শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করায় অ্যাসিল্যান্ডকে ‘অব্যাহতি’
Published: 26th, March 2025 GMT
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা কায়ছানকে দায়িত্ব থেকে প্রাথমিকভাবে ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে ফেসবুক থেকে এ বিষয়ে পোস্ট দেওয়ার পর তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, অ্যাসিল্যান্ড পরবর্তীতে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন লেখাটি তিনি লেখেননি। তার আইডি হ্যাক হয়েছিল। পরে আবার তিনি আইডি ফিরে পান।
ওই পোস্ট দেওয়ার পর সরাইল অন্নদা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে যোগ দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা। সেখানে তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। এরপর তিনি ফিরে আসেন। এরও প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর সেই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। পরে আরেকটি পোষ্ট করা হয়। এতে প্রথম পোষ্টটি ফেসবুক হ্যাক করে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা কায়ছানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সরাইলের ইউএনও মো.
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, “এসিল্যান্ডকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। অ্যাসিল্যান্ড দাবি করেছেন, লেখাটি তিনি লেখেননি। এজন্য তার বিয়ষটি বিভাগীয়ভাবে তদন্ত করা হবে। এরপর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাইনুদ্দীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো কবি রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ির একাংশ
প্রয়াত কবি রফিক আজাদের ধানমণ্ডির বাড়ির একাংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িটিতে প্রায় ২৯ বছর সপরিবারে বসবাস করেছেন রফিক আজাদ। এ বাড়িতে বসেই কবি লিখেছেন ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ। বুধবার সকালে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।
চার ইউনিটের বাড়িটির একটিতে থাকছেন কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ। বাকি তিন ইউনিট অন্যদের নামে বরাদ্দ রয়েছে। আজ বুধবার বাড়িটির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪এ ঠিকানার বাড়িটিতে (পশ্চিমাংশ) কমবেশি ৫ কাঠা পরিমাণ জায়গা রয়েছে।
১৯৮৮ সালে একতলা এ বাড়িটি রফিক আজাদের স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজের নামে সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় ‘এস্টেট অফিস’। দিলারা হাফিজ তখন ইডেন কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বরাদ্দ কপিতে দেখা যায়, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক এম বেগমের স্বাক্ষর করা এ বরাদ্দনামায় উল্লেখ করা হয়, এই বরাদ্দের দ্বারা বাসার ওপর কোনো অধিকার বর্তাবে না, তবে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করতে পারবেন।
দীর্ঘদিন পর বাড়িটি নিজের বলে দাবি করেন সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের এক ব্যক্তি। ২০১২ সালে নিজের মালিকানার পক্ষে আদালতের রায় পান তিনি। এ নিয়ে সৈয়দ নেহাল, হাউজিং অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করে মামলা করেন দিলারা হাফিজ। এর ফলে আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন। পরের বছর এই স্থিতাবস্থা স্থায়ী করেন আদালত।
পরবর্তীতে মামলাটি ঢাকার সপ্তম সহকারী জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। আগামী মে মাসের ২৫ তারিখ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের কথা রয়েছে। এইসব তথ্য উল্লেখ করে গতকাল মঙ্গলবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, একই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পৃথক চিঠি দেন দিলারা হাফিজ। এর মাঝেই আজ বুধবার সকালে বাড়িটি উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়।
দিলারা হাফিজ শিক্ষা ক্যাডারের একজন প্রভাষক হিসেবে বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সরকারি তিতুমীর কলেজে ৪ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান হিসেবে চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। তার স্বামী রফিক আজাদ একুশে পদক, বাংলা একাডেমিসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান—অভিন্ন আজাদ ও অব্যয় আজাদ প্রবাসে রয়েছেন।
এ বিষয়ে দিলারা হাফিজ বলেন, জাতীয় জীবনে একজন অগ্রগণ্য কবি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিক আজাদ। তার স্মৃতি সংরক্ষণ ও ধারণের জন্যে বাড়িটির অংশবিশেষের স্থায়ী বন্দোবস্তের আদেশ পেতে গতকালও তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঘুরেছেন। মামলা চলমান থাকাবস্থায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোর আশা করেননি তিনি।