মঙ্গোলিয়ায় দুই নখের বিরল ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান
Published: 26th, March 2025 GMT
এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি থেকে দুই নখের বিরল প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকেরা।
গবেষকেরা জানান, দুনোয়চুস সোগতবাতারি নামের অনন্য এ প্রজাতি থেরিজিনোসরস ডাইনোসরদের দলভুক্ত। এই প্রজাতির ডাইনোসর পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াত। সাধারণত এ প্রজাতির ডাইনোসরের তিনটি নখ ছিল।
সন্ধান পাওয়া ডাইনোসরের জীবাশ্মটি মাঝারি আকারের। এই ডাইনোসরের আনুমানিক ওজন ২৬০ কেজি।
আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে সাড়ে ১৬ কোটি বছর আগের ডাইনোসরের ২০০টি পায়ের ছাপের সন্ধান১৪ জানুয়ারি ২০২৫গবেষকেরা ধারণা করছেন, এই ডাইনোসরের লম্বা আর বাঁকানো নখ প্রজাতিটিকে দৃঢ়ভাবে গাছের ডাল বাঁকাতে ও আঁকড়ে ধরতে দক্ষ করে তুলেছিল।
গবেষণা প্রতিবেদনের লেখকদের একজন এবং কানাডার ক্যালগেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক দারলা জেলেনিটস্কি বলেন, এ প্রজাতির ডাইনোসর দেখতে বিশাল আর অদ্ভুত। ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ডমিনিয়ন’ চলচ্চিত্রে এ প্রজাতিকে দেখানো হয়েছে।
মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমির বায়ানশিরি গঠনে জীবাশ্মটির সন্ধান মিলেছে। এটা ক্রিটেসিয়াস যুগের শেষ ভাগের। ১০ কোটি ৫ লাখ বছর থেকে ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগের সময়কালকে এ যুগ ধরা হয়।
আরও পড়ুনডাইনোসর ফিরিয়ে আনতে চান বিজ্ঞানীরা২৫ নভেম্বর ২০২৪জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থার (ইউনেসকো) পক্ষ থেকে মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমিকে বিশ্বে ডাইনোসরের জীবাশ্মের সবচেয়ে বড় আধার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ অঞ্চল পরবর্তী ক্রিটেসিয়াস যুগের জীবাশ্মের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এটিকে ডাইনোসর যুগের প্রধান তিন সময়কালের শেষ ভাগ ধরা হয়, যা ডাইনোসর বিবর্তনের চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় এক ফুট লম্বা নখগুলো এ প্রজাতির ডায়নোসরের কিছু হাড়ের চেয়ে বড়। এই নখ গাছের ডাল আঁকড়ে ধরার পাশাপাশি মাটি খোঁড়া ও ভয়ংকর অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। এই নখ ডাইনোসরের প্রতিরক্ষা, চলাচল আর শিকার ধরার জন্য সহায়ক ছিল।
আরও পড়ুননিলামে উঠছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডাইনোসরের কঙ্কাল, দাম কত জানেন১৫ জুলাই ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশল সমর্থন করে না বিএনপি
দল বা গোষ্ঠীস্বার্থে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশল বিএনপি সমর্থন করে না বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবগত করেছে দলটি। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
জনগণের স্বার্থরক্ষা ও স্থায়ী কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেছে বিএনপি। সে কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) শিগগির ঘোষণার মাধ্যমে জনমনে সৃষ্ট সব বিভ্রান্তি অবসানের আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দীন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আজ যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের ভিশন-২০৩০ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে ও যেসব পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বিএনপি মনে করে, সব পরিবর্তনই সংস্কার নয়। সংস্কারের উদ্দেশ্য ইতিবাচক ও গঠনমূলক পরিবর্তন।’
যেকোনো রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তাঁর সরকারের বক্তব্য ও মতামতে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, ‘সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা আপনাকে সমর্থন জানিয়েছি এবং আপনার ওপরই আস্থা রাখতে চাই; কিন্তু আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি, আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’এ বিষয়ে বিএনপি সব প্রস্তাব নিয়েই যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনাকে স্বাগত জানায় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘কিন্তু দল কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থ এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাঁদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না।’
প্রয়োজনীয় সংস্কারে নিজেদের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বিএনপি বলেছে, পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের সংবিধান, আইন, বিধি, প্রতিষ্ঠান এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এমনভাবে কলুষিত করেছে যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনেক বিষয়েই পরিবর্তন ও সংস্কার সাধন অনিবার্য। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগের প্রতি বিএনপি সমর্থন জনিয়েছে ও সহযোগিতা করছে।
বৈঠকে বিএনপির সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়