চীনের আগে ভারত সফর করতে চেয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা: দ্য হিন্দুকে প্রেস সচিব
Published: 26th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা সবার আগে ভারত সফরেই যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভারত থেকে সে বিষয়ে কোনো সাড়া পাননি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’কে এ কথা জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার দ্য হিন্দুকে ওই কথা জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, চীন সফর চূড়ান্ত করার অনেক আগে প্রধান উপদেষ্টা ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার গত ডিসেম্বরেই ভারতকে বার্তা পাঠিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভারত থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ওই আগ্রহ প্রকাশ করেছিল চীন সফর চূড়ান্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে।
আজ বুধবার শুরু হচ্ছে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর। এই সফরে তাঁর সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। এ কথা জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা চান বাংলাদেশকে চীন তার বিনিয়োগের গন্তব্য করে তুলুক। বিশেষ করে উৎপাদনশিল্পে।
গত চার মাসে মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় সরকারপ্রধান, যিনি দক্ষিণ এশিয়া থেকে চীন সফর করছেন। গত ডিসেম্বরে চার দিনের সফরে চীন গিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা।
চীন থেকে ফিরেই মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাংককে যাবেন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। ৩ ও ৪ এপ্রিল সেই সম্মেলনের আসরে ইউনূস চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে। প্রেস সচিব এই প্রসঙ্গে বলেন, অনেক দিন আগে এই ইচ্ছা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে বার্তা দিয়েছে। কিন্তু বৈঠক নিয়ে ভারত এখনো কিছু জানায়নি।
শফিকুল আলম বলেন, সফরকালে চীনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে ব্যবসাবান্ধব দেশ হিসেবে পরিচিত করতে চান। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান, যাতে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহী হন।
প্রেস সচিব বলেন, বহু দেশ নানা কারণে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কিত। বাংলাদেশ সেই সুযোগ গ্রহণ করতে চায়। চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎ হয়েছিল। ওয়াং ই সেই সময় ইউনূসকে ‘চীনের পুরোনো বন্ধু’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। সেই বৈঠকে চীনকে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্যানেল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইউনূস।
গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, বাংলাদেশকে তিনি দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ার ‘গ্রোথ ইঞ্জিন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।
অধ্যাপক ইউনূসকে মালয়েশিয়াও দ্বিপক্ষীয় সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তিনি তা গ্রহণও করেছেন। ইউনূস বলেছেন, কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল বামজোটের
খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর মামলা প্রত্যাহারসহ দুই দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট। শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়।
মিছিলটি টিএসসি পায়রা চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে ফের রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে পরবর্তীতে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। এ সময় ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু এবং বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেলসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল থেকে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মামলা ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং কুয়েটের উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানান তারা।
এসময় ‘কুয়েটে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘ব্যারাকের সেনাবাহিনী, ব্যারাকে ফিরে যা’, ‘কুমিল্লায় হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘চবিতে বহিষ্কার, প্রত্যাহার করতে হবে’, ‘কুয়েটের মামলা, প্রত্যাহার করতে হবে’সহ নানা স্লোগান দেন তারা।