খুলনায় মন্দিরের তালা কেটে আড়াই মিনিটেই কৃষ্ণের মূর্তি চুরি
Published: 26th, March 2025 GMT
খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ‘আর্য্য হরিসভা মন্দির’ থেকে একটি মূর্তি চুরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে মন্দিরের দুটি তালা কেটে দুষ্কৃতকারীরা মূর্তিটি চুরি করে নিয়ে যায়।
আর্য্য হরিসভা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব বাপী রায় জানান, মন্দিরটির বাইরের অংশে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও কোনো নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন না। গতকাল রাত ৯টার দিকে মন্দিরের প্রাত্যহিক কার্যক্রম শেষে সেবায়েত ও ভক্তরা মন্দিরের গেটে তালা লাগিয়ে চলে যান। পরে গভীর রাতে মন্দিরের তালা কেটে পিতলের কৃষ্ণমূর্তি চুরি করে নিয়ে যান দুই ব্যক্তি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, জামা–প্যান্ট পরা দুই ব্যক্তি মন্দিরের দিকে যান। তাঁদের মুখ মাঙ্কি টুপি দিয়ে ঢাকা ছিল আর হাতে ছিল তালা কাটার যন্ত্র। মন্দিরের ভেতরে ঢুকে মাত্র আড়াই মিনিটের মধ্যেই মূর্তিটি নিয়ে তাঁদের বাইরে বের হতে দেখা যায়।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
মন্দিরে ও এলাকায় চুরির ঘটনা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, কিছুদিন ধরে দাকোপ এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও চুরির ঘটনা ঘটছে। এমনকি দিনের বেলাতেও ফাঁকা বাড়িতে চুরি হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন দ র র
এছাড়াও পড়ুন:
গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা
গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।
গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে
অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি
শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।
রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।
গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।
রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”
“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।
মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”
মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”
“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”
শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।
উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
ঢাকা/ইমরান/রাসেল