চোখে অশ্রু, হাতে ফুল—সন্‌জীদা খাতুনের শেষবিদায়ে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছিল। শাহীন সামাদ, বুলবুল ইস‌লামরা গাইলেন, ‘তুমি যে সুরের আগুন লাগিয়ে দিলে মোর প্রাণে’, ‘কান্না হাসির দোল দোলা‌নো’।
আজ দুপুর ১২টায় বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের অগ্রণী ব্যক্তিত্ব, সংগীতজ্ঞ সন্‌জীদা খাতুনের কফিন শেষবারের মতো ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে নেওয়া হ‌লে শো‌কের আবহ তৈরি হয়। গান আর ফু‌লেল শ্রদ্ধা ও ভা‌লোবাসায় শেষবিদায় জানালেন সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, শিল্পী, ছায়ানটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মীসহ হাজার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ ছুঁই ছুঁই।
যাঁদের হাত ধ‌রে ছায়ানট গড়ে উঠেছে, তাঁদের একজন সন্‌জীদা খাতুন। তি‌নি ছায়ানটের সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন। ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একে একে বাকিরা গত হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি একা হাল ধ‌রে ছি‌লেন। পরিবারের মতোই ছায়ানটকে আগলে রেখেছিলেন তিনি। ছায়ানটে সন্‌জীদা খাতুনকে কেউ ‘মিনু আপা’, কেউ ‘মিনু খালা’ ব‌লে ডাকতেন। প্রিয় মিনু‌কে হারিয়ে শোকে বেদনাবিধুর ছায়ানট। কেউ অশ্রুসজল চোখে, কেউ ধ‌রে আসা গলায় তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছিলেন। সন্‌জীদা খাতুনকে শেষবারের মতো দেখতে পরিবারের সদস্য থেকে শিল্পী, ছায়ানটের কর্মীরা ছুটে এসেছিলেন। কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অনেকে।
শ্রদ্ধা জানানোর মঞ্চে গান পরিবেশন ক‌রে‌ছেন বুলবুল ইসলাম, শাহীন সামাদ, লাইসা আহ‌মেদ লিসা, পার্থ তানভীর ন‌ভেদ, রু‌চিরা তাবাসসুমসহ আরও অনেকে।
ছায়ানটের সহসভাপতি ও প্রাবন্ধিক ম‌ফিদুল হক ব‌লেন, ‘প‌য়‌লা বৈশা‌খের য‌ে আয়োজন বিশাল আয়োজনে রূপ নিল, এর পেছনে কাজ করেছেন সন্‌জীদা খাতুন। ছায়ানটের সঙ্গে সমাজের মেলবন্ধন করেছেন। বহু মানুষের অন্তরে তিনি জেগে আছেন।’
‘আগুনের পরশমণি’ ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে ছায়ানটের উঠানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষ করা হয়।
ছায়ানটে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন ফাহমিদা খাতুন, রা‌মেন্দু মজুমদার, খুর‌শীদ আলম, শাহীন সামাদ, সেলিনা মা‌লেক চৌধুরী, ইফফাত আরা দেওয়ান, মিনু হক, খায়রুল আনাম শাকিল, শামীম আরা নীপা, শিবলী ম‌হম্মদসহ আরও অনেকে।
সংগঠনের মধ্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে সু‌রের ধারা, বাংলা‌দেশ মু‌ক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঢাকা থিয়েটার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, কণ্ঠশীলনসহ আরও কয়েকটি সংগঠন।
ছায়ানট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে কফিন নেওয়া হয়। বেলা আড়াইটায় কফিন নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সেখানে বিকেল চারটা পর্যন্ত তাঁকে শেষবিদায় জানাবেন সর্বস্তরের মানুষ।
সেই পর্ব শেষে কফিন আবার নিয়ে যাওয়া হবে হিমঘরে। তবে এর পরের কার্যক্রম নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে পরিবার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র র মত ছ য় নট র

এছাড়াও পড়ুন:

ছোট্ট শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় যুবক গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় কোলের ছোট্ট শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জাকারিয়া প্রকাশ নয়ন (৩০) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১ ও র‌্যাব-৮। বৃহস্পতিবার রাতে বরিশাল জেলার কোতয়ালী থানাধীন নাজির মহল্লা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর অনাবিল ইমাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার জাকারিয়া প্রকাশ নয়ন মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার মধ্যপাড়ার মো. ফারুকের ছেলে। র‌্যাব জানায়, ভিকটিমের বিয়ের পূর্বে মামলায় অভিযুক্ত মাহিমের সঙ্গে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ভিকটিমের অন্যত্র বিয়ের পর বিভিন্ন সময় রাস্তা ঘাটে অভিযুক্ত মাহিম বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করতেন ও কু-প্রস্তাব দিতেন। এরই ধারাবাহিকাতায় গত ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার গাবতলী এলাকায় কোলের শিশুকে জিম্মি করে ভিকটিমকে দফায় দফায় ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে প্রায় এক মাস ধরে অভিযুক্ত মাহিম এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামির সহায়তায় দফায় দফায় ভিকটিমকে ধর্ষণ করছিল। গত ৭ এপ্রিল সর্বশেষ ধর্ষণের পর ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়েন।

ভিকটিমের স্বামী র‌্যাবকে জানান, রমজান শুরু হওয়ার আগে তার স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে ইসদাইর-গাবতলী লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় ইসদাইর বটতলা এলাকার সজিব ওরফে বদনা সজিব, গাবতলী মাজার এলাকার রাকিব ওরফে মাইন, জাকারিয়া প্রকাশ নয়ন ও নজরুলসহ অজ্ঞাত দুজন সহযোগী তার সন্তানকে জিম্মি করে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় অভিযুক্তরা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও কয়েক দফা ধর্ষণ করে। সর্বশেষ গত ৭ এপ্রিল তাকে পুনরায় ফতুল্লা মডেল থানাধীন গাবতলী প্রাইমারী স্কুলের পাশের পাঁচ তলা বাড়ির নিচ তলার রুমের ভেতরে ডেকে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ