রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকা এবং বড় শহরের বাইরে নজর দিয়েছে। ঢাকার বাইরের মানুষের কী প্রয়োজন, সেটা বুঝতে চেষ্টা করছে। সেটা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

আজ বুধবার ঢাকা-নরসিংদী-ভৈরববাজার-নরসিংদী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী নরসিংদী কমিউটার-১ ও নরসিংদী কমিউটার-৪ ট্রেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফাওজুল কবির খান। আজ সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে এই গন্তব্যের ট্রেনযাত্রার উদ্বোধন করা হয়।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গত পরশু চট্টগ্রাম থেকে সন্দীপ রুটে একটা ফেরিসেবা চালু করা হয়েছে। সেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য সব উপদেষ্টা যাননি। নৌপরিবহন উপদেষ্টা ঘাট উদ্বোধনের জন্য, আর তিনি বিআরটিসি বাস উদ্বোধনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। অন্যরা নিজ নিজ আওতাধীন বিষয়গুলো দেখতে—যেমন পরিবেশ উপদেষ্টা সেখানে বেড়িবাঁধ দেখেছেন, পরিবেশ দেখেছেন। স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী হাসপাতাল দেখেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা দেখেছেন।

ফাওজুল কবির খান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ আছে, ঢাকার বাইরে উন্নয়নকে পৌঁছাতে হবে। এ উন্নয়ন হবে নাম ফলকবিহীন উন্নয়ন। কোনো নাম প্রচার, কারও নাম ফলকে থাকবে না। যে ঘাট উদ্বোধন করা হয়েছে, সেখানে কারও নাম নেই। শুধু সময় আছে।

রেলওয়ে একটা লোকসানের প্রতিষ্ঠান বলে উল্লেখ করেন ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, এখানে প্রতি এক টাকা রোজগারের জন্য আড়াই টাকার মতো খরচ হয়। এর দুটো কারণ আছে। একটি হচ্ছে রেলওয়ের দুর্নীতি, রেলের অপচয়। দুর্নীতি যাতে কমে, অপচয় যাতে বন্ধ হয়, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, বিনা টিকিটে অনেক যাত্রী রেলে ভ্রমণ করেন।

যাত্রীসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, রেলের সেবার মূল্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এরপরও কিছু কিছু এলাকার যাত্রী ভাড়া দেন না। এভাবে চলতে থাকলে রেলের সেবা বন্ধ হয়ে যাবে। কাউকে ভাড়া দিতে না দেখলে তা রেলের নজরে আনতে অনুরোধ জানান তিনি।

নতুন গন্তব্যের যাত্রীদের উদ্দেশে ফাওজুল কবির খান বলেন, যাঁরা নরসিংদীর মানুষ, ভৈরবের মানুষ, তাঁরা সামাজিকভাবে উদ্বুদ্ধ করবেন, যাতে মানুষ টিকিট কেটে ভাড়া দিয়ে চলাচল করেন। রেলের লোকসান আরও বাড়লে এটাকে মোকাবিলা করার জন্য সেবা কমানো ছাড়া বিকল্প থাকবে না।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছে দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে ভৈরববাজার থেকে নরসিংদী হয়ে ঢাকা আসা প্রথম যাত্রার ট্রেনটিকে সকাল ৯টা ৬ মিনিটের দিকে স্বাগত জানান। এ সময় তিনি ট্রেনের যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। তিনি ট্রেনটির বগিতে ঢুকে পরিবেশ দেখেন।

এরপর পাশের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢাকা থেকে ছেড়ে যেতে অপেক্ষায় থাকা রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ফাওজুল কবির খান। তিনি যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৯টা ১৩ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৬১ বছরের ‘চিরকুমার’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির ‘একরোখা নেতা’ হিসেবে পরিচিত দিলীপ ঘোষ আজ নিজের চিরকুমারের তকমা ঘোচাবেন। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনের বাসভবনে বিয়ে হবে। এ বিয়ে হবে অনাড়ম্বরভাবে। পাত্রী তাঁর দল বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী রিঙ্কু মজুমদার।

দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঝাড়গ্রামে। এখন তিনি থাকছেন কলকাতার সল্টলেকের নিউটাউনের আবাসিক এলাকায়। বিয়ের অনুষ্ঠানে কিছু বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গ্রামের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থেকে সপ্তাহখানেক আগে দিলীপের মা চলে এসেছেন কলকাতায়। ছেলের সংসার গুছিয়ে তিনি পরে ফিরে যাবেন তাঁদের ঝাড়গ্রামের বাড়িতে।

বিজেপির অনেক নেতাই বলছেন, দিলীপ ঘোষ দেখিয়ে দিলেন রাজনৈতিক জীবনের মতো তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও একই রকম ‘কালারফুল’। তিন কাউকে রেয়াত দিয়ে কথা বলেন না। দিলীপ ঘোষ তিন মাস ধরে প্রেমে হাবুডাবু খাচ্ছিলেন।

দিলীপ ঘোষ বহু বছর আগে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএসে নাম লিখিয়েছিলেন। তখন শপথও নিয়েছিলেন তিনি ‘অকৃতদার’ থাকবেন।

আরএসএস অবশ্য ২০১৪ সালে দিলীপ ঘোষকে বিজেপিতে পাঠায়। ২০১৫ সালেই পেয়ে যান পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ। ২০২১ সালে তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে লড়ে। পেয়ে যান ৭৭টি আসন। নতুন এক রেকর্ড গড়েন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হয়েছেন, লোকসভার সংসদ সদস্য হয়েছেন। হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা।

এই বিয়ে নিয়ে দিলীপ ঘোষ মুখ না খুললেও তাঁর হবু স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দিলীপদাকে বহুদিন ধরে চিনি। ওকে ভালোও লাগে। মনের কথা খুলে বলা যায়। গত সেপ্টেম্বরে তাঁকে প্রপোজ করেছিলাম। তিনি তিন মাস সময় চেয়েছিলেন। তারপর সেই সময় এসে গেল কিছুটা বিলম্বে।’

বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য শাখার সাবেক সভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরী বলেছেন, ‘দিলীপদাকে অনেক শুভেচ্ছা। ওর দাম্পত্যজীবন অনেক সুখের ও সুন্দর হোক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ