নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে মধ্যরাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের এক সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তাঁকে পুলিশের হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টাউনহল মোড়–সংলগ্ন ফ্ল্যাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। একদল তরুণ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

জামাল হোসেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় পরিবেশক হিসেবেও রয়েছেন তিনি।

জামাল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার মো.

জিহাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি জামাল হোসেনের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ জামাল হোসেনের কাছে এসে তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আয়োজিত একটি মানববন্ধনের ছবি দেখিয়ে সেখানে জামাল হোসেনের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন।

মো. জিহাদ আরও বলেন, জামাল হোসেন ওই তরুণদের পরিচয় জানতে চাইলে ইয়াছিন আরাফাত নামের তাঁদের একজন নিজেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির লোক দাবি করেন। এরপর জামাল হোসেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কারণে আমাদের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে।’ জামাল হোসেন তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে আরও কিছু তরুণ সেখানে জড়ো হয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জামাল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই তরুণকে ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘ভাই এটা সেন্ট্রাল বিষয়। আমি থানায় আছি। এখানে সবাই আছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খোন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক জামাল হোসেনকে কারা অবরুদ্ধ করেছেন কিংবা পুলিশে দিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। যাঁদের নাম শুনছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মামলা নেই। গতকাল মধ্যরাতে লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া তখন তাঁকে পুলিশ উদ্ধার না করলে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা ছিল। ওসি আরও বলেন, যাঁরা তাঁকে আটক করেছেন, তাঁরা আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

রাজধানীর ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতি করা হয়েছে। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও নগদ টাকাসহ ডাকাতদলের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টার থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তার ছয় জন হলো— ফরহাদ বীন মোশারফ, ইয়াছিন হাসান, মোবাশ্বের আহাম্মেদ, ওয়াকিল মাহমুদ, আবদুল্লাহ এবং সুমন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কালো রঙের দুটি জ্যাকেট, তিনটি কালো রঙের ‘RAB’ লেখাসম্বলিত ক্যাপ, একটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার তৈরী ছেনি, একটি পুরাতন লাল রঙের স্লাই রেঞ্জ এবং নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা গেছে, ধানমন্ডিতে এম এ হান্নান আজাদের ‘অলংকার নিকেতন জুয়েলার্স’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ধানমন্ডি শাখার গলিতে নিজ বাড়ির নিচতলা, তৃতীয় তলা ও চতুর্থ তলায় এস এম সোর্সিং নামীয় প্রতিষ্ঠানের অফিস আছে। এছাড়া, ওই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি কনসালট্যান্সি অফিস এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলা নিয়ে এম এ হান্নান আজাদের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট আছে। বুধবার (২৬ শে মার্চ) ভোরে  তিনটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেটকারে করে ডাকাতরা দলবদ্ধভাবে ওই বাসার সামনে এসে ফটকে দায়িত্ব পালনরত নিরাপত্তাকর্মীদের বলে যে, তারা র‌্যাবের লোক, তাদের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। তারা বাড়িতে অভিযান চালাবে বলে তাড়াতাড়ি গেট খুলতে বলে। তাদের কয়েকজনের গায়ে ‘RAB’ লেখাসম্বলিত কটি ছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন। তখন ডাকাতরা নিরাপত্তাকর্মীদের গালাগালি করতে থাকে এবং গেট না খুললে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন গেটের ওপর দিয়ে উঠে জোর করে গেট খুলে ফেলে। এরপর তারা সবাই জোর করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মী, বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক ও গাড়িচালককে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তারা নিচতলার অফিসের গেট ভেঙে পিয়নকে মারধর করে এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। 

এরপর ডাকাতরা তৃতীয় তলায় গিয়ে এস এম সোর্সিংয়ের অফিসের গেট ভেঙে ফেলে। গেট ভাঙার শব্দ পেয়ে চতুর্থ তলায় থাকা এস এম সোর্সিংয়ের তিন জন অফিস সহকারী তৃতীয় তলায় নেমে আসেন। ডাকাতরা তখন তাদের আটকে মারধর করে অফিসের চাবি ও বাসার চাবি দিতে বলে। ডাকাতরা জোর করে চাবি নিয়ে তৃতীয় তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে এবং অফিসের ড্রয়ার ভেঙে নগদ ২২ লাখ টাকা লুট করে ও অফিসের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাদের আরেকটি দল চতুর্থ তলার অফিসের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে আলমারি ভেঙে নগদ ১৩ লাখ টাকা লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নান আজাদের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের দুল ও চেইনসহ আনুমানিক ২.৫ ভরি স্বর্ণ (যার দাম ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা) লুট করে। এরপর তারা মালিক এম এ হান্নানকে জোর করে নিচে নিয়ে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। তখন ধানমন্ডি থানার একটি টহল টিম ওই বাড়ির সামনে হাজির হয়ে ডাকাতদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় ডাকাতরা তাদের হাতে থাকা ছেনি ও রেঞ্জ  দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। তখন আশেপাশে থাকা লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। 

এ ঘটনায় ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও মালিকের ভাগ্নে তৌহিদুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার ছয় জনসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১২ জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিরতিহীন রোজা রাখা কি বৈধ
  • আশ্রয় নিয়ে খেয়ে দেয়ে ৪ শিশুসহ চম্পট, পরে ওই নারীকে আটক
  • অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থেকে শিডিউল মেসেজ পাঠাবেন যেভাবে
  • লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন খালেদা জিয়া
  • উয়েফা, ফিফা ও লা লিগা কর্তৃপক্ষকে ধুয়ে দিলেন কুন্দে
  • হামজার চোট ও চেইন রিঅ্যাকশন
  • নিখোঁজের দুই দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার
  • ঈদের ছুটিতে ক্রিকেটাঙ্গন
  • রংপুর মেডিকেলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস’ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি
  • ধানমন্ডিতে র‌্যাব পরিচয় দুর্ধর্ষ ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬