সালমান খান ভুগছেন সুইসাইড ডিজিজে, জেনে নিন এ রোগ সম্পর্কে
Published: 26th, March 2025 GMT
আদতে এটা সে ধরনের কোনো মানসিক রোগ নয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে মুখের এক পাশে তীব্র ব্যথা হয়। এই ব্যথা কখনো কখনো হয়ে ওঠে রীতিমতো অসহনীয়। কথা বলা, হাসা, খাবার বা পানি খাওয়া, মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া, শেভ করা, দাঁত ব্রাশ করার সময় এই ব্যথা শুরু হতে পারে। এমনকি সামান্য বাতাসের ঝটকাতেও ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে। মেকআপ করার সময়ও শুরু হতে পারে ব্যথা। ভাবুন তো একবার, কী মুশকিল ব্যাপার।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহুবার ব্যথায় ভুগতে হতে পারে এই রোগে আক্রান্ত হলে। রোজকার স্বাভাবিক কাজের সময়ই যে ব্যথা শুরু হওয়ার ঝুঁকি থাকে, সে ব্যথায় ভুগতে থাকা মানুষটার জীবন কতটা বেদনাদায়ক! এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথার ধরন ভীষণ কষ্টদায়ক বলে কেউ কেউ একে সুইসাইড ডিজিজ বলে থাকেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া’। এমনটাই বলছিলেন স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের নিউরোমেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা.
রমা বিশ্বাস।
মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনো কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রইল। সেই চাপের কারণেই তীব্র ব্যথা অনুভব করেন রোগী। কোনো টিউমার যদি স্নায়ুটিকে চাপ দেয়, তাহলেও এমনটা হতে পারে। অন্যান্য কিছু স্নায়বিক রোগেও এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুননাফিস ইকবালের বিরল রোগ সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস, কেন হয়, সমাধান কী০৮ জুলাই ২০২৪কেন হয়, কাদের হয়কেন এই স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট কোনো জীবনপদ্ধতি এর জন্য দায়ী নয়। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
চিকিৎসা কীঘরোয়া প্রাথমিক চিকিৎসায় এই ব্যথা সারে না, বরং এর জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ওষুধ। জীবনধারায় কোনো পরিবর্তন এনে রোগের তীব্রতা কমানো সম্ভব হয় না। সুস্থ থাকতে তাই ওষুধ সেবন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। স্নায়ুর ব্যথা কমানোর ওষুধ কিন্তু সাধারণ ব্যথানাশকের চেয়ে আলাদা। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ আবশ্যক। সেসব ওষুধেও ব্যথা না সারলে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নিতে হতে পারে।
আরও পড়ুনতামিম ইকবাল ও সৌরভ গাঙ্গুলীদের মতো খেলোয়াড়দেরও কেন হার্ট অ্যাটাক হয়৭ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই র গ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত কুয়াকাটা, নেই কাঙ্খিত অগ্রিম বুকিং
‘সাগরকন্যা’ খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সারাবছরই দেশি-বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের আনাগোনা একটু বেশি দেখা যায়। এই ঈদেও কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নামবে- এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, তবে প্রতি বছরের তুলনায় অগ্রিম বুকিং কম হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের উন্নত সেবা দিতে হোটেল মোটেল ও রিসোর্টগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি আবাসিক হোটেল ধোয়া-মোছা, সাজসজ্জাসহ পরিপাটি করে রাখা হয়েছে। রেস্তোরাঁগুলো ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরির পূর্ব প্রস্তুতি সেরেছে। একসময়ে অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম ধরা হলেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পর্যটকে কম-বেশি ভরপুর ছিল থাকে কুয়াকাটা। তবে পুরো রমজান মাসে ৩০ কিলোমিটার সৈকতে একেবারেই ছিল পর্যটকশূন্য। মুক্ত সৈকতে বিচরণ করছে লাল কাঁকড়ার দল; আবার মাঝে মাঝে দেখা যায় পরিযায়ী পাখিদের ছোটাছুটি। ট্যুর অপারেটররা বলছেন, ঈদের পর যারা কুয়াকাটা ভ্রমণ করবেন, তারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ‘আসল রূপ’ দেখতে পাবে।
কুয়াকাটায় রাত্রিযাপনের জন্য ছোট-বড় ২০০টির বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে, যার ধারণক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার। তবে লম্বা ছুটির দিনগুলোতে লাখো পর্যটকের আগমন ঘটে এখানে। ফলে কিছুটা সংকট হতে পারে রাত্রিযাপনের রুমগুলোতে। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এই ঈদে ছুটি বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ছিল প্রতি বছরের চেয়ে পর্যটক বেশি হবে। কিন্তু অগ্রিম বুকিং পেলেও তা গত কয়েক বছরের চেয়ে কম। প্রতিবছর এমন সময়ে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ অগ্রিম বুকিং হয়ে যায় আর এ বছর গড়ে বুকিং মাত্র ৪০-৫০ শতাংশ; এমনটাই নিশ্চিত করেছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ।
হোটেল সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাসের এজিএম আল-আমিন আপন সমকালকে বলেন, ‘ঈদের পর আমরা ২০ শতাংশ ছাড় দিয়ে বুকিং নিয়েছি, যাতে পর্যটকরা কুয়াকাটার প্রতি বেশি আকৃষ্ট হন। এরই মধ্যে ৫০ শতাংশ কক্ষ আগাম ভাড়া হয়ে গেছে। আশা করছি, বাকি কক্ষ ঈদের পর বুকিং হয়ে যাবে, গত বছর এই সময়ে পরোপুরি বুকিং ছিল সেই তুলনায় কম। পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে ধোয়া-মোছাসহ নানা প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সৈকতের আচার দোকানি রাসেল রুম্মান বলেন, ‘রমজানে পর্যটক না থাকায় বিক্রি ছিল না। প্রতি বছরই ঈদের পর খুব ভালো বিক্রি করি। তবে এ বছর আরও বেশি হবে বলে আশা রাখছি। কারণ, এখন দেশের সব জেলার সঙ্গে কুয়াকাটার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই সহজ। তাই এক মাস কোনো বিক্রি না হলেও আমরা চিন্তিত নই। কারণ, আশায় আছি, খুব ভালো পর্যটক আসবে কুয়াকাটায়।’
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সেক্রেটারি জেনারেল জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যটক আসার সম্ভাবনা আছে। তবে যারা অগ্রিম বুকিং দিয়ে কুয়াকাটায় এ সময়ে আসবেন, তারা সাশ্রয়ীভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন।’
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম.এ মোতালেব শরীফ বলেন, ঈদকে ঘিরে অগ্রিম বুকিং পাচ্ছেন। তাই সব হোটেলকে নির্দেশ দেওয়া আছে, যাতে কেউ পর্যটকদের সঙ্গে প্রতারণা না করেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটকদের সমাগম হবে। এটাকে মাথায় রেখে তারা কাজ শুরু করছেন। বিভিন্ন স্থানে টহল, হোটেল-রেস্তোরাঁয় তদারকিসহ সার্বিক বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে তারা সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন।