সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট দেওয়ার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে তাঁকে সরাইল থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়েছে। এর আগে ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন ওই কর্মকর্তা। এরপর পুলিশি প্রহরায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

গত বছরের ২০ অক্টোবর সরাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন সিরাজুম মুনীরা কায়ছান। আজ সকালে ফেসবুকে ‘এসি ল্যান্ড সরাইল’ নামের সরকারি আইডি থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ স্বাধীন। এরপর শুরু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। কিন্তু এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ২৬ মার্চেই। তাই এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সংগ্রামের চেতনা এবং আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল।’

ওই পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর সকাল পৌনে আটটার দিকে তিনি সরাইলের অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে বিএনপির নেতাদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে পুলিশি পাহারায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। মাঠ থেকে ফিরে তিনি আগের পোস্টটি মুছে দিয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট দেন। তিনি লেখেন, ‘ফেসবুক আইডিটি সাময়িক সময়ের জন্য হ্যাকড হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে পুনরুদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিতর্কিত স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী কমিশনার দায়িত্বশীল পদে থেকে এমনটি করতে পারেন না। তিনি ফেসবুকে আপত্তিকর কথা লিখেছেন। তাঁরা তাঁর বিচার ও প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। শুনেছেন তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা ওই কর্মকর্তার বিচার চান।

জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার সিরাজুম মুনীরা কায়ছান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইডিটা অনেক আগেই খোলা হয়েছে। এটি আজকে হ্যাকড হয়েছিল। আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছি।’

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

মোশারফ হোসাইন বলেন, তাঁকে (সহকারী কমিশনার) দুপুরে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো লিখিত পাননি। তবে মুঠোফোনে বিষয়গুলো জেনেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ধ নত ফ সব ক সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুর মেডিকেলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস’ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের’ দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ‘ক্যাম্পাস রাজনীতি’ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

অবশ্য ছাত্রদলের নেতারা বলছেন, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন নামে ইসলামী ছাত্রশিবির রাজনীতি করলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে তারা অন্যদের রাজনীতি করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে না। তবে ইসলামী ছাত্রশিবির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।

গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মো. আল মামুনকে সভাপতি ও শামছুদ্দোহা আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর মেডিকেল কলেজে ছয় সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১১ আগস্ট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে পরদিন ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে কলেজ প্রশাসন। এরপর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজে প্রকাশ্যে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত বছরের ১২ আগস্ট রমেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রাখা হয়। অথচ ছাত্রদল রংপুর মেডিকেল কলেজে কমিটি দেয়। কলেজ প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত অগ্রাহ্য করে কতিপয় শিক্ষার্থীর এমন নিন্দনীয় কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’

ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে গুপ্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুদ্দোহা আলম। তিনি বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ ছিলেন স্বাচিপের নেতা। ছাত্রলীগ নেতা ও স্বাচিপের চিকিৎসকদের সুরক্ষা দিতে তখন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এখন সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম ব্যবহার করে ছাত্রশিবির গুপ্ত রাজনীতি করতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ চাইছে। যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিব্রত।

জানতে চাইলে রংপুর মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্রশিবিরের কোনো কমিটি নেই। তারা কোনো গুপ্ত রাজনীতি করেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের কমিটি ঢাকা থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি হওয়া আর কর্মকাণ্ড পরিচালনা এক নয়। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করলে কমিটি নিয়ে আপত্তি থাকার কথা নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের দিনও থাকবে গরম, নেই বৃষ্টির সম্ভাবনা
  • বিরতিহীন রোজা রাখা কি বৈধ
  • আশ্রয় নিয়ে খেয়ে দেয়ে ৪ শিশুসহ চম্পট, পরে ওই নারীকে আটক
  • অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থেকে শিডিউল মেসেজ পাঠাবেন যেভাবে
  • লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
  • উয়েফা, ফিফা ও লা লিগা কর্তৃপক্ষকে ধুয়ে দিলেন কুন্দে
  • হামজার চোট ও চেইন রিঅ্যাকশন
  • নিখোঁজের দুই দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
  • ঈদের ছুটিতে ক্রিকেটাঙ্গন
  • রংপুর মেডিকেলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস’ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি