চীন সফরে অনুদানের চেয়ে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে বেশি গুরুত্ব দিন: প্রধান উপদেষ্টাকে ইসলামী আন্দোলন
Published: 26th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বুধবার দুপুরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনে এটিই তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। এ সফরের বিশেষ গুরুত্ব তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বলেছে, ভারত যেভাবে বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান নিয়েছে এবং বিশ্বরাজনীতিতে বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তা প্রতিরোধে চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। চীন সফরে অনুদানের চেয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরিতে বেশি গুরুত্ব দিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর উপলক্ষে আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদ।
বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামী আন্দোলন বলেছে, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন আত্মমর্যাদাশীল দেশ। সম্মান-মর্যাদা ও অধিকারের জন্য লড়াইয়ের এক ঐতিহাসিক দিনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান চীন সফরে যাচ্ছেন। বিদ্যমান বাস্তবতায় এ সফরের বিশেষ গুরুত্ব তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, এ সফরে অনুদানের চেয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপরে বেশি গুরুত্ব দিন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যিক দ্বৈরথে যেসব চীনা কোম্পানি চীনের বাইরে তাদের কারখানা সরিয়ে নিচ্ছে, বাংলাদেশ হতে পারে তাদের উত্তম গন্তব্য। কারণ, বাংলাদেশের রয়েছে বিপুলসংখ্যক কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, যারা শিক্ষিত এবং অল্প কিছু প্রশিক্ষণ পেলে যারা দক্ষ হয়ে উঠবে। এ বিষয়টি চীন সরকার ও চীনা উদ্যোক্তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, ‘এবারের সফর ভূরাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত যেভাবে বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান নিয়েছে এবং বিশ্বরাজনীতিতে বাংলাদেশবিরোধী অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তা প্রতিরোধে চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে আমাদের সামরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামরিক-বেসামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তর আমাদের উভয়ের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। এই বিষয়টিও এবারের সফরে তুলে আনতে হবে। চীন আমাদের বহুদিনের উন্নয়ন সহযোগী। দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। এখন চিকিৎসা ও ব্যবসা নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে আন্তযোগাযোগ যাতে আরও বৃদ্ধি করা যায়, সেই উপায় খুঁজতে হবে এবারের সফরে।’
বিজ্ঞপ্তিতে ইউনুস আহমেদ চীনের উইঘুর মুসলিমদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিয়ে আমরা আনন্দিত। কিন্তু চীনের উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে সে দেশের সরকারের আচরণ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানদের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তার ধারাবাহিকতায় উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে চীন সরকার উষ্ণ ও সম্মানজনক সম্পর্ক গড়ে তুলবে, এই প্রত্যাশা আমরা করি। উইঘুর মুসলিমদের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা চীন সরকারকে অবহিত করার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান থাকবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ন সফর আম দ র র জন ত সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাজেট বরাদ্দে অগ্রাধিকার দিতে হবে
বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর বাজেট প্রণয়ন নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্দেশে বুধবার এক পরিপত্র জারি করে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়, এমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন তা মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যেই হয়। এছাড়া সাধারণভাবে বাজেটে কোনো প্রকার থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না।
এতে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির আওতাভুক্ত সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন এবং একইসঙ্গে পরবর্তী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাতে বলা হয়।
পরিপত্রে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে– মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, ‘রি-স্ট্রাটেজিসিং দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মবিলাইজিং রিসোর্সেস ফর ইক্যুয়িটেবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ক টাস্কফোর্স রিপোর্ট এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভূক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা।
এছাড়া সরকারের মৌলিক নীতি নির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বরাদ্দ দিতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
এতে আরও বলা হয়, উন্নয়ন ব্যয়ের বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের যে প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ তৈরি করেছে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।