রাঙ্গুনিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নিহত
Published: 26th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নুরুল ইসলাম তালুকদার (৭০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটার মীরের খিল বাজারে নিজের তেলের দোকানে কুপিয়ে ও হামলায় আহত করা হয় নুরুল ইসলামকে। তিনি সরফভাটা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মীরের খিল গ্রামের ইন্নাল আমিন তালুকদারের বড় ছেলে। পেশায় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম তালুকদার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নুরুল ইসলামের দোকানে হামলা চালান সাত থেকে আটজনের একটি সন্ত্রাসী দল। সন্ত্রাসীরা তাঁকে দোকান থেকে বের করে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারধর করেন এবং কুপিয়ে জখম করে চলে যান। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পরও ভয়ে কেউ দীর্ঘক্ষণ কাছে যাননি। প্রায় আধা ঘণ্টা সড়কে পড়ে থাকার পর স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে সন্ত্রাসীরা নুরুল ইসলাম তালুকদারের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন বলে শুনেছি। তবে পারিবারিক বিরোধের বিষয়টিও শোনা যাচ্ছে।’
এদিকে নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম শিফাতুল মাজদার আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার বিষয়ে নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা পাওয়া যায়নি। পরিবার মামলা দিলে পুলিশ নেবে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের কাজ করছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইমোতে প্রেম: চট্টগ্রামে তরুণী খুন, প্রেমিক গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক সন্তানের জননী টুম্পা আক্তারের সাথে ইমো অ্যাপে প্রেম গড়ে ওঠে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বেকার ইব্রাহিম হাওলাদারের। এই প্রেমের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যান টুম্পা। বিয়ে না করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকায়।
তবে সুখের হয়নি সে জীবন। অন্য পুরুষের সাথে টুম্পার সম্পর্ক থাকতে পারে। সবসময় এমন সন্দেহ করতেন ইব্রাহিম। সেই সন্দেহ থেকেই একদিন টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ইব্রাহিম।
সম্পুর্ণ ক্লু লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।
মাহবুব আলম খান জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বন্দর থানার ওয়াসিম চৌধুরী পাড়া পেলাগাজীর বাড়ি আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচ তলার একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়ার তথ্য না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে একই এলাকার একটি দোকানের ক্যাশমেমো থেকে পাওয়া নম্বর ধরেই এগোয় তদন্ত। এরপরই শনাক্ত হয় ইব্রাহিম; যিনি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমকে রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বাসের ভেতর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় খুনের রহস্য।
পুলিশ জানায়, ইমোতে প্রেমে সম্পর্কের সূত্র ধরে টুম্পা ও ইব্রাহীম বিয়ে ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন। ভিকটিম টুম্পা আক্তার একজন গার্মেন্টসকর্মী। তার পরিচয় মূলত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পরই জানতে পারি। তারা বন্দর এলাকার ওই বাসায় লিভ টুগেদার করত। কাগজে-কলমে তাদের বিয়ে হয়নি। দুজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষী রেখে তাদের মুখে মুখে বিয়ে হয়।
টুম্পা আক্তার যখন কর্মস্থলে যেতেন ইব্রাহিম মোবাইল নিয়ে যেতে দিতেন না। মোবাইল বাসায় রেখে যেতেন। বাসায় রাখার পর অনেকসময় তার ফোনে পুরুষ কণ্ঠে কল আসত। ইব্রাহিমের সন্দেহ হয় তার কথিত স্ত্রীর আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই সন্দেহের জেরে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।
ঘটনার দিন এই বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের মাথার কাছে একটি শেলফে থাকা রশি দিয়ে টুম্পার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই সময় টুম্পার বাচ্চাটি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠলে তাকে একজন মহিলার কাছে দিয়ে ইব্রাহিম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ হতাকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/এস