কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব: লক্ষ্মীপুর যুবদলের ফরিদ উদ্দিনকে শোকজ
Published: 26th, March 2025 GMT
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম ফরিদ উদ্দিন সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকে নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করার অভিযোগে তাকে শোকজ করা হয়েছে। যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়নের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে লিখিতভাবে জবাব দিতে হবে। তিন দিনের মধ্যে তাকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) দুপুরে যুবদলের সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সদর (পশ্চিম), রায়পুর ও পৌর যুবদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ফরিদকে কারণ দর্শাতে হয় বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সহ দপ্তর সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকে ফরিদ উদ্দিন সংগঠনের নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। ঘটনাটি যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এতে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
সম্মেলন ছাড়াই গত ১ মার্চ লক্ষ্মীপুরে যুবদলের ১১টি শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঘোষিত কমিটির মধ্যে সদর উপজেলা (পশ্চিম) ও রায়পুর উপজেলা কমিটি নিয়ে যুবদলের একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন করে। ফরিদ উদ্দিন বিক্ষুব্ধ অংশকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও অন্য এক যুগ্ম আহ্বায়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘‘ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে সদর উপজেলা (পশ্চিম) ও রায়পুর উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এগুলো পকেট কমিটি। ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। আমি ত্যাগীদের পক্ষে আছি।’’
তাকে কারণ দর্শানোর বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে জানান ফরিদ উদ্দিন।
ঢাকা/লিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বদল র র উপজ ল কম ট র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বানর তাড়াতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে পা হারালেন কৃষক
বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চাকধালা সীমান্তে গতকাল শনিবার দুপুর একটার দিকে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আবদুস সালাম (৪২) নামের এক কৃষকের পা উড়ে গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
চাকধালা এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, গতকাল দুপুরে সীমান্তের ওপারের জঙ্গল থেকে আবদুস সালামের কলার বাগানে একপাল বানর ঢুকে পড়ে। বানরের পাল তাড়াতে তিনি শূন্যরেখা পার হয়ে মিয়ানমারের ভূখণ্ডে যান। সেখানে হঠাৎ মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তাঁর বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ উড়ে যায়। ডান পায়েও স্প্লিন্টারের আঘাত পেয়েছেন তিনি। তাঁর বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের ঘটনার পর লোকজন আবদুস সালামকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অংশে রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হওয়ার পর কোনো জনবসতি না থাকায় সেখান থেকে বন্য প্রাণীর পাল এসে উপদ্রব করে। বানর তাড়াতে গিয়ে আবদুস সালাম পা হারালেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক জানিয়েছেন, শূন্যরেখা থেকে ৩০০ মিটার মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আবদুস সালাম আহত হয়েছেন। মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা সে দেশের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) দখলে রয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, আরাকান আর্মি তাদের প্রতিপক্ষ রোহিঙ্গা দলগুলোকে বাধাগ্রস্ত করতে মাইন স্থাপন করেছে। নানা প্রয়োজনে সীমান্তের লোকজন সেখানে গেলে মাইন বিস্ফোরণের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে আট বছরে অন্তত ২০টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাকধালা ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আশারতলী সীমান্তে ১৫ জন পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এখনো চাকধালা আমতলী বাজার এলাকার আমির উদ্দিন (৩৫) নামের একজন নিখোঁজ রয়েছেন। মানুষ ছাড়াও কুকুর, গরু ও ছাগল মারা যাচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে বিতাড়নের পর থেকে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। ঘুমধুম, দোছড়ি ও সোনাইছড়ি—এই তিন ইউনিয়নসহ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৩৫ জনের অধিক মাইন বিস্ফোরণে পা হারিয়েছেন বলে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (চাকধালার বাসিন্দা) ফরিদুল আলম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।
ধারাবাহিক মাইন বিস্ফোরণ সম্পর্কে নাইক্ষ্যংছড়ির ওসি মাসরুরুল হক সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত তিন মাসে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয়জন সীমান্তবাসী পা হারিয়েছেন। এর আগের কতটি ঘটনা ঘটেছে এবং কতজন হতাহত হয়েছেন তা তাঁর জানা নেই।