সাভারে স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান, আটক ৩
Published: 26th, March 2025 GMT
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’–এর পতাকা হাতে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর স্মৃতিসৌধের বেদির সামনে থেকে তাঁরা ‘জাতির পিতা শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি’সহ নানা স্লোগান দিয়ে ফটকের দিকে আসেন।
এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের মহাসচিব সেলিম রেজা (৪৭), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সদস্য মো.
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পতাকা হাতে স্মৃতিসৌধের মূল বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাঁরা স্মৃতিসৌধ থেকে বের হওয়ার সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’সহ নানা স্লোগান দেন। পরে স্মৃতিসৌধে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে এলে তাঁরা বিভিন্ন দিকে দৌড় দেন। কয়েকজন মূল ফটকের দিকে গেলে জনতার সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে একজনকে পিটুনি দেন জনতা। মারধরের সময় উপস্থিত সংবাদকর্মীসহ বেশ কয়েকজন তাঁদের থামানোর চেষ্টা করেন। পরে তিনজনকে আটক করে আশুলিয়া থানা-পুলিশ।
স্লোগান দেওয়ার ব্যাপারে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে সংগঠনটির কয়েকজন স্লোগান দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি, আমরা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি।’ পরিচয় জানতে চাইলে তাঁদের একজন বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এটা আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।’ পরে জানান, তাঁর নাম আমিন মুসল্লি। তিনি বরগুনা সদর থেকে এসেছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, স্মৃতিসৌধ চত্বর থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে উসকানিমূলক স্লোগান দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় মোটিফ বানানো চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এতে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হোসেন খানকে প্রধান করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে, ওই ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
হাসপাতালে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
খুলনার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান হায়দারের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত আড়াইটার দিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ঘোষের বাজার এলাকায় অবস্থিত মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ ওঠে। আগুনে পুড়ে যায় বাড়িটির টিনশেড ঘরে রাখা মানবেন্দ্র ঘোষের দীর্ঘদিনের শিল্পকর্ম, একটি মোটরসাইকেল ও আসবাবপত্র।
এবার ঢাকায় বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখের আদলে ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার মোটিফ’ বানানো হয়। এলাকাবাসীর ধারণা, মোটিফ তৈরির কাজে যুক্ত থাকার কারণে মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন দেওয়া হতে পারে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে বাড়িতে থাকা দোকানের কর্মচারীরা আগুন লেগেছে বলে চিৎকার করতে থাকেন। পরে আশপাশের লোকজন উপস্থিত হয়ে আগুন লেভানোর চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ দাবি করেন, পহেলা বৈশাখের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং ইনডাইরেক্ট ভাবে তিনি হুমকির মধ্যে ছিলেন। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানোর পর মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “নববর্ষের শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার যে মুখাকৃতি তৈরি হয়েছে সেটাতে অনেকেই জড়িত ছিল। এটি প্রশাসনের চাহিদার জন্য করা হয়েছে। কোনো শিল্পী নিজ উদ্যোগে সেগুলো তৈরি করেনি। এখানে শিল্পীদের কোনো দায় নেই। প্রশাসন যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে শিল্পীরা সেভাবেই কাজ করেছে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “আমরা গতকাল রাতে জানতে পেরেছি চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হোসেন খানকে প্রধান করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।”
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ