ফুলে ফুলে ভরেছে বেদি, শ্রদ্ধায় সিক্ত স্মৃতিসৌধ
Published: 26th, March 2025 GMT
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ বুধবার (২৬ মার্চ)। বাঙালি জাতির জীবনে অনন্য একটি দিন। ৫৫ বছর আগে এই দিনে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন কৃষক-ছাত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার নানা বয়সী মানুষ। ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে তারা ছিনিয়ে আনেন বিজয়। জন্ম হয় বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রের।
স্বাধীনতা দিবসের প্রথম প্রহর সকাল ৫ টা ৪৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো.
আরো পড়ুন:
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানুষের ঢল
পঞ্চনারীর মনোমুগ্ধকর অভিনয়
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পরেই স্মৃতিসৌধ এলাকা সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এরপর ফুলের ডালা নিয়ে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের ঢল নামে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।
শিশু থেকে প্রবীণ সব বয়সী মানুষের আগমনে মুখর হয়ে ওঠে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সরকারি, বেসরকারি, আধা-সরকারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষও। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে শহীদ বেদি।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে যুদ্ধাহত অনেক মুক্তিযোদ্ধাও আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের অনেকের হাতে ছিল লাল-সবুজের বিজয় পতাকা।
বাবার সাইফুল ইসলামের হাত ধরে ঢাকার ধামরাই থেকে স্মৃতিসৌধে এসেছিল শিশু মাইশা। সাইফুল ইসলাম বলেন, “সন্তানকে স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে জানাতে ও স্মৃতিসৌধ দেখাতে নিয়ে এসেছি।”
সাভার থেকে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আকরাম হেসেন। তিনি বলেন, “এবার রোজার কারণে স্মৃতিসৌধে লোকজন তুলনামূলক অনেক কম এসেছেন। আমি পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ভোরে এসেছি। আমার অফিসের অনেক কলিগ সেহরির পরপরই ঢাকা থেকে রওনা দেন স্মৃতিসৌধে আসার জন্য। স্মৃতিসৌধে সবাইকে নিয়ে ফুল দিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।”
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইভা বলেন, “বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসব এটা অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনায় ছিল। আমরা কয়েকজন একসঙ্গে স্মৃতিসৌধে এসেছি। স্বাধীনতা দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে পেরে ভালো লাগছে।”
জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “সকালে জনসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করার পর দলে দলে মানুষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। শ্রদ্ধার ফুলে ধীরে ধীরে বেদি ভরে যাচ্ছে। শ্রদ্ধা নিবেদনে সুবিধার্থে বেদি থেকে ফুল অপসারণ করা হচ্ছে।”
ঢাকা/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব ধ নত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রংপুর মেডিকেলে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস’ চেয়ে শিক্ষার্থীদের বিবৃতি
রংপুর মেডিকেল কলেজে (রমেক) ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ‘রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের’ দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ‘ক্যাম্পাস রাজনীতি’ অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য ছাত্রদলের নেতারা বলছেন, ক্যাম্পাসে বিভিন্ন নামে ইসলামী ছাত্রশিবির রাজনীতি করলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে তারা অন্যদের রাজনীতি করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে না। তবে ইসলামী ছাত্রশিবির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মো. আল মামুনকে সভাপতি ও শামছুদ্দোহা আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর মেডিকেল কলেজে ছয় সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১১ আগস্ট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবি জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে পরদিন ক্যাম্পাসে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে কলেজ প্রশাসন। এরপর থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজে প্রকাশ্যে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিবৃতি দেওয়া হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে গত বছরের ১২ আগস্ট রমেকের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্যাম্পাসে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিধান রাখা হয়। অথচ ছাত্রদল রংপুর মেডিকেল কলেজে কমিটি দেয়। কলেজ প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত অগ্রাহ্য করে কতিপয় শিক্ষার্থীর এমন নিন্দনীয় কাজের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি এবং ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’
ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে গুপ্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুদ্দোহা আলম। তিনি বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ ছিলেন স্বাচিপের নেতা। ছাত্রলীগ নেতা ও স্বাচিপের চিকিৎসকদের সুরক্ষা দিতে তখন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এখন সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম ব্যবহার করে ছাত্রশিবির গুপ্ত রাজনীতি করতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ চাইছে। যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিব্রত।
জানতে চাইলে রংপুর মহানগর ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আনিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্রশিবিরের কোনো কমিটি নেই। তারা কোনো গুপ্ত রাজনীতি করেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের কমিটি ঢাকা থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি হওয়া আর কর্মকাণ্ড পরিচালনা এক নয়। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা না করলে কমিটি নিয়ে আপত্তি থাকার কথা নয়।