্যাও আছে। এখানে ঈদের সময়ে বিদেশি শিক্ষার্থী থাকছেন, শিক্ষক–কর্মকর্তারা কোয়ার্টারে থাকছেন। তাঁদের নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই। ঝুঁকি শুধু আমাদের আছে। এই অজুহাতে হল বন্ধ করা যাবে না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে ছাত্রলীগ অনেক অপকর্ম করেছে। শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে। তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ছিল। তখন যদি তারা হলে থাকতে পারে, এখন কেন শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবে না? হল খোলা রাখতে হবে। তাঁরা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেও এখানে অবস্থান করেছেন। আজ দ্বিতীয় দিনের মতো এখানে অবস্থান করছেন। যদি আগামীকাল হল বন্ধ করে দেয়, তাহলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিছানাপত্র নিয়ে এসে অবস্থান করতে হবে। তা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

এদিকে সন্ধ্যায় ইফতারের আগে শিক্ষার্থীদের কাছে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান আসেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে শিক্ষার্থীরা ইফতারের আগে উঠে যান।

এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা রাকিব হোসেন বলেন, প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক, প্রক্টরসহ বেশ কয়েকজন এসেছিলেন তাঁদের কাছে। প্রশাসনের বক্তব্য হচ্ছে, তারা কয়েক দিনের জন্য হল বন্ধ রাখবে। তাঁরা এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা তাঁদের কর্মসূচি আগামীকালও চালিয়ে যাবেন।

প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলেই হল বন্ধের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থী আছেন। তাঁরাও আগামীকাল চলে যাবেন। তিনি বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থী আজ প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি সেখানে গিয়ে কথা বলেছেন। পরে তাঁরা চলে যান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হল খ ল ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

সেরা বাংলাবিদ হলেন চট্টগ্রামের অভিষেক

বাংলা ভাষা নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় মেধাভিত্তিক টিভি রিয়ালিটি শো ‘ইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ’–এর ষষ্ঠ বর্ষের বিজয়ী হলেন চট্টগ্রামের অভিষেক দাশ।

আজ রাতে রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জমকালো আয়োজনে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। ইস্পাহানি মির্জাপুরের উদ্যোগ, পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠপোষকতায় শোটি আয়োজন করা হয়।

মহোৎসব ও চূড়ান্ত পর্বে সেরা বাংলাবিদ হিসেবে ১০ লাখ টাকার মেধাবৃত্তি জিতে নিয়েছেন অভিষেক দাশ। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন ঢাকার রিফা তাসনিয়া। তিনি পেয়েছেন তিন লাখ টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী চট্টগ্রামের রশ্মি তুলতুল চৌধুরী পেয়েছেন দুই লাখ টাকার মেধাবৃত্তি।

এ ছাড়া প্রথম ১০ জন প্রতিযোগীর প্রত্যেকে পেয়েছেন একটি করে ল্যাপটপসহ ব্যক্তিগত লাইব্রেরি করার জন্য ৫০ হাজার টাকা সমমূল্যের বাংলা বই ও বইয়ের আলমারি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইস্পাহানি টি লিমিটেড জানিয়েছে, নতুন প্রজন্মের কাছে শুদ্ধ বাংলা, বানান ও ব্যবহার ছড়িয়ে দিতে ইস্পাহানি মির্জাপুর প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যবহার, বানানচর্চা, শুদ্ধ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন পর্যায় শেষে চূড়ান্ত প্রতিযোগীদের নির্ধারণ করা হয়।

প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও ভাষাবিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। প্রধান বিচারক হিসেবে বাংলাবিদে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও ভাষাবিদ তারিক মনজুর, কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ত্রপা মজুমদার। অতিথি বিচারক হিসেবে বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক মহোৎসবে উপস্থিত ছিলেন।

মহোৎসবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি লিমিটেডের ডিরেক্টর জাহিদা ইস্পাহানি, ইমাদ ইস্পাহানি ও মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি টি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান এবং চ্যানেল আই ও ইস্পাহানির অন্য কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুনইস্পাহানি মির্জাপুর বাংলাবিদ ষষ্ঠ বর্ষের মহোৎসব শুক্রবার১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ