বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘অনৈক্য কিছু নেই। স্বার্থের সংঘাত আছে, প্রতিটি দলের নিজস্ব আদর্শিক জায়গা আছে, যার যার একটা মতাদর্শ আছে। যার যার মতাদর্শ থেকে কথা বলে। এটা আমি অনৈক্য বলব না। এমন সময় যদি কখনো আসে, জাতীয় বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন পড়বে, দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যের প্রয়োজন পড়বে, তখন কিন্তু আমরা সবাই এক হয়ে যাব। এখানে কোনো ভুল নেই।’

আজ বুধবার মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে সকাল সোয়া আটটার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এখন দলীয় আদর্শের ভিত্তিতে হয়তো আলাদা কথা বলছি, হতে পারে। কিন্তু যখন প্রয়োজন হবে, তখন বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এক হয়ে যাবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ মাঝে হারিয়ে ফেলেছিলাম। ৫ আগস্টের পরে আবার নতুন করে পেয়েছি।’

বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকের স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই। যাঁরা বলেন, তাঁরা আজকের স্বাধীনতা দিবসকে খাটো করতে চান, একাত্তরের স্বাধীনতায় তাঁদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তাঁরা খাটো করতে চান। আমি বলব, তাঁরা যেন এখানেই বিরত থাকেন। এই স্বাধীনতা দিবসকে যেন সম্মান জানান এবং সম্মান করেন।’

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আমরা সেখানেই বিশ্বাস রাখতে চাই। এখানে আমরা বিশ্বাসের পরিবর্তন করতে চাই না।’

নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, এমন এক প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই প্রতিপক্ষ। নির্বাচন হবে না—এমনটা বিশ্বাস করতে চাই না।’ ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপির পদক্ষেপ কী হবে—এমন প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন হবে না—এমনটা আমরা বিশ্বাস করি না। তেমন কিছু হলে সময় এলে দেখা যাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ব ত য় স ব ধ নত র স ব ধ নত

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতাল থেকে ফিরে যাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন তামিম

হার্ট অ্যাটাকের ধাক্কা সামলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তামিম ইকবাল। কঠিন সময় পার করে এসে আবেগঘন এক বার্তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। সবার ভালোবাসা ও সহযোগিতায় নিজেকে নতুন জীবন পাওয়া একজন ভাগ্যবান মানুষ মনে করছেন তিনি।

ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে এই কয়দিনের ঘটনা বর্ণনায় তামিম বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়। উথালপাথাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালোলাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনভুব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত ‘

উপকারে এসেছেন এমন কয়েকজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম লেখেন, ‘ বিকেএসপিতে আমার অসুস্থতার শুরু থেকেই অনেককে পাশে পেয়েছি তাৎক্ষণিকভাবে। ম্যাচ রেফারি দেবু দা (দেবব্রত পাল), বিকেএসপির চিকিৎসকরা এবং আরও যারা তখন ছিলেন সেখানে, অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার যে ভাই আমাকে দ্রুতগতিতে নিয়ে গেছেন হাসপাতালে, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন।’

আরও অনেকজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম বলেন, ‘ মোহামেডানের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিমের কথা না বললেও নয়। শুরু থেকে এখনও সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়েই আছে আমার। কেপিজে হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার দক্ষ চিকিৎসক দল তাদের পেশাদারিত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি যে, দেশের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তার দল মিরাকল ঘটিয়েছেন। গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় কেপিজে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা থেকে শুরু করে যারা যে কোনোভাবে যতটুকু সম্পৃক্ত ছিলেন, সবাইকে হৃদয়ে লালন করব আজীবন। এই হাসপাতালে যতটুকু সময় ছিলাম, তাদের হৃদ্যতার পরশ অনুভব করে যাব সবসময়।’

‘ঢাকা শহরের বাইরে ওই এলাকায় এতটা উঁচু মানের হাসপাতাল আছে, এতটা কুশলী চিকিৎসক দল ও স্টাফরা আছেন, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার এগিয়ে চলার একটি প্রমাণ এটি। দেশজুড়ে নানা জায়গায় এর কাছাকাছি মানের হাসপাতাল যদি আরও কিছু থাকে, আমার মতো আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে। ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়।’

পোস্টে তামিম আরও বলেন, ‘আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তারা কিছু করেননি। আমি তাদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য। পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনও দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক। ভালোবাসা সবার জন্য।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ