প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে জিয়াউর রহমানের নাম নেই, হতাশ বিএনপি মহাসচিব
Published: 26th, March 2025 GMT
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে মঙ্গলবারের (২৫ মার্চ) ভাষণে আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি, তিনি নির্বাচনের রোডম্যাপের কথা বলেননি। তিনি স্বাধীনতার ঘোষক বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের নাম একবারও উচ্চারণ করেননি।
বুধবার সকাল ৯টায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জিয়া উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা হতাশ হয়েছি যে, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের নাম একবারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই সত্য ইতিহাস।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আবারও চাই না আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস বিকৃত করেছে সে ইতিহাস আবারও বিকৃত হউক। প্রকৃত সত্যকে উদঘাটিত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা একটি গণতান্ত্রিক সরকার, সেই গণতান্ত্রিক সরকারে যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে আমাদের সমস্যাগুলো ততই সমাধান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এই জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, হত্যা করেছে, গুপ্ত হত্যা করেছে, গুম-খুন করেছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমরা আশা করবো, অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।
আগামী ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা, এই নিয়ে বিএনপির মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত স্পষ্ট কথা, ডিসেম্বর থেকে জুন ৬ মাস, এটা কোনো রোডম্যাপ দেওয়া হয়নি। আমরা বারবার বলে আসছি যে, স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন, তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে এই সংকটগুলো কাটবে না। আমরা বিএনপি ক্ষমতায় যাবার জন্য নির্বাচনের কথা বলছি না, বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার স্বার্থেই বিএনপি নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের কথা বলছে।
এসময় তিনি বিএনপি, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র স ব ধ নত ব এনপ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা
গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।
গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে
অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি
শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।
রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।
গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।
রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”
“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।
মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”
মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”
“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”
শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।
উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
ঢাকা/ইমরান/রাসেল