নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে খাটের ওপর পেলেন স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ
Published: 26th, March 2025 GMT
মুক্তা বেগমকে (৫৫) বাড়িতে রেখে তারাবিহর নামাজ আদায় করতে গ্রামের মসজিদে গিয়েছিলেন মান্নান গাজী। রাত ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখতে পান বসতঘরের খাটের ওপর স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। তবে ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার ছয়গাঁও ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে ঘটেছে। আজ বুধবার সকালে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ওই ঘটনার পর গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মসজিদের মাইক থেকে মাইকিং করে ডাকাত দল এক নারীকে হত্যা করেছে—এমন প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে, ঘটনাটি ডাকাতির নয়। দুর্বৃত্তরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়েছে।
ভেদরগঞ্জ থানা ও স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মান্নান গাজী সাবেক সেনাসদস্য। সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি মালয়েশিয়াপ্রবাসী হন। ২০২৩ সালে দেশে ফিরে গ্রামে নতুন একটি বাড়ি নির্মাণ করে স্ত্রী মুক্তা বেগমকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। ওই দম্পতির ছেলে হৃদয় গাজী মালয়েশিয়াপ্রবাসী আর মেয়ে মুন্নি আক্তার স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় থাকেন।
আজ সকালে বাড়ৈজঙ্গল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, যে বাড়িতে মুক্ত বেগম খুন হয়েছেন, তার আশপাশে ২০০ মিটারের মধ্যে কোনো বাড়ি নেই। একটি আধা পাকা ঘরে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন মুক্তা। ওই ঘরের একটি কক্ষে তাঁকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তার স্বামী মান্নান গাজী ও মেয়ে মুন্নি কান্নাকাটি করছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্বজনেরা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মান্নান গাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাহ্রির জন্য খাবার তৈরি করে মুক্তার ঘুমিয়ে পড়ার কথা ছিল। আমি নামাজ শেষ করে বাড়ি ফিরলে দরজা খুলে দেবে—এমন কথা ছিল। নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরে দেখি, দরজা খোলা। কিন্তু তাকে পেলাম না। তার রক্তাক্ত নিথর দেহটি খাটের ওপর পড়ে ছিল। ঘরের কোনো জিনিসপত্র খোয়া যায়নি। তাহলে কারা, কী উদ্দ্যেশে আমার স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করল? আমরা নিরীহ মানুষ। ছেলেমেয়েও বাড়িতে থাকে না। আমাদের তো কোনো শত্রু নেই। তা হলে এম নৃশংসতা কে করল?’
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় ডাকাতি হচ্ছে, একজনকে হত্যা করেছে—এমন খবর পেয়ে আমরা ওই এলাকায় যাই। ওই নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে এটি ডাকাতির ঘটনা নয়। ওই নারীকে কেউ হত্যা করেছেন, কিন্তু ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। কারা এমন করতে পারে, তার ধারণা পরিবার থেকেও পাচ্ছি না। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ দরগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সাধুমেলা’
মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সাধুমেলায় শুরুতে সমবেত কণ্ঠে লালনের ‘ভক্তিমূলক গান’ পরিবেশিত হয়। লালনসংগীত পরিবেশন করেন ফকির শামসুল সাঁই, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ পরিবেশন করেন মেহেরুন নেসা পূর্ণিমা। উপস্থাপনা করেন শেখ জামাল উদ্দিন টুনটুন। শ্রীকৃষ্ণ গোপাল পরিবেশন করেন ‘লীলার যার নাইরে সীমা’ এবং ‘দেখো দেখো মনো রায় হয়েছে’। গান পরিবেশন করেন দিপা মণ্ডল। ওমর আলী পরিবেশন করেন ‘আচলা ঝোলা তিলক মালা’। লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোঃ মিরাজ সিকদার ‘আমি ওই চরণে দাসের যোগ্য নই’, আকলিমা ফকিরানী এবং লাভলী শেখ ‘রসো প্রেমে ঘাট ভাড়িয়ে তরী বেওনা’।
পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন মোঃ সমির হোসেন, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘আমায় রাখিলেন সেই কূপজল করে’ এবং লালনের গান ‘মন তোর এমন জনম আর কী হবে রে’ পরিবেশন করেন মোঃ মুক্তার হোসেন। এরপর লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোসাঃ লিনা খাতুন ‘কোথায় সে অটল রূপে বারাম দেয়’, মনিরুল ইসলাম এবং আবু শাহীন খান ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের গান।