আগামী এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য চার দিনের বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্বের বেশ কিছু নামীদামি কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা অংশ নিচ্ছেন। এ ছাড়া মেটা ও উবারের মতো আরও কিছু কোম্পানির প্রতিনিধিরাও আসবেন। সব মিলিয়ে এ সম্মেলনে ৫০টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।

আগামী ৭ থেকে ১০ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ শীর্ষক এই সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

বিডা জানিয়েছে, বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ করবেন এমন অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এর পাশাপাশি বিশ্বের নামীদামি বেশ কিছু কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী কিংবা প্রতিনিধিও ইতিমধ্যে নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম দুজন হলেন কাপড়ের ব্র্যান্ড জারার মূল সংস্থা ইন্ডিটেক্সের গ্রুপ সিইও অস্কার গার্সিয়া মাসেইরাস ও দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড গ্রুপের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ বিন সুলাইমান।

বিনিয়োগ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে আরও থাকবেন যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন, স্যামসাংয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাং-জু লি, কাপড়ের ব্র্যান্ড জিওর্ডানো ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কলিন মেলভিল কেনেডি কারি। এ ছাড়া এক্সিলারেট এনার্জির প্রেসিডেন্ট এবং পাকিস্তানের দাউদ গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্টের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা।

এই ব্যক্তিদের পাশাপাশি আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। বিডা জানিয়েছে, ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা, উবার, টেলিনর, টয়োটার মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।

এ ছাড়া বিশ্বের বেশ কিছু বড় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানিও আসছে সম্মেলনে। তাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বি-ক্যাপিটাল, মালয়েশিয়া ও হংকংভিত্তিক গোবি পার্টনার্স, কনজাংশন ক্যাপিটাল এবং মার্কোর মতো প্রতিষ্ঠান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি মেয়েদের

বাড়ির পাশে ফুল বাগানে শাড়ি পরে ছবি তুলে তা শেয়ার করছেন কেউ। আবার কেউ কেউ পাহাড়ের কোলে বসে সেলফি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছেড়েছেন। ফুটবল থেকে দূরে থাকা সানজিদা আক্তার-ঋতুপর্ণা চাকমাদের সময়টা যাচ্ছে এখন পরিবারের সঙ্গে হাসি আর আনন্দে। এক মাসের বেশি সময় ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়া মেয়েরা ভুলে যেতে চায় পিটার বাটলারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক বিষয়গুলো। সব ভুলে এখন ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তহুরা খাতুন-শামসুন্নাহাররা। নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতির জন্য আগামী ৬ এপ্রিল ক্যাম্পে ফেরার কথা জাতীয় নারী ফুটবলারদের। বাটলারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করা ১৮ নারী ফুটবলারও সেদিন যোগ দেবেন। তাদের নমনীয় হওয়াটা বাংলাদেশ নারী ফুটবলের জন্য ইতিবাচক বটে।

বডি শেমিংসহ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা সাবিনা খাতুন-মাসুরা পারভীনরা অনুশীলন বয়কট করেন। সিনিয়রদের ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করে আসে বাংলাদেশ দল। দুটি ম্যাচে হারলেও তরুণ এবং নতুন মেয়েদের নিয়ে ভবিষ্যতের দল গঠনের কাজ করতে থাকেন বাটলার। কিন্তু নারী সাফ জিততে যাদের বেশি অবদান, তাদের বাদ দিতে চায় না বলে বাফুফে মোট ৫৫ জনকে চুক্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়। ৩৭ জন চুক্তি করলেও বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। মূলত কোচ ইস্যুতে তাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় ট্রমায় চলে গিয়েছিল মেয়েরা। তাই ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখের পরে ছুটি নিয়ে যে যার মতো করে নিজ বাড়িতে চলে গিয়েছে। তবে ঈদে যাওয়ার আগে বাফুফে থেকে টাকা নিয়ে যেতে পারত। এবার চুক্তি না করাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেয়েরা। শুক্রবার সমকালের সঙ্গে আলাপে এ বিষয়টা স্বীকার করেছেন এক নারী ফুটবলার, ‘আমরা যদি চুক্তিতে থাকতাম, হয়তো আমরা বেতন পেতাম। তখন আরও বেশি ভালো লাগত আর ঈদটা একটু বেশি ভালোভাবে কাটাতাম।’ 

মেয়েদের আয়ের উৎসই হলো ফুটবল। তাই এবার বেতন পাননি বলে অনেকের ঈদটা যেমন ভালো কাটবে না, তেমনি করে অনেক দিন পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারার তৃপ্তিও আছে। ‘দেখেন আমি যখন ক্লাস সিক্সে উঠছি, তখন বাফুফের ক্যাম্পে চলে গিয়েছিলাম। ২০১৫ সালের পর থেকে এই পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ছিলাম ক্যাম্পে। পরিবারের সঙ্গে সেভাবে সময় কাটাতে পারিনি। এবার অনেক দিন বাড়িতে আছি বলে ভালো লাগছে। পরিবারও খুশি। বাড়িতে ঈদ করব বলে আমি এবং আমার পরিবার অনেক খুশি। আর যা কিছু হয়েছে আমি এগুলো নিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনাও করি না। খেলা ও পরিবার আমার কাছে দুটি ভিন্ন জিনিস’– পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস এভাবেই প্রকাশ করেছেন ওই নারী ফুটবলার।

দেড় মাসের মতো বাফুফে ক্যাম্পের বাইরে আছেন নারী ফুটবলাররা। এই সময়ে অনেক কিছু উপলব্ধি করেছেন তারা। কোচের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলন করাটা যে সঠিক ছিল না, তা বুঝেছেন। বেশ কয়েকজনই জানিয়েছেন সবার সঙ্গে কোচের ঝামেলা ছিল না। হাতেগোনা কয়েকজনকে কোচ পছন্দ করতেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী ফুটবলার জানিয়েছেন, অনেকেই নাকি মোবাইল ফোন নিয়ে অনুশীলনে যেতেন, ‘সত্যি বলতে কি সব মেয়ের সঙ্গে কোচের ঝামেলা হয়নি। কিছু কিছু ফুটবলারের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়েছে। আমার সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। যেহেতু ফুটবল খেলা একটা টিম ওয়ার্ক, সেহেতু দলের সঙ্গে থাকতে হয়েছে।’ 
বিদ্রোহীরা সব ভুলে ক্যাম্পে ফিরবেন। কিন্তু এখন দেখার বিষয় পিটার বাটলার সেই মেয়েদের কীভাবে গ্রহণ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ