প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানী ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন শহর–গ্রামে ছুটে যায়। তবে স্বপ্নের বাড়ি ফেরার টিকিট পাওয়া যেমন ঝামেলার, ঠিক তেমনি ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরার সময়ও টিকিট পেতে চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। অবশ্য গত দুই-তিন বছর ধরে চিত্র বদলেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ এখন ঘরে বসেই অনলাইনে বাসের টিকিট কাটতে পারছেন, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে দেশের শীর্ষ অনলাইন বাস টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম ‘বিডিটিকিটস’।

বিডিটিকিটস এবারও যাত্রীদের জন্য এনেছে আরও সুবিধাজনক টিকেটিং–ব্যবস্থা। দেশের সব রুটের সেরা বাস কোম্পানির টিকিট পাওয়া যাচ্ছে বিডিটিকিটস-এ। ঈদে যাত্রীদের যাতায়াত আরও সাশ্রয়ী করতে বিডিটিকিটস রিটার্ন টিকিটে দিচ্ছে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট। অফারটি পেতে বিডিটিকিটস অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে টাইপ করতে হবে EIDRETURN20।

বিডিটিকিটস–এর হেড অব ক্যাম্পেইন শাফায়েত শাহনূর জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে বাসের টিকিট বিক্রি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ বছর ২০ লাখের বেশি টিকিট বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বিডিটিকিটস এবং যাত্রীরা এখনই রিটার্ন টিকিটও কাটছেন। বিশেষ করে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্টের কারণে অনেকেই অগ্রিম রিটার্ন টিকিট বুক করছেন, যা যাত্রীদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ও সুবিধাজনক হচ্ছে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাজিদ ওয়াহিদ। তিনি প্রতিবছর সিলেটে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেন। সাজিদ বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যসংখ্যা পাঁচজন। এসি বাসের একমুখী ভাড়া পড়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৭ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু বিডিটিকিটস-এর সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ডিসকাউন্টের কারণে রিটার্ন টিকিট কাটতে পেরেছি আরও সাশ্রয় মূল্যে। এতে আমি সত্যিই খুশি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রান্ত কাদেরি বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজার যাচ্ছেন ঈদ উদ্‌যাপন করতে। তিনি বলেন, ‘আমরা সাতজন বন্ধু একসঙ্গে ঈদ করতে যাচ্ছি। বিডিটিকিটস-এর ডিসকাউন্ট অফারের কারণে আমাদের রিটার্ন টিকিটে ১ হাজার ৪০০ টাকার মতো সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড় সুবিধা।’

বিডিটিকিটস দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন বাস টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম, যা যাত্রীদের জন্য ভ্রমণকে করেছে আনন্দদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। এই ঈদে বিডিটিকিটস-এর ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে মাত্র কয়েক ক্লিকেই বাসের টিকিট কেনা যাচ্ছে। ফলে কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ছে না।

দেশের অন্যতম বৃহৎ ও বিশ্বস্ত অনলাইন বাস টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম বিডিটিকেটস দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃজেলা বাস যাত্রার জন্য আধুনিক ও স্বাচ্ছন্দ্যময় টিকিটিং সেবা প্রদান করে। ঈদসহ বছরজুড়ে যাত্রীদের যাতায়াত আরও দ্রুত ও সাশ্রয়ী করতে সব রুটের সেরা সব বাস নিয়ে বিডিটিকিটস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য অনলাইন পেমেন্ট অপশন এবং কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়াই দ্রুত ও ঝামেলামুক্ত টিকিট বুকিংয়ের সুবিধা।

আরও জানতে ভিজিট করুন www.

bdtickets.com

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বোয়ালমারীর বালুমহালের ইজারা বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৩

ফরিদপুরের বোয়ালমারীর ঘোষপুর ইউনিয়নের গড়াই নদীর লংকারচর বালুমহালের ইজারা বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছে। বুধবার রাতে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।  

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ১০টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঁধারকোঠা গ্রামের একদল যুবক আক্রমণ চালায়। এ সময় মা ফার্মেসিতে আশ্রয় নেওয়া রাসেল আহমেদের ছোট ভাই ছাত্রদলের সাবেক নেতা রবিন মোল্যার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে আক্রমণকারীরা। তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে আহত হন রিয়াজ মৃধা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। রিয়াজ মৃধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিলেও রবিন মোল্যা বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  

বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বিএনপি নেতা মিরাজ মৃধা বলেন, রাসেলের সঙ্গে জুয়েল বিশ্বাসের দেনাপাওনা নিয়ে ফোনে কথা-কাটাকাটি হয়, পরে সমঝোতার জন্য আমার ফার্মেসিতে আসেন জুয়েল। কথা বলার সময় তার কোমরে একটি ধারাল অস্ত্র দেখে লোকজন তা কেড়ে নেয়। এ সময় তিনি পালিয়ে গিয়ে কিছু সময় পর ২৫ থেকে ৩০ জনকে নিয়ে আমার ফার্মেসিতে এসে হামলা চালায়। 

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯টি সিডিউল বিক্রি হলেও সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুলের সহায়তায় মাত্র একটি সিডিউল জমার মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বালুমহাল ইজারা পান বোয়ালমারী যুবলীগের সদস্য মেসার্স রবিউল ট্রেডার্সের মালিক রবিউল ইসলাম। এই বালুমহাল ইজারার ১৯ জন সিডিউল ক্রেতার সঙ্গে কৃষকদল সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুলের নেতৃত্বে ইজারা দরপত্র (নিকো) বোর্ড করে একটি সিডিউল জমার মাধ্যমে রবিউলকে কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়। বাকি ১৮ জন ঠিকাদারকে ৪৫ হাজার টাকা করে নিকোর টাকা নির্ধারণ করা হয়। দৈনিক সমকাল পত্রিকায় এ বিষয়ে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বালুমহালের ইজারা পেলেন যুবলীগ নেতা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

৬ ফেব্রুয়ারি তিনটি বালুমহালের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন জেলা প্রশাসক। এগুলো বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গায়। লংকারচর মহালের সরকারি মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১ কোটি ২০ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৮ টাকা। ঘোষপুর ইউনিয়নে গড়াই নদীর এ মহালের আয়তন ৭৪ হাজার ১৪৭ একর। ৩৬ লাখ টাকা বেশি দিয়ে ইজারা নেন রবিউল। 

স্থানীয় এক সিডিউল ক্রেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ও ডিসির কাছে দেওয়া অভিযোগকারী) জানান, ১৯টি দরপত্র বিক্রি হলেও ১৫ দরপত্র দাতাদের মাঝে এবং কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুলের সমঝোতার ভিত্তিতে গোপন নিলাম ডাকের মাধ্যমে কেনাবেচা হয়। সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্র দাতাদের মাঝে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ভাগাভাগির টাকা বণ্টনের দায়িত্ব দেন পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদের ওপর। তবে জুয়েল বিশ্বাস নামে একজন দরপত্র ক্রেতা অভিযোগ করেন তার পাওনা টাকা না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। এ নিয়ে বুধবার রাতে বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সামনে মা ফার্মেসি মার্কেট চত্বরে সালিশ বৈঠকে বসেন পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিএনপি নেতা মহসিন আলম চান, মিরাজ মৃধাসহ স্থানীয়রা। 

বৈঠক শুনানির সময় দরপত্র দাতা আঁধারকোঠা গ্রামের মঈনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে জামায়াতে কর্মী জুয়েল বিশ্বাসের কোমরে থাকা একটি দেশীয় অস্ত্র দেখে ফেলে লোকজন। এ সময় অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে জুয়েল বিশ্বাসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় স্থানীয়দের। পরে জুয়েলের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল অস্ত্র নিয়ে মা ফার্মেসিতে আক্রমণ চালায়। এতে রবিন মোল্যা ও রিয়াজ মৃধা আহত হন। 

জুয়েল বিশ্বাস জানান, বালুমহালের নিকোর ৪৫ হাজার টাকা জমা ছিল রাসেল আহমেদ ও মিরাজ মৃধার কাছে। সেই টাকা চাওয়ায় আমাকে মা ফার্মেসিতে ডেকে নেয় রাসেল আহমেদ। সেখানে গেলে তারা টাকা না দিয়ে টালবাহানা করে এবং আমার উপর আক্রমণ চালায়। খবর পেয়ে আমার গ্রামের লোকজন আমাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। সেখানে রাসেল আহমেদের ভাই রবিন আঘাত পান। 

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ বলেন, জামায়াতে ইসলামীর কর্মী জুয়েল বিশ্বাস আমার কাছে চাঁদা দাবি করে। এ বিষয়ে জানতে মহসিন আলম চান ও মিরাজ মৃধা তাকে ডাকলে তিনি পরিকল্পনা করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কোমরে অস্ত্র নিয়ে আসেন। লোকজন তা দেখে কেড়ে নিলে আগে থেকে ওঁতপেতে থাকা তার পক্ষের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ