বগুড়া থেকে দুই তরুণকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) আরও এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী নগর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ওই সদস্যের নাম ওহাব আলী (২৮)। তিনি ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে।

এ নিয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের এক উপপরিদর্শকসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ডিবি সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসের চালকও গ্রেপ্তার হয়েছেন।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের অপহরণের শিকার কলেজছাত্র মো.

রাব্বীর বাবা সেলিম শেখ বাদী হয়ে গত সোমবার ধুনট থানায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে এ মামলা করেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম, বশির আলী, ওহাব আলী (২৮) ও মাইক্রোবাসচালক মেহেদী হাসান।

আরও পড়ুনবগুড়ায় দুই তরুণকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা, ডিবির ৫ সদস্য গ্রেপ্তার২৪ মার্চ ২০২৫

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল আলম বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় গ্রেপ্তার ওহাব আলীকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবার ভোরের দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের নন্দীগ্রাম উপজেলার বীরগ্রাম এলাকায় হাইওয়ের কুন্দারহাট থানা-পুলিশের একটি দল মাইক্রোবাস থামিয়ে ডিবির ওই পাঁচ সদস্য ও গাড়িচালককে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের নগদ দুই লাখ টাকা, ডিবির পোশাক ও পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়ায় গ্রেপ্তার হওয়া ডিবির সদস্যদের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ আদায়কালে গণপিটুনি, অপহরণকারী তিন পুলিশসহ গ্রেপ্তার ৪

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় জুয়েল সরদার ও ফয়সাল সরদার নামে দুই কাপড় ব্যবসায়ীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সদস্যসহ আটজনের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করতে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন চার অপহরণকারীকে আটক করে। তবে বাকি চারজন পালিয়ে যায়। এ সময় গণপিটুনি দিয়ে চার অপহরণকারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে ডামুড্যা বাজার-সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গণপিটুনির এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ পাহারায় বর্তমানে গ্রেপ্তার চার আসামিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা হলেন বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলার গারফা এলাকার কৌশিক আহমেদ সেতু, ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধুলকুড়া এলাকার কাউসার তালুকদার, মাগুরা জেলার বাসিন্দা রুবায়েত মীর ও কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার আমৌদা এলাকার শরীফ হোসেন। তাদের মধ্যে কৌশিক, কাউসার ও রুবায়েত মীর পুলিশ কনস্টেবল। তবে রুবায়েত মীরকে আগেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কৌশিক খুলনা জেলা পুলিশ লাইনে এবং কাউসার চট্টগ্রামের একটি থানায় কর্মরত। তবে তারা বেশ কয়েকদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। অপহরণের ঘটনায় গতকাল ভুক্তভোগী ফয়সালের ভাই স্বাধীন সরদার ডামুড্যা থানায় অপহরণ মামলা করেছেন।

পুলিশ, ডামুড্যা বাজারের ব্যবসায়ী সমিতি ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইকরকান্দি এলাকার জুয়েল সরদার ও ফয়সাল সরদার ডামুড্যা বাজারে কাপড়ের ব্যবসা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডামুড্যার দারুল আমান বাজার এলাকায় কয়েকজন লোক অস্ত্রের মুখে একটি মাইক্রোবাসে তাদের তুলে নিয়ে যায়। তারা ওই দুই ব্যবসায়ীর কাছে সারা দিনের বিক্রি করা টাকা চায়। কিন্তু কাছে টাকা না থাকায় তারা অপহরণকারীদের দিতে পারেননি। তখন অপহরণকারীরা তাদের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চায়। তবে ওই ব্যবসায়ীরা ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। এই সময়ের মধ্যে অপহরণকারীরা দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মাদারীপুর শহরের লেকের পারে যায়। সেখানে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দুই ব্যবসায়ী মুক্তিপণ হিসেবে অপহরণকারীদের ৩ লাখ ৯১ হাজার টাকা দেন। বাকি ৬ লাখ ৯ হাজার টাকা আদায় করতে রাত ১টার দিকে অপহরণকারীরা ব্যবসায়ীদের নিয়ে ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যায়। সেখানে দুই ব্যবসায়ী গাড়ি থেকে চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে গাড়ি ঘিরে ফেলেন। এ সময় অপহরণকারীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জনতা তাদের চারজনকে আটক করে পিটুনি দেয়। এরপর ডামুড্যা থানা পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাদের সঙ্গে জয় পোদ্দার নামে আরেক পুলিশ কনস্টেবল ছিল। সে পলাতক রয়েছে। তবে জয় কোথায় কর্মরত, তা জানা যায়নি।

অপহরণকারী দলের সদস্য রুবায়েত মীর গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, কাউসার তালুকদার আমাদের এখানে এনেছে। সে এই অভিযানে আমাদের নেতা ছিল। অপহরণের সময় যে টাকা পেয়েছিলাম, তা কাউসারের কাছে আছে। আমি আর কিছু জানি না।
উদ্ধারের পর ফয়সাল ও জুয়েল জানান, অপহরণকারীরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের হাতে হাতকড়া পরায় ও পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখায়। ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হওয়ার পরও অপহরণকারীরা তাদের রড দিয়ে পেটায়, কিল-ঘুসি মারে। পরে মাদারীপুর লেক পারে নিয়ে যায়। সেখানে আমরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা দিই।
ডামুড্যা থানার ওসি হাফিজুর রহমান মানিক জানান, গ্রেপ্তার চারজনকে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানান, মুক্তিপণ আদায়ের সময় জনতার হাতে ধরা পড়া চারজনের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। পালিয়ে যাওয়াদের মধ্যেও একজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। পালিয়ে যাওয়াদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। তাদের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ: ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জনের নামে মামলা
  • মুক্তিপণ আদায়কালে গণপিটুনি, অপহরণকারী তিন পুলিশসহ গ্রেপ্তার ৪
  • যবিপ্রবির সাবেক ভিসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • ঈদের ছুটিতে লাশবাহী গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন এসআই কবির
  • নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পার্বত্য অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে: রবি
  • হা-মীমের কর্মকর্তা খুনে দুই গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে: র‌্যাব
  • বগুড়ায় অপহরণ মামলায় ডিবির ৫ সদস্যসহ ৬ জনের রিমান্ড মঞ্জুর
  • কটিয়াদীতে শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, ১৬ ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • লক্ষ্মীপুরে অপহৃত স্কুলছাত্রী ২ মাস পর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
  • সাত ফুট গভীর গর্তে ফেলে ভাড়াটেকে জীবন্ত কবর দিলেন বাড়ির মালিক