Prothomalo:
2025-04-18@08:42:20 GMT

মুজিববাহিনীর সত্য–মিথ্যা

Published: 26th, March 2025 GMT

১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডনে যান। ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’য় আটক থাকা অবস্থায় তাঁর মামলা পরিচালনার জন্য যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাঙালিরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরা বিখ্যাত আইনজীবী টমাস উইলিয়ামকে শেখ মুজিবের কৌঁসুলি হিসেবে ঢাকায় পাঠিয়েছিলেন। লন্ডনে শেখ মুজিবের একটা ‘ইন্ডিয়া কানেকশন’ হয়। সেখানে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর কর্মকর্তা ফণীন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর। সংশ্লিষ্ট মহলে তিনি নাথবাবু নামে পরিচিত। তাঁদের মধ্যে আসন্ন রাজনৈতিক পালাবদলের সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল।

শেখ মুজিব ঢাকায় ফিরে এসে তাঁর আস্থাভাজন চার যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে একসঙ্গে কাজ করতে এবং প্রস্তুতি নিতে বলেন। তিনি তাঁর দল আওয়ামী লীগের চেয়েও এই চারজন তরুণের ওপর নির্ভর করতেন বেশি। মুজিবের প্রতি তাঁদের প্রশ্নাতীত আনুগত্য ছিল।

এ সময় বিএলএফ (বেঙ্গল লিবারেশন ফোর্স) নামটির উদ্ভব। বাংলাদেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে সিরাজুল আলম খানকে কেন্দ্র করে ১৯৬০–এর দশকে একটা ‘নিউক্লিয়াস’ কাজ করত। তাঁরা একটা ফোরাম তৈরি করেছিলেন। নাম দিয়েছিলেন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’। যদিও এর কোনো দালিলিক সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না। এরপর তৈরি হলো বিএলএফ। সিরাজুল আলম খানের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘আমাদের রাজনৈতিক সংগঠন হলো স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ এবং সামরিক সংগঠন হলো বিএলএফ।’

তোফায়েল আহমেদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিএলএফের জন্ম ১৯৬৯ সালের শেষে অথবা ১৯৭০ সালের শুরুর দিকে। ওই সময় বাঙালি জাতীয়তাবাদী স্লোগানগুলো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে উচ্চারিত হতো, ‘জাগো জাগো/ বাঙালি জাগো’, ‘পাঞ্জাব না বাংলা/ বাংলা বাংলা’, ‘পিন্ডি না ঢাকা/ ঢাকা ঢাকা/, ‘তোমার আমার ঠিকানা/ পদ্মা মেঘনা যমুনা’। এরপর এল আরও দুটো স্লোগান, ‘জয় বাংলা’ এবং ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো/ বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’ দেশে তখন জেনারেল ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের একতলায় মেয়েদের কমনরুমের সামনের করিডরের দেয়ালে ছোট করে কেউ লিখে দিয়েছিল, ‘বিএলএফে যোগ দিন’।

১৯৭০ সালের মাঝামাঝি ছাত্রলীগের বাছাই করা একদল কর্মীর অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাওয়ার কথা। শেখ মুজিব নিজেই এর আয়োজন করেছিলেন। কলকাতা থেকে যোগাযোগ করতেন ‘র’-এর অপারেটিভ চিত্তরঞ্জন সুতার। তাঁর বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। কলকাতার ভবানীপুরে একটা তিনতলা বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ‘র’। সুতার এই বাড়িতে সপরিবার থাকতেন। মুজিবের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হতো সিরাজগঞ্জের তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা এবং একসময় ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু হেনার মাধ্যমে।

শেখ মুজিব ভেবেছিলেন, ইয়াহিয়া নির্বাচন দেবেন না। দেশ স্বাধীন করার জন্য ছাত্রলীগের কর্মীদের সশস্ত্র প্রশিক্ষণের চিন্তাভাবনা হচ্ছিল। ভারতে প্রশিক্ষণ নিতে একটি ব্যাচের বাছাই প্রক্রিয়াধীন ছিল। ১৯৭০ সালের আগস্টে মুজিবের মনে এই প্রতীতি জন্মে যে নির্বাচন হবে। তখন প্রশিক্ষণ স্থগিত করা হয়। বলা হয়, এখন এটার আর দরকার নেই।

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ এবং ১৭ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একচেটিয়া জয় পায়। ১৯৭১ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই সংবিধান প্রশ্নে অচলাবস্থা দেখা দেয়। মুজিবের মনে আশঙ্কা, সেনাবাহিনী ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হবে না।

১৮ ফেব্রুয়ারি মুজিব তাঁর ধানমন্ডির বাড়িতে ঘনিষ্ঠজনদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের চার সদস্য—সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান এবং চার যুবনেতা—মনি, সিরাজ, রাজ্জাক ও তোফায়েল। হাইকমান্ডের অপর সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমদ উপস্থিত ছিলেন না কিংবা তাঁকে ডাকা হয়নি। শেখ মুজিব কাগজে একটি ঠিকানা দেখিয়ে তাঁদের মুখস্থ করান। এরপর কাগজটি কুটিকুটি করে ছিঁড়ে ফেলেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে বলেন, দরকার পড়লে তাঁরা যেন ওই ঠিকানায় যোগাযোগ করেন। ঠিকানাটি হলো—সানি ভিলা, ২১ রাজেন্দ্রপ্রসাদ রোড, নর্দার্ন পার্ক, ভবানীপুর, কলকাতা। পাকিস্তানের রাজনীতির হাওয়া দেখে মুজিব কয়েকটি ‘অপশনের’ কথা ভেবে রেখেছিলেন। এটি ছিল তার একটি।

শেখ মুজিবুর রহমান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন, ঢাকার রাস্তায় আটকে গেলেন পার্থ বড়ুয়া

২০২৩ সালে শুরু হয়েছিল সোলস ব্যান্ডের ৫০ বছর পূর্তির পথচলা। এরপর দেশে ও দেশের বাইরে বেশ কয়েকটি স্টেজ শোতে অংশ নিয়েছেন তাঁরা। ৫০ বছর পূর্তির এই আয়োজন এখনো চলছে। চট্টগ্রামে গড়ে ওঠা ব্যান্ড সোলস এবার তাদের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান চট্টগ্রামেও করতে যাচ্ছে। আগামী ২ মে চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেলে গাইবে সোলস।

এ উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের একটি তারকা হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সোলসের অন্য সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও শেষ মুহূর্তে থাকতে পারেননি পার্থ বড়ুয়া। ঢাকার রাস্তায় তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার পর বাসায় ফিরে যেতে হয় পার্থ বড়ুয়াকে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রথম ব্যাচের তিন শিক্ষার্থী সাজেদ, সুব্রত বড়ুয়া ও আহমেদ নেওয়াজ। এর বাইরে ছিলেন দুলু ও তপন চৌধুরী—এই পাঁচজন মিলে শুরুর দিকের ব্যান্ড সোলস। সেই সময়ের কথা মনে করে আহমেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে জানান, শুরুতে সোলস ভেঙে যায়। এরপর তাঁরা আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েন নিজেদের মতো। সোলসের কিছু ইনস্ট্রুমেন্ট নিজেরাই কিনে ফেলেন। তখন সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হন। রনি, আহমেদ নেওয়াজ, সাজিদ। এরপর আবার শুরু করেন। এসব ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরের ঘটনা।

এই বছরে ৩ আগস্ট চারুকলা অনুষদের যাত্রা শুরু। তপন, দুলু আর রনির বাসা ছিল একই জায়গায়। কথা প্রসঙ্গে জানা গেছে, সোলস ব্যান্ড করার অনুপ্রেরণা হচ্ছে লাইটেনিংস। চট্টগ্রামের সংগীত ভবনের ওপরতলায় লাইটেনিংস নামে একটা দল ছিল, যারা বিটলসকে অনুসরণ করত। বিটলস যা যা ইনস্ট্রুমেন্টস ব্যবহার করত, লাইটেনিংস সবই করত। সোলসের সবাই তখন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকত, এত বিউটিফুল সাউন্ড কোথা থেকে আসছে। ওখান গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। এরপর আস্তে আস্তে নিজেরা সংগঠিত হতে থাকে। ছোট ছোট বিয়ের অনুষ্ঠান ও হোটেলের অনুষ্ঠানে গান গাইতে থাকে। এভাবেই শুরু সোলসের যাত্রা।

সংবাদ সম্মেলনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাগদান সারলেন ঋতাভরী
  • মোহামেডানের হোঁচটের দিনে আবাহনীর জয় 
  • হ্যাটট্রিক জয়ের পর মিলল হারের স্বাদ
  • ‘ফেসবুক গল্পের’ উৎস খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল আসল ঘটনা
  • শারমিন-ফারজানায় টাইগ্রেসদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর
  • মোটরসাইকেলের জন্য ডেকে নিয়ে হত্যা, যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • ২ উইকেটে ১৩৪ থেকে ২২৭ রানে থামলো বাংলাদেশ 
  • চীনের যেভাবে ট্রাম্পের শুল্কের জবাব দেওয়া উচিত
  • ভিডিও বানাতে গিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক, হত্যা করলেন স্বামীকে
  • চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন, ঢাকার রাস্তায় আটকে গেলেন পার্থ বড়ুয়া